জামায়াত নেতার সেমিনার, তিন শিক্ষককে শোকজ

55

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধীনে পিএইচডি গবেষণায় নিয়োজিত ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও জামায়াত নেতা এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদকে নিয়মবহির্ভূতভাবে সেমিনার আয়োজন সুযোগ করে দেয়ার ঘটনায় তিন শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে। এছাড়া বিষয়টি তদন্তে দুই সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
গতকাল মঙ্গলবার বিকালে গণমাধ্যমে পাঠানো বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (তথ্য ও ফটোগ্রাফি) দিবাকর বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। এছাড়া বিষয়টির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (রুটিন দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারকে জড়িয়ে একটি অনলাইন পত্রিকা সংবাদ প্রকাশিত করার ঘটনাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও দূরভিসন্ধীমূলক বলে উল্লেখ্য করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
অভিযুক্ত তিন শিক্ষক হলেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ এনামুল হক, পিএইচডির সুপারভাইজার অধ্যাপক ড. এএফএম আমীনুল হক ও সেমিনার আয়োজন কমিটির আহবায়ক ড. মুহাম্মদ মমতাজ উদ্দীন। তাদের শোকজ করে আগামী তিন কার্য দিবসের মধ্যে এর জবাব দিতে বলা হয়েছে। অন্যদিকে, এ ঘটনা তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব¡ বিভাগের অধ্যাপক এসএম মনিরুল হাসানকে আহবায়ক এবং উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণা শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. দেলোয়ার হোসেনকে সদস্য সচিব করে দুই সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাঁদেরকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কেএম নুর আহমদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ২০ জুন বিভাগের সেমিনার কক্ষে গোপনীয়তার মাধ্যমে জামায়াতের সাবেক সাংসদ হামিদু রহমান আযাদের সেমিনার আয়োজন করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এর দু’দিন আগে ১৮ জুন তড়িঘড়ি করে নোটিশ দেয়া হয়। অথচ পিএইচডির সেমিনার ব্যাপক প্রচার করে আয়োজনের রেওয়াজ আছে। এছাড়া গত ১৩ ফেব্রæয়ারি পিএইচডি গবেষণার রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ শেষ হলেও বিশেষ সুবিধা দিয়ে জামায়াতের এই নেতাকে সেমিনার করার সুযোগ দেয়া হয় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে চারদিকে আলোচনা চলতে থাকে। জামায়াত নেতা আযাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে বিভিন্ন থানায়।
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাঠানো বিবৃতিতে উল্লেখ্য করা হয়, গত ৮ জুলাই দেশের কয়েকটি অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত ‘চবিতে বিশেষ ব্যবস্থায় সেমিনার করলেন জামায়াতের শীর্ষ নেতা’ এবং চবি উপাচার্য (রুটিন দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারকে জড়িয়ে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও দূরভিসন্ধিমূলক। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নির্বাহীকে নিয়ে যে মনগড়া এবং আপত্তিকর সংবাদ পরিবেশিত হয়েছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। সংবাদের একাংশে উল্লেখ করা হয়েছে ‘উক্ত গবেষকের সাথে প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার-এর পরিবারের সংগে সম্পর্ক থাকার কথা শোনা যাচ্ছে’।
এ প্রসঙ্গে পরিস্কার করে বলা যাচ্ছে যে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (রুটিন দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের সাথে উক্ত পিএইচডি গবেষকের পারিবারিক সম্পর্কতো দূরের কথা তার সাথে পরিচয়ও নেই। সুতরাং এ ধরনের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও দূরভিসন্ধিমূলক সংবাদ প্রচার করে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপপ্রয়াস থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট অনলাইন পোর্টালসহ সকলকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা যাচ্ছে।