জিয়াউল হক মাইজভান্ডারীর (ক.) খোশরোজ সম্পন্ন

304

বিশ্বঅলি শাহানশাহ্ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভান্ডারীর (ক.) ৯১তম খোশরোজ শরীফ যথাযোগ্য মর্যাদায় গতকাল বুধবার গাউসিয়া হক মন্জিলে অনুষ্ঠিত হয়। মাইজভান্ডারী গাউসিয়া হক কমিটি দেশ-বিদেশের শাখা কমিটিসমূহের সদস্যবৃন্দসহ লাখ লাখ ভক্ত এতে অংশ নেন।
খোশরোজ শরিফ উপলক্ষে অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল শাহানশাহ সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভান্ডারীর মাজারসহ গাউসুল আযম মাইজভান্ডারী, গাউসুল আযম বিল বিরাসত বাবাভান্ডারী ও হযরত সৈয়দ দেলাওর হোসাইন মাইজভান্ডারীর মাজার জিয়ারত, নফল নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত, জিকির আজকার, দরূদ পাঠ ও অশ্রুসিক্ত নয়নে আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিনের দরবারে ফরিয়াদ করেন।
এছাড়া বাদ ফজর মাজারে গিলাফ চড়ানো, স্থানীয় ৫টি দৈনিকে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ, হুজুরের জীবনী নিয়ে লেখা ৫টি জনপ্রিয় পত্রিকায় প্রবন্ধ প্রকাশ, বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রে বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠান, খতমে কোরআন, খতমে গাউসিয়া শরীফ, খতমে খাজেগান, মিলাদ ও মোনাজাতে প্রয়াত আশেক-ভক্তদের রূহের মাগফিরাতসহ সকলের সার্বিক কল্যাণ কামনা করা হয় এবং দিনব্যাপী ক্যাম্পে ক্যাম্পে জিকির-আজকার ও মাইজভান্ডারী কালাম পরিবেশনের পর রাত দশটায় সাজ্জাদানশীন রাহবারে আলম হযরত সৈয়দ মোহাম্মদ হাসান মাইজভান্ডারী’র সভাপতিত্বে শুরু হয় মাহফিল। মাহফিলে ‘তাসাওউফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় মাইজভান্ডারীয়া ত্বরিকা’, ‘কোরআন সুন্নাহ্র আলোকে গাউসুল আযম হযরত মাওলানা শাহসুফি সৈয়দ আহমদ উল্লাহ্ মাইজভান্ডারী (ক.)’, ‘বেলায়তে মোত্লাকার আলোকে সপ্ত কর্মপদ্ধতি ও শাহানশাহ্ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভান্ডারী (ক.)’, ‘মানব দরদী শাহানশাহ্ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভান্ডারী’ এবং ‘শাহানশাহ্ জিয়াউল হক মাইজভান্ডারীর জীবনী আলোচনা’য় অংশগ্রহণ করেন- জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসার মুর্দারিস ও সিটি গেট জামে মসজিদের খতিব আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ ইউনুস রেজভী, আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম ও বিবিরহাট তৈয়্যবিয়া জামে মসজিদের খতিব আল্লামা নূর মোহাম্মদ সিদ্দিকী, মাইজভান্ডার শরিফ উম্মুল আশেকীন মুনাওয়ারা বেগম এতিমখানা ও হিফ্যখানা’র প্রধান হাফেয মোহাম্মদ আবুল কালাম, মাদ্রাসা-ই-গাউসুল আযম মাইজভান্ডারী’র ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রভাষক মাওলানা মুহাম্মদ নাজিমুল হক আল কাদেরী ও তরুণ মাইজভান্ডারী আলোচক মাওলানা মুহাম্মদ মিনহাজ উদ্দীন।
এছাড়া অন্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল শাহানশাহ্ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভান্ডারী (ক.) ট্রাস্ট-এর ব্যবস্থাপনায় ‘ইসলামের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্বলিত দুর্লভ ভিডিও এবং চিত্র প্রদর্শনী’ ও নগরীর মুরাদপুর যাত্রীছাউনি হতে দিনব্যাপী বিআরটিসি’র বিশেষ বাস সার্ভিস।
মাহফিলের সভাপতি মাইজভান্ডার শরিফ গাউসিয়া হক মন্জিলের সাজ্জাদানশীন সৈয়দ মোহাম্মদ হাসান মাইজভান্ডারী বলেন, ‘ইনসানকে ইনসানে কামেলে উন্নীতকরণের ক্ষেত্রে যে সাধনা-জাগতিক ও আধ্যাত্মিক পরিচর্যা তারই এক সুমহান পথপ্রদর্শক ছিলেন শাহানশাহ্ সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভান্ডারী।
শাহানশাহ্ বাবাজানের আশেক-ভক্তদের উদ্দেশে তিনি আরো বলেন, ‘আশ্রাফুল মাখ্লুকাত’ হিসেবে নিজেদের যথাযোগ্য মর্যাদায় গড়ে তুলতে হলে ‘মা’ জাতির প্রতি যথার্থ সম্মান প্রদর্শনসহ ব্যক্তি, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনাচরণে অহংকার, স্বার্থ, লোভ ও প্রতিহিংসার ঊর্ধ্বে উঠে মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত রাখার চেষ্টাই হবে নিরন্তর সাধনা এবং সততা, নীতি নৈতিকতা ও সর্বক্ষেত্রে শুদ্ধ জীবন যাপনই হবে স্রষ্টা পথের পাথেয়।
তিনি দেশে এবং বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও সকল মানুষের সার্বিক কল্যাণ কামনায় আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করেন। কর্মসূচিসমূহ বাস্তবায়ন ও উরস শরীফ নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হওয়ায় উপজেলা প্রশাসন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ, মাইজভান্ডারী গাউসিয়া হক কমিটি বাংলাদেশ-এর সকল পর্যায়ের সদস্যবৃন্দ, সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট সকল কর্মীবাহিনীর প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা জানান।
মাহফিলে মিলাদ পরিচালনা করেন রওজা শরীফের খাদেম মাওলানা এসএম সেলিম উল্লাহ্ এবং সামা পরিবেশন করেন মাইজভান্ডারী মরমী গোষ্ঠীর সদস্য শিল্পী সাজ্জাদ হোসেন আরমান কাওয়াল।
অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাইজভান্ডারী গাউসিয়া হক কমিটি বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় পর্ষদ ও খোশরোজ পরিচালনা পর্ষদ সভাপতি রেজাউল আলী জসিম চৌধুরী, প্রকৌশলী কামালুর রহমান, প্রকৌশলী আজিজুর রহমান, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, শেখ মুজিবুর রহমান বাবুল ও এস জেড এইচ এম ট্রাস্টের ভারপ্রাপ্ত সচিব অধ্যাপক এ ওয়াই এম জাফর এবং বিভিন্ন শাখা কমিটির কর্মকর্তাগণ। বিজ্ঞপ্তি