জার্মানির ৩ সাংবাদিকের ওপর হামলা, গ্রেপ্তার ১১

27

উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গাক্যাম্পে গত বৃহস্পতিবার জার্মানির ৩ সাংবাদিকের ওপর হামলা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা করা হয়েছে। জার্মান সাংবাদিকদের সাথে থাকা আহত বাংলাদেশি মো. সিহাব উদ্দিন বাদি হয়ে ৪-৫শ অজ্ঞাতনামা রোহিঙ্গাকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন।
উল্লেখ্য, হামলার শিকার ব্যক্তিরা হলেন জার্মানির সংবাদিক ইয়োরিকো লিওবি (৪৪), এস্টিপেইন্স এ্যাপল (৪৯) ও গ্রার্ডার স্টেইনার (৬১) এবং তাদের বাংলাদেশি দোভাষী মো. সিহাব উদ্দিন (৪১) ও গাড়ির চালক নবীউল আলম (৩০) ও পুলিশ সদস্য জাকির হোসেন (৩৩)।
রোহিঙ্গারা বিদেশি সাংবাদিকদের ব্যবহৃত গাড়ি, ক্যামেরা ভাঙচুর করে এবং তাদের পাসপোর্ট ও সাথে থাকা মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত গিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, এ হামলার ঘটনায় কুতুপালং লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে ১১ জনকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া বিদেশি সাংবাদিকের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া ক্যামরা, পাসপোর্টসহ গুরুত্বপূর্ণ মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবুল খায়ের জানান, জার্মানির সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। এরপর বৃহস্পতিবার রাতব্যাপী পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে লম্বাশিয়া রোহিঙ্গাক্যাম্প থেকে ১১ রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলেন লম্বাশিয়াক্যাম্পের মো. আলীর ছেলে শাহ জাহান (২৫), আবু ছিদ্দিকের ছেলে মো. খলিল (৩০), আমির হোসেনের ছেলে নুর হাকিম (১৮), মুকুল আহমদের ছেলে জিয়াবুল হক (২৮), মৃত জহির আহমদের ছেলে মো. সিরাজ (৪০), আলী হোছেনের ছেলে জামাল হোছেন (৩৩), মৃত কলিম উল্লাহ’র ছেলে খাইরুল আমিন (২৮), জহির আহমদের ছেলে মো. ইদ্রিচ (২৮), ইমাম উল্লাহর ছেলে আবু তাহের (৪৫), কালু মিয়ার ছেলে ছৈয়দ আলম (৪০) ও মো. ফয়েজ উল্লাহর ছেলে মো. রফিক (২৩)। তাদেরকে গতকাল শুক্রবার কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। বর্তমান রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পরিবেশ শান্ত রয়েছে।
তিনি আরও জানান, বিদেশি সাংবাদিকরা বৃহস্পতিবার তাদের প্রয়োজনীয় কাজ শেষে ফিরে যাচ্ছিলেন। এ সময় ৮ ও ৯ বছরের দুই শিশুকে ময়লা কাপড় পড়া অবস্থায় দেখতে পান। তখন তারা ওই দুই শিশুসহ তাদের মাকে লম্বাশিয়া বাজারে নিয়ে নতুন কাপড় কিনে দেন। এরপর তাদেরকে গাড়িতে তুলে ক্যাম্পে পৌঁছে দেওয়ার সময় অন্য রোহিঙ্গারা চিৎকার শুরু করে এবং বিদেশি সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালায়। রোহিঙ্গারা মনে করেছিলেন, তাদেরকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
এ ঘটনার পর রোহিঙ্গাক্যাম্পে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে জানিয়ে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও পালংখালী ইউপি চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন বলেন, রোহিঙ্গারা যে কোন সময় গুজব ছড়িয়ে বড় ধরনের ঘটনা ঘটাতে পারে। তাই প্রশাসনকে সতর্ক থাকার আহবান জানাচ্ছি।