জাপানের কিয়োটো অ্যানিমেশন স্টুডিওতে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় সন্দেহভাজন শিনজি আওবা তিনবছর ধরে একটি অ্যাপার্টমেন্টে একাই থাকতেন বলে তার এক প্রতিবেশী জানিয়েছেন। ‘অসামাজিক’ এ ব্যক্তি কারো সঙ্গে মিশতেন না এবং সারাক্ষণ ভিডিও গেম খেলতেন; স্টুডিওতে আগুন লাগার কয়েক দিন আগে তিনি ওই প্রতিবেশীর কলার ধরে হুমকি দিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আওবার বিরুদ্ধে শনিবার কিয়োটো পুলিশ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। বৃহস্পতিবার কিয়োটো অ্যানিমেশন স্টুডিওতে ভয়াবহ ওই অগ্নিকান্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনাকে দুই দশকের মধ্যে দেশটিতে হওয়া সবচেয়ে ভয়াবহ ‘ম্যাস কিলিং’ হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম এনএইচকে জানিয়েছে, ৪১ বছর বয়সী ওই সন্দেহভাজন বৃহস্পতিবার কিয়োটো অ্যানিমেশন স্টুডিওর প্রবেশপথের চারপাশে দাহ্য তরল ছড়িয়ে দেয়ার পর ভবনটিতে আগুন দিতে দিতে ‘তোমরা মরো’ বলে চিৎকার করেছিলেন। একই আগুনে আওবা নিজেও আহত হন; শঙ্কামুক্ত হলে, তাকে গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। টোকিওর উপকণ্ঠ ওমিয়ার একটি দোতলা অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের নিচতলার একটি কক্ষে আওবা একাই থাকতেন বলে তার পাশের বাসার এক প্রতিবেশী জানিয়েছেন। কিয়োটে অ্যানিমেশন স্টুডিও থেকে ওমিয়া প্রায় ৫০০ কিলোমিটার পূর্বে, জানিয়েছে রয়টার্স।
পুলিশ বলছে, কিয়োঅ্যানি নামে পরিচিত ওই স্টুডিও ‘তার উপন্যাসের কাহিনী চুরি করে নিজেদের বলে চালিয়ে দিচ্ছে’ এই ক্ষোভ থেকে আওবা সেখানে আগুন দিয়েছেন বলে তাদের জানিয়েছেন। আওবা ২০১২ সালে টোকিওর পূর্বাঞ্চলের একটি মুদি দোকানে চুরি করার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। মুক্তি পাওয়ার পর বছরতিনেক আগে তিনি ওমিয়াতে আসেন। ৪১ বছর বয়সী এ ব্যক্তিকে মানসিক অসুস্থতার চিকিৎসাও নিতে হয়েছে বলে জানিয়েছে এনএইচকে।
ওমিয়ার ওই ভবনে থাকা প্রতিবেশী আওবাকে ফ্যাকাশে চামড়া ও অবিন্যস্ত সাজপোশাকের সামান্য মোটা লোক হিসেবে বর্ণনা দিয়েছেন। ৪১ বছর বয়সী আওবা অসময়ে জেগে থাকতেন এবং সাধারণত কারো সঙ্গেই কথা বলতেন না, বলেছেন তিনি। ‘কখনোই আমি তাকে দিনের বেলায় বাইরে বের হতে দেখিনি, এমনকি মুদি দোকানে যেতেও না। সাধারণত, মধ্যরাতে তার বের হওয়ার শব্দ শুনতাম আমি,’ বলেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই প্রতিবেশী।