ট্রেনের টিকেট পেয়ে কষ্ট ভুলছেন যাত্রীরা

51

আসছে ২ জুন, রবিবার। এদিন শবে কদর উপলক্ষে সরকারি ছুটি। পরদিন অর্থাৎ ৩ জুন অফিস-আদালত খোলা থাকলেও অনেকেই এ দিনটিও ছুটি ভোগ করবেন। যে কারণে ঈদের ছুটি লম্বা করতে আগেভাগেই শুরু হয়েছে বাড়ি যাওয়ার তাড়া। এর রেশ ঠের পাওয়া যায় রেলস্টেশনে। গতকাল শুক্রবার চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে ঈদের টিকেট বিক্রির তৃতীয় দিন টিকেট সংগ্রহে যাওয়া যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় ছিল। এদিন ২ জুনের টিকেট বিক্রি করা হয়। আজ শনিবার ৩ জুনের টিকেট ক্রয় করতেও যাত্রীদের প্রচুর ভিড় থাকবে। পরদিন থেকে ঈদের ছুটি শুরু হওয়ায় এদিনই যাত্রীরা বাড়ি যেতে তৎপর থাকবেন।
রেলস্টেশনের ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ পূর্বদেশকে বলেন, বিক্রির তৃতীয় দিনে সবক’টি ট্রেনের টিকেট শেষ হয়ে যায়। কাউন্টারে যতক্ষণ টিকেট ছিল যাত্রীরা পেয়েছেন। অপেক্ষা করলেই টিকেট পাওয়া যাবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রথম ও দ্বিতীয় দিনের তুলনায় তৃতীয় দিনে যাত্রীদের লাইন দীর্ঘ। আগেরদিন রাত থেকেই যাত্রীরা লাইনে দাঁড়িয়েছেন। অনেকে সেহেরী খেয়েই স্টেশনে হাজির হয়েছেন। লাইনের অগ্রভাগে থাকা যাত্রীদের মুখে হাসি থাকলেও পেছনের যাত্রীরা ছিল বিমর্ষ। টিকেট পাওয়া না পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন পেছনে থাকা যাত্রীরা। টিকেট কাটাতেও যেন দুর্ভোগ ভোগান্তি যাত্রীদের পিছু নিয়েছে। তবে লাইনে দাঁড়ানোর কষ্ট নিমিষেই লাঘব হয়েছে সোনার হরিণ যাত্রার টিকেট হাতে পেয়ে। অনেকের চোখেমুখে গরমের তীব্রতা অনুভূত হলেও টিকেট হাতে পেয়েই নির্মল হাসিতে বলেছেন, ‘টিকেট পেয়েছি, এবার বাড়ি যাব।’ বন্ধের দিন হওয়ায় এদিন স্টেশনে সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের ভিড় ছিল। রেলওয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিসহ নিরাপত্তায় ছিল কড়াকড়ি। চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি ফার্মে কর্মরত নুসরাত শাম্মি বলেন, বাসা স্টেশনের কাছে থাকায় সেহেরীর পরপরই এখানে আসি। কিন্তু তার আগেই দেখি অনেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর টিকেট পেয়েছি। এতক্ষণ অপেক্ষা করে যে কষ্ট লেগেছে টিকেট পাওয়ার পর কষ্ট চলে গেছে।
ইপিজেডের একটি পোশাক কারখানায় কর্মরত লিটন অধিকারী বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে স্টেশনে চলে আসি। কাউন্টারের সামনেই পেপার বিছিয়ে বসেছিলাম। কিছুক্ষণ বসে বসে ঘুমিয়েছি। যে কারণে লাইনের শুরুর দিকেই ছিলাম। টিকেট দেয়া শুরু হওয়ার অল্পক্ষণ পরেই পেয়ে যাই। দুই ভাইসহ আমি ও স্ত্রী এবার বাড়ি যাব। তাই চারটি টিকেট সংগ্রহ করেছি।
এদিকে গতকালও সাতটি কাউন্টারে টিকেট দেয়া হয়েছে। ১নং কাউন্টারে মহিলা, ওয়ারেন্ট, রেলওয়ের পাশ, ২নং কাউন্টারে সুবর্ণ ও সোনার বাংলা এক্সপ্রেস, ৩নং কাউন্টারে পাহাড়িকা ও উদয়ন এক্সপ্রেসের, ৪নং কাউন্টারে তুর্ণা, মেঘনা এক্সপ্রেস ও চাঁদপুর স্পেশাল, ৫নং কাউন্টারে মহানগর গোধূলী, মহানগর এক্সপ্রেস, ৬নং কাউন্টারে বিজয় এক্সপ্রেস, চট্টলা এক্সপ্রেস এবং ৭নং কাউন্টারে চলতি টিকেট বিক্রি করা হয়। আজ ২৫ মে ৩ জুনের এবং ২৬ মে ৪ জুনের আগাম টিকেট বিক্রি করা হবে। এ ছাড়া আগামী ২৯ মে ৭ জুনের, ৩০ মে ৮ জুনের, ৩১ মে ৯ জুনের, ১ জুন ১০ জুনের ও ২ জুন ১১ জুনের ফিরতি টিকেট বিক্রি হবে। ঈদে সুবর্ণ এক্সপ্রেস প্রতিদিন সকাল সাতটায়, গোধূলী বিকেল ৩টায়, মহানগর এক্সপ্রেস ১২টা ৩০ মিনিটে, সোনার বাংলা বিকেল ৫টায়, মেইল এক্সপ্রেস রাত সাড়ে ১০টায়, তূর্ণা এক্সপ্রেস রাত ১১টায় চট্টগ্রাম ছেড়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হবে।