জাম্বুরি পার্কের রূপের কাহন

120

আধুনিক ‘জাম্বুরি পার্ক’। আগ্রাবাদ ১০তলা ভবনের সামনে সাড়ে আট একর জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন উন্মুক্ত এই উদ্যান। এতে ব্যয় হয়েছে সাড়ে ১৮ কোটি টাকা। এতদিন সরকারি এই জমি পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকায় মাদকসেবীদের আড্ডাস্থল ছিল। সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের উদ্যোগে অত্যন্ত দ্রুত গড়ে তোলা হয়েছে এটি। ঘুরে বেড়ানোর জন্য একটি অনন্য পার্ক এটি। রোপণ করা হয়েছে নানা প্রজাতির গাছ। পার্কের গাছগুলো বাড়ছে দিন দিন। এতে অনন্য রূপে পার্কটি মুখরিত করছে চারপাশ।
জানা গেছে, জাম্বুরি পার্ক মূলত শরীরচর্চা ও প্রাকৃতিক পরিবেশে বিশ্রাম বা সময় কাটানোর জন্য গড়ে তোলা হয়েছে। প্রকল্পটি নেওয়া হয় ২০১৫ সালে। স্থাপত্য অধিদপ্তরের নকশায় ৮.৫৫ একর জমির জমির ওপর রোপণ করা হয়েছে ৬৫ প্রজাতির ১০ হাজার গাছের চারা। এর মধ্যে আছে সোনালু, নাগেশ্বর, চাঁপা, রাধাচূড়া, বকুল, শিউলি, সাইকাস, টগর, জারুলসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। খোলা চত্বরে লাগানো হয়েছে বিভিন্ন জাতের সবুজ ঘাস। পার্কে বসার সুুযোগও রাখা হয়েছে। আর শুধু হাঁটার জন্য রাখা হয়েছে ৮ হাজার ফুট পথ। ৫০ হাজার বর্গফুট জলাধার ও দৃষ্টিনন্দন ফোয়ারা যে কারো নজর কাড়বেই। নিরাপত্তার জন্য বসানো হয়েছে ১৪টি ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা। জলাধারের পাশে রয়েছে দুটি পাম্প হাউস। বৃষ্টি ও জোয়ারের পানি থেকে সুরক্ষার জন্য পুরো পার্ক সড়ক থেকে তিন ফুট উঁচু করা হয়েছে। পানি নিষ্কাশনের জন্য রয়েছে অভ্যন্তরীণ মাস্টার ড্রেন। পার্কে প্রবেশের জন্য রয়েছে ছয়টি গেট। উত্তর পাশে দুটি, দক্ষিণ পাশে দুটি, পূর্ব পাশে ১০তলা ভবনের গেটের সামনে একটি, পশ্চিম পাশে আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালের সামনে একটি বড় গেট আছে। নাগরিকদের জন্য উত্তর-পূর্ব কোণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে রাখা হয়েছে আধুনিক শৌচাগার।
পার্কে প্রবেশে নির্দিষ্ট কিছু নিয়মকানুন বেঁধে দিয়েছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত অধিদপ্তর। যেমন ছুটির দিনসহ প্রতিদিন সকাল থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত খোলা থাকবে পার্ক। কিন্তু সেখানে খাবার নেওয়া যাবে না। জলাধারে গোসল করা যাবে না। গাছের ক্ষতি করা যাবে না।’
পার্কে বিনা মূল্যে প্রবেশের সুযোগ রেখেছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত অধিদপ্তর। তবে এখানকার সবচেয়ে সুন্দর মুহূর্ত সন্ধ্যার পর। আলো-আঁধারির ঝলকানি যে কারোর ভালো লাগবে।
যে কারণে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে সেখানে সেলফি তোলারও ধুম পড়ে। এলাকার বাসিন্দারা জানান, ‘জোয়ার-ভাটার মধ্যে বেঁচে থাকা এ পার্ক আমাদের জন্য স্বস্তির বড় জায়গা। পার্কের জন্য এ এলাকা আবারও আলোকিত হলো। আগামী কয়েক বছর সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচর্যা করা হলে নতুন পর্যটন স্পট হয়ে উঠতে পারে এটি।’ সূত্র: ইন্টারনেট