ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বর্ণবাদের অভিযোগ

28

মার্কিন কংগ্রেসের ডেমোক্রেট দলীয় নারী সদস্যদের আক্রমণ করে কয়েকটি টুইট করার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বর্ণবাদের অভিযোগ উঠেছে। টুইটে ওই নারীরা ‘প্রকৃতপক্ষে এমন দেশ থেকে এসেছে যাদের সরকারগুলো সম্পূর্ণ ও পুরোপুরি ব্যর্থ’ বলে দাবি করে তাদের সেসব দেশে ‘ফিরে যাওয়ার’ পরামর্শ দিয়েছেন ট্রাম্প। কংগ্রেসের স্পিকার ডেমোক্রেট দলীয় ন্যান্সি পেলোসি তাদের ‘দ্রূত বিনামূল্যে ভ্রমণের ব্যবস্থা করে দিতে খুব সুখীবোধ করবেন’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি, জানিয়েছে বিবিসি। নাম উল্লেখ না করলেও ট্রাম্প ডেমোক্রেট দলীয় প্রতিনিধি নিউ ইয়র্কের আলেকজান্ড্রিয়া ওকাসিও-কোর্তেজ, মিনেসোটার ইলহান ওমর, ম্যাসাচুসেটসের আইয়ানা প্রেসলি ও মিশিগানের রাশিদা তালিবকে উদ্দেশ্য করে এসব কথা বলেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ডেমোক্রেট প্রতিনিধিদের এই দলটি ‘দ্য স্কোয়াড’ নামে পরিচিত।
এরা ট্রাম্পের কঠোর সমালোচনার পাশাপাশি মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের বর্তমান ডেমোক্রেট দলীয় নেতৃবৃন্দেরও সমালোচনা করে আসছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এক সপ্তাহ আগে পার্টির অন্তর্দ্বন্দ্বে স্পিকার পেলোসির সঙ্গে এই স্কোয়াডের বিরোধ হয়। স্কোয়াডের চার কংগ্রেসওম্যানের মধ্যে তিন জনের জন্ম যুক্তরাষ্ট্রে ও তারা সেখানেই বেড়ে উঠেছেন। চতুর্থজন ইলহান ওমর শিশু বয়সে যুক্তরাষ্ট্রে যান ও সেখানেই বেড়ে ওঠেন। তাদের মধ্যে ওকাসিও-কোর্তেজের জন্ম নিউ ইয়র্কের ব্রঙ্কস এলাকায়, একই শহরের কুইন্স হাসপাতালে ট্রাম্পেরও জন্ম। তিনটি টুইটে ট্রাম্প এই কংগ্রেসওম্যানরা তাকে ও যুক্তরাষ্ট্রকে ‘হিংসাত্মক সুরে’ সমালোচনা করেছে বলে অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, “দেখতে খুব মজা লাগছে ‘প্রগতিশীল’ ডেমোক্রেট কংগ্রেসওম্যান, যারা প্রকৃতপক্ষে এমন দেশগুলো থেকে এসেছেন যাদের সরকারগুলো বিশ্বের যেকোনো জায়গায় সম্পূর্ণ ও পুরোপুরি ব্যর্থ, নিকৃষ্টতম, সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত ও অদক্ষ (যদি আদৌ কোনো কার্যকর সরকার তাদের থেকে থাকে), এখন উচ্চ ও হিংসাত্মক সুরে যুক্তরাষ্ট্রের জনগণকে বলছে, বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ও সর্বশ্রেষ্ঠ জাতিকে বলছে, কীভাবে আমাদের সরকার চালাতে হবে। “কেন তারা ফিরে গিয়ে তাদের পুরোপুরি ভেঙে পড়া ও অপরাধে জর্জরিত এলাকাগুলোকে ঠিক করছে না যেখান থেকে তারা এসেছে। সেটি করে এসে আমাদের দেখান কীভাবে তা করেছেন। “আপনাদের সাহায্য ওই এলাকাগুলোর খুব দরকার, আপনারা খুব দ্রুতই যেতে পারবেন। আমি নিশ্চিত, ন্যান্সি পেলোসি দ্রূত বিনামূল্যে ভ্রমণের ব্যবস্থা করে দিতে সুখীবোধ করবেন!” প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার পেলোসি ট্রাম্পের এই টুইটগুলোকে ‘বিদ্বেষমূলক’ অভিহিত করে এর সমালোচনা করেছেন।
পাল্টা টুইটে তিনি বলেছেন, “যখন ডনাল্ড ট্রাম্প চার মার্কিন নারী কংগ্রেস সদস্যকে তাদের নিজের দেশে ফিরে যাওয়ার কথা বলেন, তখন তার ‘মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’ পরিকল্পনা যে সবসময় আমেরিকাকে সাদা বানানোর পরিকল্পনা তা ফের নিশ্চিত করেন। “আমাদের বৈচিত্র আমাদের শক্তি এবং আমাদের একতাই আমাদের ক্ষমতা।” অন্যান্য ডেমোক্রেট রাজনীতিবিদদের পাশাপাশি বের্নি স্যান্ডার্সও ট্রাম্পের মন্তব্যকে ‘বর্ণবাদী’ অভিহিত করে এর সমালোচনা করেছেন। জন ম্যাককেইনের কন্যা রিপাবলিকান সর্মথক কলামিস্ট মেগান ম্যাককেইনও ট্রাম্পের মন্তব্যকে ‘বর্ণবাদী’ অভিহিত করে প্রতিনিধি ইলহান ওমরের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেছে, “এই দেশে যাদের আমরা স্বাগত জানিয়েছি তাদের ‘ফিরে যেতে’ বলতে পারি না।” সাংবাদিকসহ অন্যান্য শ্রেণি-পেশার লোকও ট্রাম্পে এসব মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন।