জুমায় মুসল্লিদের ঢল আটকাতে বুকে প্লেকার্ড নিয়ে পুলিশ

52

জুমার নামাজে মসজিদে ভিড় ঠেকাতে অভিনব কৌশল অবলম্বন করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজ মসজিদেই আদায় করবেই এমন মনমানসিকতার মুসল্লিদের বাড়ি ফেরাতে তাদের সঙ্গে তর্কে না গিয়ে বুকে প্লেকার্ড ঝুলিয়ে মসজিদের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন পুলিশ সদস্যরা।
পুলিশের এমন কৌশলের কাছে নতি স্বীকার করে বাড়ি ফিরে গেছেন মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করার জন্য চেষ্টা করা মুসল্লিরা। মুসল্লিরা নিজেদের ভুলও বুঝতে পেরেছেন।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে এমন ঘটনা ঘটেছে নগরের ডবলমুরিং থানাধীন দেওয়ানহাট ফাঁড়ির কয়েকটি এলাকায়। খবর বাংলানিউজের
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকারের পক্ষ থেকে মসজিদে জুমার নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে খতিব, মুয়াজ্জিন, খাদেমসহ সর্বোচ্চ ১০ জন নির্ধারণ করে দিয়েছে। এছাড়া প্রতি ওয়াক্তের নামাজে ইমাম, মুয়াজ্জিন, খাদেমসহ সর্বোচ্চ ৫ জন মসজিদের নামাজ আদায় করতে পারবে বলে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
সরকারের এ নির্দেশনা না মেনে কিছু মুসল্লি জুমার নামাজ মসজিদে আদায়ের চেষ্টা করলে দেওয়ানহাট পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা এমন অভিনব কৌশল অবলম্বন করে মুসল্লিদের বুঝাতে সক্ষম হন।
মসজিদগুলোর সামনে পুলিশ সদস্যরা ব্যানার ও বুকে প্লেকার্ড ঝুলিয়ে অবস্থান নেন। পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে এসে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকেন ডবলমুরিং থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জহির হোসেনও।
পুলিশ সদস্যদের বুকে প্লেকার্ডে লেখা হয়: ‘আমরা পুলিশ, আমাদেরও পরিবার আছে’, ‘ধর্ম যার যার দেশ সবার’, ‘আমরা পুলিশ আমাদেরও সন্তান আছে, আপনাদের জন্য আজ আমরা বাইরে দাঁড়িয়ে আছি।’
এমন উদ্যোগ নেন দেওয়ানহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) অর্নব বড়–য়া। তিনি বলেন, মুসল্লিদেরকে মসজিদ থেকে মাইকে ঘোষণা দিয়ে না আসার জন্য অনুরোধ করেছিলেন ইমামেরা। কিন্তু কিছু মুসল্লি তা অগ্রাহ্য করে মসজিদে এসে ভিড় করার চেষ্টা করেন। তখন আমরা এমন পথ বেঁছে নেই।
এসআই অর্নব বড়–য়া বলেন, আমরা আমাদের এমন কৌশলে মুসল্লিদের বুঝাতে সক্ষম হয়েছি। তারা বুঝেছেন। বাড়িতে ফেরত গেছেন।
মোঘলটুলী পাক্কাপুকুরপাড় জামে মসজিদের সহকারী ইমাম হাফেজ মোহাম্মদ আবুল কালাম বলেন, আমরা মাইকে সরকারের নির্দেশনা ঘোষণা করেছিলাম। মুসল্লিদের অনুরোধ করেছিলাম তারা যেন যার যার বাড়িতে নামাজ আদায় করেন। কিন্তু কিছু মুসল্লি নির্দেশনা না মেনে মসজিদে এসে ভিড় করার চেষ্টা করলে পুলিশ মসজিদের সামনে বুকে প্লেকার্ড ঝুলিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। পরে যারা মসজিদে ভিড় করার চেষ্টা করেছিলেন তারা বাড়ি চলে যান। তারা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছেন।
ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সদীপ কুমার দাশ বলেন, মুসল্লিদের যার যার বাড়িতে নামাজ আদায় করতে আমরা অনুরোধ করেছি। মসজিদগুলোতে মাইকে ঘোষণা দেওয়া হয়। প্রতি ওয়াক্তে নামাজেও তা প্রচার করা হয়।
সদীপ কুমার দাশ বলেন, শুক্রবার জুমার নামাজে সাধারণত মসজিদে বেশি মুসল্লি আসেন। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে তাই মুসল্লিদের বাড়িতে নামাজ আদায়ের নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবুও কিছু মুসল্লি নির্দেশনা মানতে চাননা। আমাদের পুলিশ সদস্যরা তাদের কৌশলে বুঝিয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা নিয়মিত মাঠে কাজ করি। আমাদের পরিবার আছে, সন্তান আছে। দিনশেষে আমরা যখন বাড়ি যাই তখন তাদের কাছে যেতে ভয় হয়। বিষয়টি তুলে ধরে মানুষকে বুঝানোর চেষ্টা করেছে পুলিশ সদস্যরা।