ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ পাকিস্তানের সমালোচনা করে বলেছেন, জইশ-ই-মুহাম্মদের ঘাঁটিতে ভারতীয় হামলার পর পাকিস্তান কেন জঙ্গিদের হয়ে পাল্টা হামলা চালালো? ইমরান যদি সত্যিকার রাষ্ট্রনায়ক হয়ে থাকেন তাহলে মাসুদ আজহারকে ভারতীয় কর্তপক্ষের হাতে তুলে দিন। বুধবার ‘ভারতের বিশ্ব: মোদি সরকারের পররাষ্ট্রনীতি” শীর্ষক এক আলোচনায় দেওয়া বক্তব্যে তিনি একথা বলেছেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস এখবর জানিয়েছে।
গত দশ বছরের মধ্যে চতুর্থবারের মতো জাতিসংঘে মাসুদ আজহারকে সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত করার প্রস্তাব আনার পর চীনের বিরোধিতায় তা আটকে গেছে। মুম্বাই হামলায় সম্পৃক্ততার অভিযোগে ২০০৯ সালে মাসুদ আজহারকে সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত করার প্রস্তাব দেয় ভারত। ২০১৬ সালে পাঠানকোট বিমানঘাঁটিতে হামলার পর আবারও জাতিসংঘের ১২৬৭ নিষেধাজ্ঞা কমিটিতে তিন স্থায়ী সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে তাকে নিষিদ্ধ করবার প্রস্তাব দেয় ভারত। ২০১৭ সালেও তিন স্থায়ী সদস্য দেশ আবারও একই ধরনের প্রস্তাব আনে। প্রতিবারই নিষেধাজ্ঞা কমিটিতে ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করে ভারতের প্রস্তাব আটকে দেয় চীন।
সা¤প্রতিক উত্তেজনার প্রেক্ষিতে পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে সুষমা বলেছেন, আমরা সন্ত্রাস নিয়ে আলোচনা চাই না। আমরা পদক্ষেপ চাই। সন্ত্রাস ও আলোচনা একসঙ্গে চলতে পারে না। বালাকোটে ভারতীয় বিমান হামলার পর পাকিস্তানের পাল্টা পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, ভারত যখন নির্দিষ্টভাবে জইশ-ই-মুহাম্মদের ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে তখন জঙ্গিদের হয়ে কেন পাকিস্তান পাল্টা হামলা চালালো? পাকিস্তান শুধু যে জঙ্গিদের তাদের মাটিতে আশ্রয় দিচ্ছে তা না, তাদেরকে অর্থ দিচ্ছে এবং জঙ্গিবাদের শিকার হওয়া দেশ যখন পদক্ষেপ নিচ্ছে তখন দেশটি জঙ্গিদের হয়ে পাল্টা হামলা চালাচ্ছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে ইঙ্গিত করে সুষমা বলেন, ইমরান খান যদি এতো দয়ালু ও সত্যিকার রাষ্ট্রনায়ক হয়ে থাকেন তাহলে মাসুদ আজহারকে আমাদের হাতে তার তুলে দেওয়া উচিত। পাকিস্তান নিজেদের মাটিতে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিলে প্রতিবেশী হিসেবে তাদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক হতে পারে ভারতের। পুলওয়ামায় নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর জঙ্গি হামলার জেরে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি নিয়ন্ত্রণরেখা অতিক্রম করে কাশ্মিরের পাকিস্তান অংশে বিমান হামলা চালায় ভারতীয় বিমানবাহিনী। পরদিন দুটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করে ভারতীয় এক পাইলটকে আটক করে পাকিস্তান। দুই দিন পর অভিনন্দন বর্তমান নামের ওই ভারতীয় পাইলটকে মুক্তি দেয় পাকিস্তান।
এরপর দুই দেশের মধ্যকার উত্তেজনা কিছুটা থিতু হয়ে আসে।