ট্রাম্প-রাশিয়ার আঁতাতের সন্ধানে এফবিআই তদন্ত শুরু করেছিল

36

রাশিয়ার সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কোনও আঁতাত হয়েছে কি না তা খুঁজে দেখতে রীতিমত তদন্ত শুরু করেছিলেন মার্কিন গোয়েন্দারা। যুক্তরাষ্ট্রের ‘ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের’ (এফবিআই) প্রধান জেমস কমিকে বরখাস্তের পর সংশ্লিষ্টরা ট্রাম্পকে গভীরভাবে সন্দেহ করা শুরু করেছিলেন।
তাদের ধারণা হয়েছিল, ট্রাম্প আসলেই যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করছেন। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদপত্র নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, তখন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা দুরটি সম্ভাবনার কথাই বিবেচনা করছিলেন: হয় ট্রাম্প জেনেশুনে রাশিয়াকে সহায়তা করছেন বা অসচেতনভাবে রাশিয়ার ফাঁদে পড়েছেন।
তদন্তকারীরা রাশিয়ার সঙ্গে আঁতাতের পাশাপাশি আরও একটি বিষয়ে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছিলেন। আর সেটি জেমস কমির বিষয়ে। তাকে বরখাস্ত করে ট্রাম্প আইনি প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করেছেন কি না তা খতিয়ে দেখা শুরু করেছিলেন তারা। সাবেক একজন মার্কিন নিরাপত্তা কর্মকর্তা নিউ ইয়র্ক টাইমসকে জানিয়েছেন, ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণা চলার সময় থেকেই ট্রাম্প-রাশিয়ার আঁতাতের বিষয়ে সন্দিগ্ধ হয়ে উঠেছিলেন এফবিআইয়ের কর্মকর্তারা। কিন্তু তারা তখন বুঝতে পারছিলেন না, এমন একটি স্পর্শকাতর বিষয়ে তদন্ত শুরু করাটা ঠিক হবে কি না ও এত বড় একটা বিষয় নিয়ে কীভাবে কাজ করা যেতে পারে। কিন্তু ২০১৭ সালের মে মাসে সংস্থাটির সাবেক প্রধান জেমস কমির বরখাস্ত হওয়ার ঘটনাকে মার্কিন নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের তদন্তের সঙ্গে জড়িয়ে ট্রাম্পে দুই দফায় মন্তব্য করলে সন্দেহ বেড়ে যায় গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের।
তারা এরপর তদন্ত শুরুর সিদ্ধান্ত নেন। মার্কিন নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের বিষয়ে তদন্তের জন্য নিযুক্ত বিশেষ তদন্তকারী রবার্ট মুলারের কার্যক্রমের কিছুদিন আগেই শুরু হয় এফবিআইয়ের তদন্ত। মুলার এখনও ট্রাম্পের সঙ্গে রাশিয়ার আঁতাতের বিষয়ে তদন্ত করছেন কি না তা স্পষ্ট না। তবে তার সহযোগীদের বিষয়ে মুলারের তদন্ত অব্যহত আছে। এফবয়াইয়ের সাবেক কয়েকজন কর্মকর্তা মন্তব্য করেছে এফবিআই প্রেসিডেন্টের বিষয়ে এমন তদন্ত শুরু করে কর্তৃত্ববহির্ভূত কাজ করেছে।
সাবেক এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা মন্তব্য করেছেন, এফবিআইয়ের তদন্তের দুইটি দিক আছে। একটি গুপ্তচরবৃত্তির, অপরটি অপরাধের। রাশিয়ার সঙ্গে আঁতাত গুপ্তচরবৃত্তির বিষয়। আর যদি ট্রাম্প আঁতাতের ঘটনা চাপা দিতে কমিকে বরখাস্ত করে থাকেন তাহলে তা আইনি কাজে বাধাপ্রদনের সূত্রে অপরাধ। এখন পর্যন্ত অবশ্য দুইটির কোনওটিই প্রমাণ করা যায়নি।
কিন্তু নিউ ইয়র্ক টাইমস স্মরণ করিয়ে দিয়েছে, ২০১৬ সালের নির্বাচনের প্রচারণা চালানোর সময় ট্রাম্প রাশিয়ার প্রতি আহব্বান জানিয়েছিলেন তার প্রতিপক্ষের ইমেইল অ্যাকাউন্ট হ্যাক করতে।
ট্রাম্প প্রকাশ্যে রাশিয়ার সমালোচনা করেন না। তারওপ ইদানীংকালে ইউক্রেনের বিষয়ে রিপাবলিকান পার্টির সুর নরম হয়ে গেছে। ইউক্রেনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান অবস্থান রাশিয়াকেই সুবিধা এনে দিচ্ছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।