চুক্তিহীন ব্রেক্সিট এড়াতে ছুটে চলেছেন মে

26

হয় সময়সীমা বাড়াতে হবে, নয়তো শুক্রবার কোনো চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিট কার্যকর হবে। যা এড়াতে ইউরোপের নেতাদের কাছে ধর্ণা দিচ্ছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে। বুধবার ব্রাসেলসে ইইউর জরুরি সম্মেলন শুরুর আগে মঙ্গলবার দুপুরে বার্লিনে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। এরপর সেখান থেকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁর সঙ্গে দেখা করতে প্যারিসে গিয়েছেন। চার দশকের সম্পর্কের অবসান ঘটিয়ে ১২ এপ্রিল ইউরোপের সঙ্গে বিচ্ছেদে যাচ্ছে ব্রিটেন। এটিই ব্রেক্সিট কার্যকরের এখন পর্যন্ত নির্ধারিত সময়সীমা। কিন্তু বিচ্ছেদের পরে ইউরোপের সঙ্গে সম্পর্ক কেমন হবে তা নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি ব্রিটেন। গত সপ্তাহে চারটি প্রস্তাব সংসদে তুলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে। কিন্তু একটিও পাস করাতে পারেননি তিনি। এমন অবস্থায় চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের পথই এখন খোলা ব্রিটেনের সামনে। কিন্তু সেই বিপর্যয় এড়াতে চান মে। যে কারণে শেষ মুহূর্তে ইউরোপের নেতাদের কাছে ধর্ণা দিচ্ছেন তিনি। উদ্দেশ্য ব্রেক্সিট কার্যকরের সময়সীমা ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো।
মঙ্গলবার দুপুরে বারোটা নাগাদ বার্লিনে আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মে। সেখানে দুজনই নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে ব্রেক্সিট কার্যকরের মাধ্যমে ইউরোপ থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাবার বিষয়টি যে গুরুত্বপূর্ণ, সে বিষয়ে একমত হয়েছেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে এমন বিবৃতি দিলেও বৈঠক শেষে মে কিংবা মার্কেল দুজনের একজনও সাংবাদিকদের কাছে এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। ব্রেক্সিট কার্যকরের প্রক্রিয়া নিয়ে বুধবার ব্রাসেলসে জরুরি এক সম্মেলনে বসছেন ইইউ’র সদস্যরা। সেখানেই মের আবেদন অনুযায়ী সময়সীমা বাড়ানো হবে কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
ব্রেক্সিট কার্যকর ১২ এপ্রিলের থেকে বাড়িয়ে ৩০ জুন করার জন্য মে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে আবেদন করবেন। ইইউ সেটি এক বছরের জন্যও বাড়াতে পারে বলে আভাস মিলছে।
তবে সমস্যা হলো ব্রেক্সিট কার্যকর ২২ মের পরে গেলে যুক্তরাজ্যকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচনে অংশ নিতে হবে, যা এড়াতে চান টেরিজা মে। এর মধ্যে ব্রিটেনের রাজনৈতিক দলগুলো আর নেতাদের নিজেদের মধ্যেও বিভিন্ন ইস্যুতে মতৈক্যে পৌঁছাতে হবে। যার মধ্যে প্রধান সমস্যা ‘আইরিশ ব্যাকস্টপ’ ইস্যুটি।
কীভাবে ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন হবে তা নিয়ে রাজনীতিবিদ আর দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধের জের ধরে চরম সঙ্কটে পড়েছেন টেরিজা মে। এই বিষয়ে মে নিজ দলের সদস্যদের কাছ থেকেও প্রয়োজনীয় সমর্থন পাচ্ছেন না। এমন অবস্থায় চুক্তি পাসের জন্য মে প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন। দলটির প্রধান জেরেমি কর্বিন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী এখনও ‘রেড লাইন’ অতিক্রম করেননি তাই তার সঙ্গে একটি সমঝোতায় পৌঁছানো যেতে পারে। তবে ‘কাস্টমস ইউনিয়ন’ প্রশ্নে নিজের অবস্থানে বড় ধরণের ছাড় দিতে হবে মেকে।