ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু, প্রথম দিনে ভিড় কম

98

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রেলের অগ্রিম টিকেট বিক্রির প্রথমদিন যাত্রীদের চাপ ছিল কম। যে কারণে কাউন্টারে থাকা তিন হাজার ৭৫৯ টিকিটের মধ্যে তূর্ণা, সুবর্ণ ও সোনার বাংলাসহ কয়েকটি আন্তঃনগর ট্রেনের অর্ধেক টিকিট অবিক্রিত থেকে যায়। তবে বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকেট আগেভাগেই শেষ হয়ে যায়। গতকাল সকাল ৯টা থেকে ঈদের অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হয়। এদিন ৩১ মে ঈদযাত্রার টিকেট বিক্রি করা হয়।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা আনসার আলী পূর্বদেশকে বলেন, ‘সকাল থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়। প্রথমদিনে যাত্রীর চাপ কম ছিল। যে কারণে তূর্ণা, সুবর্ণ ও সোনার বাংলাসহ কয়েকটি ট্রেনের অধিকাংশ টিকেট অবিক্রিত রয়ে যায়। যাত্রীরা যখনই যাবেন তখনই অবশিষ্ট টিকেট কাউন্টার থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন।’
চট্টগ্রাম রেলস্টেশন ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ পূর্বদেশকে বলেন, ঈদ উপলক্ষে প্রথমদিনে সাত হাজার ৪১টি টিকিট ছাড়া হয়। এরমধ্যে তিন হাজার ৭৫৯টি টিকেট কাউন্টারে রেখে বাকিগুলো অনলাইনে বিক্রি করা হবে। তবে নিয়মিত মেইল, এক্সপ্রেসসহ যুক্ত করলে প্রায় ১২ হাজার টিকেট ছাড়া হয়েছে। তবে প্রথমদিনে বেশিরভাগ টিকিট অবিক্রিত রয়ে গেছে। আগামী শুক্রবার ও শনিবার স্টেশনে টিকেট নিতে যাত্রীদের ভিড় বাড়বে বলেও জানান তিনি। সরেজমিনে সকাল ১০টায় রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, সাতটি কাউন্টারে টিকেট বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতিটি কাউন্টারের সামনেই যাত্রীরা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকেট সংগ্রহ করেছেন। তবে যাত্রীর চাপ ছিল কম। যারাই লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করেছেন তারা টিকেট পেয়েছে। ১নং কাউন্টারে মহিলা, ওয়ারেন্ট, রেলওয়ের পাস, ২নং কাউন্টারে সুবর্ণ ও সোনার বাংলা এক্সপ্রেস, ৩নং কাউন্টারে পাহাড়িকা ও উদয়ন এক্সপ্রেসের, ৪নং কাউন্টারে তূর্ণা, মেঘনা এক্সপ্রেস ও চাঁদপুর স্পেশাল, ৫নং কাউন্টারে মহানগর গোধূলী, মহানগর এক্সপ্রেস, ৬নং কাউন্টারে বিজয় এক্সপ্রেস, চট্টলা এক্সপ্রেস এবং ৭নং কাউন্টারে চলতি টিকেট বিক্রি করা হয়। টিকিট বিক্রি দেখভাল করতে সকাল থেকেই স্টেশনে উপস্থিত ছিলেন রেলওয়ে পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
টিকেট পেয়ে উচ্ছ¡াসিত সিভাসুর শিক্ষার্থী সুস্মিতা বর্মন বলেন, ‘প্রথমদিনে ঘণ্টাখানেক লাইনে দাঁড়িয়ে টিকেট পেয়েছি। কোনোরকম জটিলতা ছাড়াই টিকিট সংগ্রহ করতে পেরেছি। এবার ভালোভাবে বাড়ি যেতে পারলেই বাঁচি।’
সাড়ে ১০টার দিকে যাত্রী আব্বাস উদ্দিন লিটন বলেন, সকাল সাড়ে ৮টায় টিকেট নিতে লাইনে দাঁড়িয়েছি। অনলাইনে অনেকক্ষণ ট্রাই করেও টিকেট না পেয়ে লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম। এখানে টিকেট পেয়েছি। অনলাইন সেবা নিয়ে রেল এবার বদনামের ভাগিদার হয়েছে বলেও জানান তিনি।
জানা যায়, এবার একজন যাত্রী জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে সর্বোচ্চ চারটি টিকেট সংগ্রহ করতে পারছেন। ঈদ উপলক্ষে বিক্রিত অগ্রিম টিকেট ফেরত নেয়া হবে না। অগ্রিম টিকিট বিক্রয়কালীন নির্ধারিত চলতি কাউন্টার থেকে প্রতিদিনের যাত্রার টিকেট ক্রয় করা যাবে। সুবর্ণ এক্সপ্রেস ও সোনার বাংলা ট্রেনের কোন আসন বিহীন টিকিট ইস্যু হচ্ছে না। অন্যান্য ট্রেনে যাত্রার দিন আসন বিহীন টিকিট ইস্যু করা হবে।
রেল সূত্র জানায়, আজ ২৩ মে ১ জুনের, ২৪ মে ২ জুনের, ২৫ মে ৩ জুনের এবং ২৬ মে ৪ জুনের আগাম টিকেট বিক্রি করা হবে। এ ছাড়া আগামী ২৯ মে ৭ জুনের, ৩০ মে ৮ জুনের, ৩১ মে ৯ জুনের, ১ জুন ১০ জুনের ও ২ জুন ১১ জুনের ফিরতি টিকিট বিক্রি হবে। ঈদে সুবর্ণ এক্সপ্রেস প্রতিদিন সকাল সাতটায়, গোধূলী বিকেল ৩টায়, মহানগর এক্সপ্রেস ১২টা ৩০ মিনিটে, সোনার বাংলা বিকেল ৫টায়, মেইল এক্সপ্রেস রাত সাড়ে ১০টায়, তূর্ণা এক্সপ্রেস রাত ১১টায় চট্টগ্রাম ছেড়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হবে।