টেকনাফে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ২

21

টেকনাফে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। রবিবার ভোর রাতে টেকনাফ উপজেলার মহেশখালীয়া পাড়া নৌঘাট ও উনছিপ্রাংয়ের মদিনার জোড়া সংলগ্ন নাফ নদীর তীরে এই ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটে।
বিজিবি ও পুলিশের ভাষ্য মতে, নিহত দুজনই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিল। এসময় মাদক ও অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তিরা হলেন, টেকনাফের হোয়াইক্যং কানজর পাড়ার মৃত আবদুল জলিলের ছেলে রহিম উদ্দিন ওরফে রফিক (৩৭) ও সদর ইউনিয়নের ডেইল পাড়া এলাকার ছালে আহমেদের ছেলে মো. আজিজ (২৩)।
টেকনাফ-২ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ ফয়সল হাসান খান বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে একটি ইয়াবার চালান এনে নাফ নদী হয়ে টেকনাফের হোয়াইক্যং উনছিপ্রাংয়ের মদিনার জোড়া এলাকায় দিয়ে প্রবেশ করছে, এমন গোপন সংবাদ পেয়ে বিজিবির একটি বিশেষ দল ওই এলাকায় অবস্থান নেয়। এসময় নদীর তীরে এক লোককে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। কিছুক্ষণ পরে একটি নৌকায় আরও কয়কজন আসে। বিজিবির সদস্যরা তাদের নৌকা থামনোর নির্দেশ দিলে তারা বিজিবির ওপর গুলি চালায়। এ সময় বিজিবি আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায়। মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি চালিয়ে নৌকা নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে ওই এলাকায় তল�াশি চালিয়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রহিম উদ্দিনকে উদ্ধার করে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে কক্সবাজার হাসপাতালে পাঠান। সেখানকার ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিজিবির এই কর্মকর্তা বলেন, এসময় ঘটনাস্থল থেকে একটি দেশীয় তৈরি এলজি, ৩ রাউন্ড কার্তুজ ও ৬০ হাজার পিস ইয়াবা ও দুটি কিরিচ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
ঘটনা সত্যতা নিশ্চিত করে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) প্রদীপ কুমার দাস বলেন, শনিবার রাতে একদল পুলিশ টেকনাফ পৌরসভার শাপলা সত্তর এলাকা থেকে মাদক কারবারি মো. আজিজকে আটক করে। পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী রবিবার ভোর রাতে তিনিসহ পুলিশের বিশেষ টিম টেকনাফ সদরের মহেষখালীয়া পাড়া নৌঘাট এলাকায় আটক ব্যক্তির আস্তানায় অস্ত্র ও ইয়াবা উদ্ধারে গেলে তার সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে। এসময় আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এই গোলাগুলিতে তিন পুলিশ সদস্য আহত হন।
তিনি বলেন, এসময় ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ আজিজকে উদ্ধার করে টেকনাফ উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। সেখানে পৌঁছালে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচেছ বলে জানিয়েছেন।
ওসি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে একটি দেশীয় তৈরি এলজি, ৭ রাউন্ড কার্তুজ ও ৩ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয় এবং এ ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তারা— উপপরিদর্শক মো. কামরুজ্জামান, সহকারী উপ-পরিদশক মো. মিশকাত ও কনেস্টবল রুমান দাশ।’
টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শঙ্কর চন্দ্র দেবনাথ বলেন, পুলিশ ও বিজিবির সদস্যরা দুজন গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিকে নিয়ে আসেন। তাদের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুলির আঘাত রয়েছে এবং আহত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত,গত দুই বছরের বেশি সময়ে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় মাদকবিরোধী অভিযানে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত ১৭৭ জন নিহত হয়েছে। এরমধ্যে মোট ৪৯ জন রোহিঙ্গা নিহত হয়।