ট্যুরিজম খাতের উন্নয়ন হলে দেশের চেহারা পাল্টে যাবে

51

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম বলেছেন, বিদেশি বিনিয়োগে তিন পার্বত্য জেলা ও কক্সবাজারে সমন্বিত ট্যুরিজম খাতের উন্নয়ন করা সম্ভব হলে দেশের চেহারা পাল্টে যাবে। বিনিয়োগে উৎসাহিত করা বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) মূল কাজ। এর বাইরে বিনিয়োগকারীকে সহায়তা দেওয়া, পলিসি অ্যাডভোকেসি করি। বিডার দেশব্যাপী তেমন উপস্থিতি নেই, অফিস নেই।
তিনি গতকাল রবিবার সকালে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে বিভাগীয় বিনিয়োগ ও ব্যবসার উন্নয়ন সহায়তা কমিটির সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন।
বিডা চেয়ারম্যান বলেন, বিনিয়োগ বিকাশ জাতীয় পর্যায়ে বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারের ১০টি বিষয়ের একটি। তারুণ্যের শক্তি বাংলাদেশের সমৃদ্ধি- এ কথার দৃষ্টিগ্রাহ্য যুক্তি আছে। উন্নত দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কম, এমনকি নেগেটিভ। আমাদের ১৫-৪০ বছরের লোকসংখ্যা ৫ কোটির বেশি। এটি ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড। এটি বোঝা হবে যদি তাদের প্রশিক্ষিত করা, কাজে লাগানো না যায়।
সিরাজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের শিল্পের সূতিকাগার চট্টগ্রাম। প্রধান সমুদ্রবন্দর এখানে। আমদানি-রফতানির ৯০ ভাগ এ বন্দর দিয়ে হয়। দেশের প্রধান শিল্প গার্মেন্টস। যখন পোশাক রফতানি করা হয়, এ বন্দরে আনতে হয়। অর্থনৈতিক উন্নয়নে চট্টগ্রাম বন্দরের বড় ভূমিকা রয়েছে। শীর্ষ বন্দরের তালিকায় চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থান আরও এগিয়ে আনতে হবে। বন্দরের লিড টাইম কমাতে হবে। ২০২১ সালে পদ্মা সেতু চালু হলে অর্থনীতির অদৃশ্য হাতে মোংলা, পায়রা সমুদ্রবন্দরের কার্যক্রম বেড়ে যাবে। মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর হলে লিড টাইম অনেক কমে যাবে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বাধীন দেশ দিয়েছেন। তার সামগ্রিক স্বপ্ন ছিল সোনার বাংলা গড়া। এর অর্থ ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত,সমৃদ্ধ দেশ করে যাওয়া। আমরা আসলেই দুর্ভাগা জাতি। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে আমরা আরও অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারতাম। আমরা আমাদের জাতির জনককে দেশ গড়ার সুযোগ দিইনি।
বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল মান্নান বলেন, দেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি চট্টগ্রাম বন্দর। এটি দ্রুত ১০০ শীর্ষ বন্দরের মধ্যে অনেক ধাপ চলে এসেছে। এ চট্টগ্রামে ৩০ হাজার একর জমিতে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর হচ্ছে। ৮-৯ হাজার একর জমি বর্তমানে প্রস্তুত। কর্ণফুলী নদীর নিচে সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকায় টানেল হচ্ছে। মাতারবাড়ীতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প হচ্ছে। গভীর সমুদ্রবন্দরের অ্যাকোয়ার কাজ চলছে। কক্সবাজার বিমানবন্দরের কাজ চলছে। কক্সবাজারের রেলস্টেশন হবে ঝিনুকের মতো। মিরসরাই থেকে টানেল দিয়ে চকরিয়া পেকুয়া দিয়ে লাবণী পয়েন্টে মিলিত হয়ে মেরিন ড্রাইভের মাধ্যমে টেকনাফ পর্যন্ত যাওয়া যাবে। সবকিছু মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ডেল্টা প্ল্যান অনুযায়ী হচ্ছে।
উদ্যোক্তা অন্বেষণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশের শীর্ষ শিল্প গ্রূপের মালিকরা চট্টগ্রামের। অনেক বড় শিল্পগ্রæপের কারখানা হচ্ছে চট্টগ্রামে। আমাদের তারুণ্যের শক্তিই বড়। তাদের দিয়েই বাস্তবায়িত হবে ডেল্টা প্ল্যান।
বিভাগীয় কমিশনার বিডার চেয়ারম্যানের প্রতি আহব্বান রেখে বলেন, আগামীতে বিডার চেয়ারম্যান চট্টগ্রাম সফরে আসলে শিল্প গ্রূপের মালিকদের সাথে বসার অনুরোধ করেন।
অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) নুরুল আলম নিজামীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিভাগীয় কমিশনার মো. আব্দুল মান্নান। আলোচনায় অংশ নেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) শঙ্কর রঞ্জন সাহা, স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক দীপক চক্রবর্ত্তী প্রমুখ।