টেকনাফের হ্নীলায় সবচেয়ে বেশি মাদক ব্যবসায়ী

62

টেকনাফ হ্নীলা বাসস্টেশনে পুলিশের উদ্যোগে মাদক, জঙ্গি, দুর্নীতি ও সন্ত্রাস বিরোধি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১ মার্চ ৫ টার দিকে টেকনাফ হ্নীলা ইউনিয়নে প্রধান বাসস্টেশনে পুলিশের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত অনষ্ঠানটি টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশের সভাপত্বিতে মাদক, জঙ্গি, দুর্নীতি ও সন্ত্রাস বিরোধি সভায় প্রধান অতিথি কক্সবাজার পুলিশ সুপার এবি এম মাসুদ হোসেন(বিপিএম) বলেন, শুধু পুলিশের একার পক্ষে ইয়াবা বন্ধ করা সম্ভব নয। ঘরে ঘরে সবাইকে মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে, না হলে দেশের যুব সমাজ ধ্বংস হয়ে যাবে। আত্মসর্পণের বাইরে এখনও যেসব ইয়াবা কারবারি ইয়াবা ব্যবসায় চালিয়ে যাচ্ছেন তাদেরকে বলছি, সময় আছে সরকারের কাছে আত্মসমর্পণ করেন, না হলে কেউ রেহাই পাবেন না। মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। ফলে কেউ রেহাই পাবেন না। ইয়াবার টাকায় যারা বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছে তাদের স্থান আজ কোথায়? তাদেরকে মানুষ এখন ঘৃণার চোখে দেখছে। ইয়াবা ব্যবসায়ীরা আত্মসমর্পণ করুন, না হলে পরিণিতি ভাল হবে না। পুলিশ যদি কোন নিরীহ মানুষকে হয়রানি করে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দুঃখের বিষয় টেকনাফের সন্তানরা বাবার লাশ ঘরে রেখে পরীক্ষায় অংশ নিতে যাচ্ছে। এটি শুধু মাদকের কারণে।
তিনি আরও বলেন, সরকার প্রধানের কঠোর বার্তা বাস্তাবায়ন করতে সকল আইনশৃঙ্খলাবাহিনী এক যোগে কাজ করছে। যে কোনো মূল্যে ইয়াবামুক্ত দেশ গড়া হবে। এজন্য যা যা করা দরকার তা করতে প্রস্তুত সরকার। ইতিমধ্যে ১০২ জন ইয়াবা কারবারি আত্মসমর্পণ করেছে, তারা পুলিশের কাছে অনেক ইয়াবা কারবারির তথ্য দিয়েছে, কেউ যদি মনে ইয়াবা ব্যবসা করে বেঁচে যাবেন তাহলে ভুল পথে রয়েছেন। এলাকায় কে কে ইয়াবা ব্যবসা করে সবাই জানেন। কিন্তু তথ্য দেন না। এখন থেকে যেসব এলাকায় ইয়াবা ধরা পড়বে, ইয়াবা ব্যবসায়ীদের তথ্য না দিলে জনপ্রতিনিধিদের মাদক মামলায় আসামি করা হবে।
জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসেন বলেন, টেকনাফকে চিনে ইয়াবার জন্য। হ্নীলা ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি ইয়াবা ব্যবসায়ী। এই ইউনিয়নে ৫ শ’ মাদক ব্যবসায়ি আছে। এজন্য ঘর থেকে ঘরে প্রথম যুদ্ধ ঘোষণা করতে হবে এবং আপনি আপনার সন্তান, পার্টনার, প্রতিবেশি তাদের চিহ্নিত করেন মাদক ব্যবসা কেন করে। আপনারা চিন্তা করে দেখেন আপনার ছেলেরা যদি ইয়াবা সেবন করে তাহলে আপনাদের কেমন লাগবে। সমগ্র বাংলাদেশে লক্ষ লক্ষ মা বাবার বুক খালি হয়েছে ইয়াবার কারণে। তিনি এলাকার মানুষবে বিশেষ আবেদন জানিয়ে বলেন, মাদকে ব্যবসা ব›ন্ধ করতে হবে, না হল মাটির নিচে যেতে হবে। আমাদের অফিসার ইনচার্জের ব্যাপারে একটি কথা বলি- তার ভেতর যথেষ্ট ভালোবাসা আছে। কিন্তু মাদকের কারণে তার ভালোবাসার রূপকে দেখাতে পারছে না। এখন টেকনাফের নাম শুনলে সবাই ঘৃণার চোখে দেখে। এই ঘৃণা থেকে রক্ষায় পাড়ায় পাড়ায় ইয়াবা বিরুদ্ধে সকলকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। তা না হলে পুলিশ ইয়াবা নির্মূলে সর্বচ্চ শক্তি প্রয়োগ করে, টেকনাফকে ইয়াবা মুক্ত ঘোষণা করবে।’
সভায় বক্তব্য রাখেন, উখিয়া সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নিহাদ আদনান তায়ান, মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, উপজেলা ওলামা লীগের সভাপতি মৌলনা কারী ফরিদুল আলম, হ্নীলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম। সভায় পরিচালনা করে ছাত্রলীগ নেতা হেলাল উদ্দিন।