জলমগ্ন এলাকার খালগুলোর বাঁধ কেটে দেয়ার আহব্বান

46

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ঠ নিম্নচাপের কারণে চট্টগ্রাম নগরীতে গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়। পরদিন শুক্রবার এই বর্ষণ অব্যাহত ছিলো। ফলে নগরীর বেশ কিছু নিছু এলাকায় জলযটের সৃষ্টি হয়। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক আলহাজ্ব মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন গতকাল শুক্রবার বিকেলে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়াজনিত এই জনদুর্ভোগ প্রত্যক্ষ করে দ্রুত কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন ও প্রকৌশল বিভাগের সেবক ও কর্মীদের নিয়ে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় খাল নালা নর্দমায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা ঘাটের বিদ্যমান পরিস্থিতি সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। তার এই কার্যক্রম গত শুক্রবার রাত পর্যন্ত অব্যাহত ছিলো। নগরীর যে সমস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন সেগুলো হলো- নগরীর প্রবর্ত্তক মোড়, পাঁচলাইশ মোড়, মুরাদপুরস্থ মির্জাপুল এলাকা, বহদ্দারহাট, কাপাসগোলা, চকবাজার। পরিদর্শনকালে চসিক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন নগরীর প্রবর্ত্তক মোড় ব্রিজের নীচে পলিথিন ও ময়লা আবর্জনার স্তুপ দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেন। তিনি তৎক্ষনাত পরিচ্ছন্ন বিভাগের সেবকদের দিয়ে এসমস্ত ময়লা আবর্জনা পরিস্কার করে ও পানি চলাচল স্বাভাবিক করার ব্যবস্থা নেন। এরপর তিনি নগরীর মুরাদপুর এলাকায় পরিদর্শনে যান। সেখানে একটি নালার নিচে বালি স্তুপ ও ময়লা আবর্জনার কারণে পানি চলাচল বন্ধ হয়ে আছে দেখে তা কর্পোরেশনের কর্মীদের দিয়ে দ্রুত পরিস্কার করার ব্যবস্থা নেন। এসব কাজ তদারককালে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন নগরবাসীকে খাল, নালা, নর্দমায় ময়লা আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকতে বলেন। তিনি বলেন, এই শহর আপনার আমার সবার। এই শহরকে পরিচ্ছন্ন পরিবেশ বান্ধব রাখাতে জন্য আমাদের নাগরিক দায়িত্ব রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের উন্নয়ন ও জলাবদ্ধতা নিরসনে মেঘা প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। বর্তমানে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ৫ হাজার ৬ শত কোটি টাকার জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজ চলমান রয়েছে। ইতিমধ্যে একাজের বেশ অগ্রগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ফলে এই বৈরি আবহাওয়ায় টানা বর্ষণেও নগরীর কোন এলাকায় দীর্ঘ সময় ধরে জলজট ছিলনা। যে সেকল নিচু এলাকায় জলজট হয়েছে তা চাক্তাই খাল, মহেষখাল, হিজরাখালসহ বিভিন্ন খালে চলমান জলাবদ্ধতা কাজের বাঁধ থাকার ফলে হয়েছে। প্রশাসক নিজেই জলজটের এই সমস্যা উপলব্দি করে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্র্তৃপক্ষের জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের পরিচালক কর্ণেল মোহাম্মদ আলীকে জলমগ্ন এলাকা সংলগ্ন খালগুলোর বাঁধ কেটে দেয়ার আহব্বান জানান। যাতে দ্রুত পানি সরে যেতে পারে। এসময় প্রশাসকের একান্ত সচিব মো. আবুল হাশেম, চসিকের প্রকৌশল ও পরিচ্ছন্ন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ প্রশাসকের সাথে ছিলেন। এর আগে প্রশাসক গত শুক্রবার বিকেলে নগরীর দামপাড়াস্থ প্রকৌশলী বিভাগে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের স্থাপিত কন্ট্রোল রুম পরিদর্শনে যান। সার্বক্ষণিক স্থাপিত কন্ট্রোল রুমে বাংলাদেশ যুব রেডক্রিসেন্ট এর কর্মীগণ চসিকের কর্মীদের সাথে দুর্যোগ মোকাবেলা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলো।
এছাড়াও কর্পোরেশনের প্রশাসকের উদ্যোগে ঝুকিপূর্ণ এলাকা ও পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের সরে যাওয়ার জন্য মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়। তিনি পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের আশ্রয় কেন্দ্রে সরে যাওয়ার আহব্বানও জানান। সে সময়আশ্রয় কেন্দ্রে সম্ভাব্য আশ্রিতদের জন্য পর্যাপ্ত শুকনা খাবারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেণ।