ডারউইনের বহু আগে মুসলিম বিজ্ঞানীর মুখে বিবর্তনবাদ

110

আধুনিক বিজ্ঞানের যতগুলো গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার তার অন্যতম ব্রিটিশ বিজ্ঞানী চার্লস ডারউইনের বিবর্তনবাদের তত্ত¡। এই তত্তে¡ দেখানো হয়েছে প্রাণীরা সময়ের সাথে সাথে প্রাকৃতিক নিয়মে ধীরে ধীরে কীভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। বিবর্তনবাদের এই তত্ত¡টি আমাদের পৃথিবীর পশুপাখি ও উদ্ভিদ জগৎ সম্পর্কে বুঝতে বড়ো ধরনের ভূমিকা রেখেছে। তার এই প্রক্রিয়াকে ইংরেজিতে বলা হয় ন্যাচারাল সিলেকশন বা প্রাকৃতিক নির্বাচন, যার মাধ্যমে একটি প্রাণীর জনগোষ্ঠী থেকে নতুন প্রজাতির উদয় ঘটে। এই থিওরি বিজ্ঞানের জগতে বৈপ্লবিক তত্ত¡ হিসেবে পরিচিত।
অন দ্য অরিজিন অফ স্পেশিস নামে চার্লস ডারউইনের এই বইটি প্রকাশিত হয় ১৮৫৯ সালে। তার এই গ্রন্থে তিনি বিবর্তনবাদকে সংজ্ঞায়িত করতে গিয়ে বলেছেন, এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যাতে কোনো প্রাণী ক্রমাগত অভিযোজনের ফলে আপন পরিবেশের জন্যে বিশেষায়িত হতে হতে এক সময় নতুন একটি প্রাণীতে রূপান্তরিত হয়। কিন্তু চার্লস ডারউইনের আগে ইসলামিক বিশ্বেও বিবর্তনবাদ তত্তে¡র আরো একজন প্রবক্তা ছিলেন।
প্রাকৃতিক নির্বাচন: চার্লস ডারউইনের প্রায় এক হাজার বছর আগে ইরাকে একজন মুসলিম দার্শনিক ছিলেন যিনি প্রাকৃতিক নিয়মে প্রাণীকূলের মধ্যে কী ধরনের পরিবর্তন ঘটে তার উপর একটি বই লিখেছিলেন। এই দার্শনিকের নাম ছিল আল-জাহিজ। যে পদ্ধতিতে এই পরিবর্তন ঘটে তিনি তার নাম দিয়েছিলেন প্রাকৃতিক নির্বাচন।
তার আসল নাম ছিল আবু উসমান আমর বাহার আলকানানি আল-বাসরি, তবে ইতিহাসে তিনি আল জাহিজ নামেই বেশি পরিচিত। তার এই নামের অর্থ এমন একজন ব্যক্তি যার চোখের মণি বেরিয়ে আসছে। এরকম অর্থের কারণে কাউকে এই নামে ডাকা হয়তো শোভন নয়, কিন্তু এই আল-জাহিজ নামটিই বিখ্যাত হয়ে আছে তারই লেখা প্রজনন সংক্রান্ত একটি বই-এর কারণে। গ্রন্থটির নাম কিতাব আল-হায়ওয়ান অর্থাৎ প্রাণীদের বিষয়ে বই।
তার জন্ম হয়েছিল ৭৭৬ খ্রিস্টাব্দে, দক্ষিণ ইরাকের বাসরা শহরে, মুতাজিলাহ আন্দোলনের সময়। এসময় ধর্মতাত্তি¡ক কিছু মতবাদ জনপ্রিয় হচ্ছিল যেখানে মানুষের যুক্তির চর্চার উপর জোর দেওয়া হচ্ছিল।
তখন ছিল আব্বাসীয় খেলাফত বা শাসনের চরম সময়। সেসময় জ্ঞান বিজ্ঞানের অনেক বই গ্রিক ভাষা থেকে আরবি ভাষায় অনুবাদ করা হতো। জোরালো বিতর্ক হতো ধর্ম, বিজ্ঞান এবং দর্শন বিষয়ে। এসবের কেন্দ্র ছিল বাসরা শহর। এসব আলোচনা থেকেই ধীরে ধীরে গড়ে উঠছিল আল-জাহিজের চিন্তাধারা। চীনা বনিকেরা ততদিনে ইরাকে কাগজের ব্যবসা শুরু করে দিয়েছে। এর ফলে বিভিন্ন তত্ত্ব লিখিত আকারে খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে শুরু করলো।
তরুণ আল-জাহিজ তখন নানা বিষয়ে লেখালেখি করতে শুরু করেন। যেসব বিষয়ে তার খুব বেশি আগ্রহী ছিল সেগুলোর মধ্যে ছিল বিজ্ঞান, ভূগোল, দর্শন, আরবি ব্যাকরণ এবং সাহিত্য। ধারণা করা হয়, তার জীবদ্দশাতেই তিনি দুশোর মতো বই প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু তার মাত্র এক তৃতীয়াংশ এই আধুনিক কাল পর্যন্তও টিকে রয়েছে।
দ্য বুক অফ অ্যানিমেলস: তার বইগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে দ্য বুক অফ অ্যানিমেলস বা প্রাণী বিষয়ক বইটি। এটি একটি এনসাইক্লোপিডিয়ার মতো যাতে সাড়ে তিনশো প্রাণীর পরিচয় তুলে ধরা হয়েছে। এই বইটিতে তিনি এমন কিছু ধারণা তুলে ধরেছেন যার সাথে আধুনিককালের বিজ্ঞানী চার্লস ডারউইনের বিবর্তনবাদে তত্তে¡র সাথে চমকপ্রদ অনেক মিল পাওয়া যায়।
আল-হাজিজ তার বইতে লিখেছেন, ‘টিকে থাকার জন্যে প্রাণীদেরকে লড়াই করতে হয়। লড়াই করতে হয় তাদের খাদ্যের জন্যেও এবং তারা নিজেরাই যাতে অপরের খাদ্য না হয়ে যায় সেটা নিশ্চিত করার জন্যে। এমনকি, প্রজননের জন্যেও তাদেরকে সংগ্রাম করতে হয়। নিজেদের বেঁচে থাকা নিশ্চিত করতে গিয়ে পরিবেশের নানা কারণে প্রাণীরা নতুন নতুন বৈশিষ্ট্য ধারণ করে এবং এভাবেই তারা নতুন নতুন প্রজাতিতে রূপান্তরিত হয়।’
তিনি আরো লিখেছেন, যেসব প্রাণী প্রজনন ঘটাতে টিকে থাকতে পারে তারা তাদের সফল বৈশিষ্ট্যগুলো তাদের পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যেও ছড়িয়ে দিতে পারে।’
আল-জাহিজের কাছে এটা অত্যন্ত পরিষ্কার ছিল যে এসব প্রাণীকুলকে টিকে থাকার জন্যে অনবরত সংগ্রাম করতে হয়। এবং একটি প্রজাতি সবসময়ই আরেকটি প্রজাতির চেয়ে শক্তিশালী।
টিকে থাকার জন্যে খাবার সংগ্রহের লড়াই-এ প্রাণীদের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতে হয়। অন্যের খাবার হওয়া থেকে নিজেকে রক্ষা করা এবং সন্তান জন্মদান করতেও তাদের সংগ্রাম করতে হয়। এসব কারণে তারা এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে রূপান্তর ঘটাতে বাধ্য হয়।
আল-জাহিজের এসব ধারণা তার পরবর্তী অন্যান্য মুসলিম চিন্তাবিদদেরকেও প্রভাবিত করেছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন আল-ফারাবি, আল-আরাবি, আল বিরুনী এবং ইবনে খালদুন।
পাকিস্তানের ‘আধ্যাত্মিক পিতা’ মোহাম্মদ ইকবাল, যিনি আল্লামা ইকবাল নামেই অনেক বেশি পরিচিত তিনিও আল জাহিজের এসব তত্তে¡র গুরুত্ব তুলে ধরেছিলেন। ১৯৩০ সালে প্রকাশিত তার বক্তব্যের একটি সঙ্কলনে তিনি বলেছিলেন, ‘আল-জাহিজ দেখিয়ে দিয়েছেন অভিবাসন এবং পরিবেশে পরিবর্তনের কারণে প্রাণীদের জীবনে কী ধরনের পরিবর্তন ঘটে।’
মোহাম্মদীয় তত্ত্ব: বিবর্তনবাদের ধারণায় মুসলিম বিশ্বের অবদান বিংশ শতাব্দীর ইউরোপীয় পন্ডিতদের কাছে গোপনীয় কোন বিষয় নয়। এমনকি, চার্লস ডারউইনের একজন সমসাময়িক বিজ্ঞানী উইলিয়াম ড্রেপার ১৮৭৮ সালে ‘বিবর্তনবাদের মোহাম্মদীয় তত্ত¡’ নিয়ে কথা বলেছিলেন।
তবে যাই হোক, চার্লস ডারউইন মুসলিম বিজ্ঞানী আল-জাহিজের চিন্তাধারা সম্পর্কে অবহিত ছিলেন কিনা কিম্বা তিনি আরবি বুঝতেন কিনা তার পক্ষে কোন তথ্য প্রমাণ নেই।
ব্রিটিশ এই বিজ্ঞানী প্রকৃতি ও পরিবেশের উপর বছরের পর বছর ধরে গবেষণা করে বিবর্তনবাদের তত্ত্ব দাঁড় করিয়েছেন যেখানে প্রাণীর টিকে থাকার সংগ্রামের কথা বিশদ ও পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
ক্রিয়েশনিজম: তিনি আরো বলেন, দশম শতাব্দীর ইরাকে, যখন বাসরা ও বাগদাদ ইসলামিক সভ্যতা ও শিক্ষার কেন্দ্রবিন্দু ছিল, তখনও ক্রিয়েশনিজমের ধারণা খুব একটা জোরালো ছিল না। ক্রিয়েশনিজম হচ্ছে এমন এক ধর্মীয় বিশ্বাস যাতে মনে করা হয় ‘ঐশ্বরিক কোন ঘটনা থেকে এই বিশ্বব্রহ্মান্ড ও প্রাণের সৃষ্টি’ হয়েছিল যা প্রকৃতির বিবর্তনবাদের ধারণার বিরোধী।
এহসান মাসুদ একটি নিবন্ধে লিখেছেন, ‘বিজ্ঞানীরা তখন নতুন নতুন জিনিস আবিষ্কার করার লক্ষ্যে বাইরে বের হয়ে পড়তেন।’
এই জ্ঞানের অন্বেষণ করতে গিয়েই মুসলিম দার্শনিক আল-জাহিজের মৃত্যু হয়েছিল। বলা হয়ে থাকে যে, ৯২ বছর বয়সী আল-জাহিজ যখন একটি আলমারি থেকে বই নামাতে গিয়েছিলেন। তখন আলমারিটি তার গায়ের ওপরে পড়ে গেলে তিনি মারা গিয়েছিলেন।

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধই কি
কাশ্মীর দ্বন্দ্বের সমাধান?

প্রয়োজনে তোমার সীমানার ভেতরে আক্রমণ চালাতে আমরা দ্বিধা করবো না, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহের অবকাশ রেখো না। কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক অস্থিরতা চলাকালীন দুই দেশ একে অপরকে বেশ পরিস্কারভাবেই এমন একটি বার্তা দিতে সক্ষম হয়েছে।
আবার হুঁশিয়ারির পাশাপাশি সৌজন্য আর ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশেও দুই দেশ সমান উদারতার পরিচয় দিয়েছে। আক্রমণ করার ক্ষেত্রে দুই দেশই বেছে নিয়েছে বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুকে, যেন কোনো পক্ষের সেনারাই আঘাত না পায়। আর তারপর ক্রমাগত সাফাই গেয়ে গেছেন যে নিজেদের সম্পদ রক্ষার দায়িত্ব সেনা সদস্যদের ওপরই বর্তায়।
যেহেতু আমাদের ওপর সরাসরি আঘাত করা হয়নি, তাহলে কি এই সংঘাতে আমাদের যোগ দেয়া উচিত? দু’পক্ষই ভেবেছিল যে তাদের সেনা কর্মকর্তারা এমন একটা দোটানার মধ্যে থাকবে। কিন্তু টেলিভিশনের সামনে বসে থাকা বা সোশ্যাল মিডিয়ায় ডুবে থাকা মানুষ এতো জটিলতা বোঝে না।
তারা শুরু থেকেই এই কাদা ছোড়াছুড়ির একটাই অর্থ খুঁজে পেয়েছে; আর তা হলো যুদ্ধ।
তাদের মতে, সমস্যার শুরু যাই হোক আর এর সমাধানের পথ যেদিকেই থাকুক, যুদ্ধের মাধ্যমে এর রফা করার মধ্যে দোষের কিছু নেই। সাধারণ মানুষ হয়তো মনে করেছিল যে, অস্ত্রগুলোর একটা নির্দিষ্ট স্থায়িত্বকাল রয়েছে যা বেশিদিন অব্যবহার্য অবস্থায় ফেলে রাখলে নষ্ট হয়ে যাবে। কাজেই মূল্যবান অস্ত্রের অপচয় না করে শত্রুর ওপর তার কিছুটা পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করলে লাভ ছাড়া ক্ষতি তো নেই!
কিন্তু ভারতীয় পাইলট আভিনন্দন ভার্তামানকে পাকিস্তান ফেরত পাঠানোর পর সবারই দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাবে বলে ধারণা করা যাচ্ছে। বিশেষ করে সামনেই ভারতের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকায় রাজনীতিবিদরা হয়তো এই সমস্যার সমাধানের পথ খোঁজার চেষ্টা করবেন।
আমরা ৭০ বছর যাবত এই এক ইস্যুতে যুদ্ধ করে আসছি, আর এখন আরেকবার যুদ্ধ শুরু হলে তা কতদিনে শেষ হবে, সে বিষয়েও আমরা নিশ্চিতভাবে কিছু বলতে পারি না।
কেবলমাত্র ঈশ্বরই জানেন এর শেষ কোথায়। পরিস্থিতি এই পর্যায় পর্যন্ত কীভাবে আসলো তা একটু খতিয়ে দেখার চেষ্টা করি আমরা।
পুলওয়ামায় ভারতীয় নিরাপত্তা রক্ষীদের ওপর হামলায় ৪০ জন নিহত হওয়ার পর ভারত সরকারের ওপর বেশ চাপ তৈরি হয় ঐ ঘটনার প্রতিশোধ নেয়ার জন্য।
নরেন্দ্র মোদি এখনও যে প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হওয়ার পর আরো বেশি যে প্রশ্নের সম্মুখীন হবেন- তা হলো, জনসমর্থন অর্জন করে আসন্ন নির্বাচনে জেতার উদ্দেশ্যেই তিনি এই অভিযানে সম্মতি দিয়েছেন কি না। তবে ভারতের সরকার বলছে, আক্রমণ করা ছাড়া পাকিস্তানকে প্রতিক্রিয়া প্রদর্শনের আর সব রাস্তা অনেকটাই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
এরকম একটা ধারণা আছে যে, এই অভিযানের সম্মতি না দেয়া হলে নরেন্দ্র মোদির বুকের পাটা কতটুকু তা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়ে যেত।
তবে কয়েকজন সামরিক বিশেষজ্ঞ এমনও প্রশ্ন তুলেছেন, এই অভিযানের ধারাবাহিকতায় দু’দেশের মধ্যে আরো বড় কোনো সংঘাতের সূত্রপাত হওয়ার সম্ভাবনার বিষয়টি নিয়ে সরকার কতটুকু চিন্তা করেছিল। এ মুহুর্তে অবশ্য ধীরে ধীরে উত্তেজনা প্রশমিত হচ্ছে।
কাজেই আক্রমণের চূড়ান্ত অনুমতি দেয়ার আগে ঐ সিদ্ধান্তের ফলে একটি পরমাণুু যুদ্ধ শুরু হতে পারতো কি না সে বিষয়ে নেতারা কতটা ওয়াকিবহাল ছিলেন?
এই প্রশ্নের উত্তর হয়তো আমরা কিছুদিনের মধ্যেই পেতে শুরু করবো। আরো একটি প্রশ্ন উঠছে। সেটি হলো, এখন পর্যন্ত বিজয়ী আসলে কারা? নাকি এখনও ‘ম্যাচ ড্র’ হয়েছে বলা চলে?
ভারত সরকার যেদিন বালাকোটে আক্রমণের বিস্তারিত জানায়, সেদিন সবাই মনে করেছিল যে এবারের নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদির জয় একরকম নিশ্চিতই হয়ে গেলো। ভারতের কাছে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিশ্বাসযোগ্যতাও এখন অনেকটাই প্রশ্নের মুখে।
ভারত এখন ইমরান খানের একটি বিষয়ই আমলে নেবে-তা হলো ভারতে হামলা করা জঙ্গীদের দমনে তিনি কী ভূমিকা নেন। কিন্তু কাশ্মীরে আরেকটি রক্তক্ষয়ী হামলা হলে পরিস্থিতি কী হতে পারে, সে বিষয়ে কেউই কথা বলছে না।
একজন অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল বলছিলেন, যুদ্ধে উত্থান-পতন থাকবেই। যুদ্ধের সময় কোনো পক্ষেরই উচিত না অতি দ্রæত হতাশ হওয়া অথবা বিজয় উদযাপন করা উচিত নয়।
ভারতের একজন পাইলটকে আটক করার বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ার পর উত্তেজনা প্রশমিত হতে শুরু করে। দু’দেশের মধ্যে এবারের সংঘাতের বিস্তারিত বিশ্লেষণ প্রকাশিত হলে হয়তো সাধারণ মানুষ বুঝতে পারবে যে একজন পাইলটের জন্য শতশত বা হাজার-হাজার মানুষের জীবন বেঁচে গেছে।
পাইলট যদি বেঁচে না থাকতেন তাহলে ভারতের পক্ষ থেকে প্রতিশোধের দাবী থাকতো প্রবল, তখন নরেন্দ্র মোদির হাতে অন্য কোনো রাস্তাও হয়তো খোলা থাকতো না। তাই আটককৃত পাইলটকে ছেড়ে দেয়ার কারণ ইমরান খানের ভাষায় ‘শুভাকাঙ্খিতার ইঙ্গিত’ নাকি পাকিস্তানের ওপর আন্তর্জাতিক মহলের চাপ-সে বিষয় এখনই নিশ্চিত হওয়ার সুযোগ না থাকলেও, এর ফলে যে দু’দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা দ্রুত প্রশমিত হয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
তবে কাশ্মীরের সাম্প্রতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ে দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনা আপাতত স্তিমিত হলেও দু’দেশের রাজনীতিবিদ, সাধারণ মানুষ আর গণমাধ্যম এ বিষয়ে উত্তপ্ত আলোচনা যে এখানেই ছেড়ে দেবে না, তা বলাই বাহুল্য।