চীনের জাতীয় দিবসে সবচেয়ে সহিংস ছিলো হংকং : পুলিশ

22

চীনের জাতীয় দিবস উদ্যাপনের দিন মারাত্মক সহিংস হয়ে ওঠে হংকংয়ে চীনবিরোধী আন্দোলন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গুলিও চালাতে হয় পুলিশকে। হংকংয়ের পুলিশ প্রধানের দাবি, সা¤প্রতিক সময়ে এতটা সহিংস আন্দোলন হয়নি দেশটিতে। চীনের জাতীয় উদ্যাপনের দিনটিকে শোক দিবস হিসেবে পালন করছে হংকং-এর বাসিন্দারা। স্থানীয় সাংবাদিক ইলাইন ইউ বলেন, বেইজিং যখন উদ্যাপনে ব্যস্ত, তখন শোকাহত হংকং। হংকংয়ের বিক্ষোভকারীরা চীনের জাতীয় দিবসে শোক পালন করছে। ব্যানার নিয়ে তারা উইঘুর ও তিব্বতিদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছে। সেদিনই পুলিশের গুলিতে এক তরুণ আহত হয়। টানা চারমাস ধরে চলা চীনবিরোধী আন্দোলনে এটা পুলিশের প্রথম গুলি ছিলো।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৮ বছর বয়সী ওই তরুণের বুকে গুলি চালায় পুলিশ। সেদিন ছয় রাউন্ড তাজা গুলি চালানো হয়। মোট ১০৪ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় আর আটক করা হয় ১৮০ জনকে। পুলিশ প্রধান স্টিফেন লো বলেন, সহিংসতায় অন্তত ২৫ জন পুলিশ আহত হয়েছেন। বিক্ষোভকারীরা পেট্রলবোমাও নিক্ষেপ করে বলে দাবি করেছে পুলিশ। কর্মকর্তারা জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রথমে টিয়ার গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করা হয়। পরে অবস্থা বেগতিক দেখে ১৮ বছর বয়সী এক তরুণের কাঁধে গুলি করে পুলিশ। এছাড়া সতর্কতামূলকভাবেও কয়েক রাউন্ড গুলিও চালানো হয়। সরকারের দাবি, গুলিবিদ্ধ ওই তরুণের অবস্থা স্থিতিশীল। তবে তাকে গ্রেফতারের ব্যাথায় কাতরাচ্ছিলেন। বলছিলেন, আমার হাসপাতালে যাওয়া দরকার। ইতোমধ্যে এই ঘটনার সমালোচনা করেছে যুক্তরাজ্য।
স্টিফেন লো’র দাবি, গুলি চালানো ‘বৈধ ও দায়িত্বশীল’ আচরণ ছিলো। কারণ ওই পুলিশ ভেবেছিলেন তার এবং সহকর্মীদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে ওই তরুণের স্কুলের সামনেও শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করেছে শত শত মানুষ। অন্যদিকে আদালতের সামনে বিক্ষোভ করেছে ৯৬ জন শিক্ষার্থী। এক সময়কার ব্রিটিশ কলোনি হংকং এখন চীনের অংশ। ‘এক দেশ, দুই নীতি’র অধীনে কিছু মাত্রায় স্বায়ত্তশাসন ভোগ করছে হংকং।
অঞ্চলটির নিজস্ব বিচার ও আইন ব্যবস্থা রয়েছে, যা মূল চীনের চেয়ে ভিন্ন। গত ৯ জুন থেকে সেখানে কথিত অপরাধী প্রত্যর্পণ বিল বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হয়। আন্দোলনকারীদের আশঙ্কা, ওই বিল অনুমোদন করা হলে ভিন্নমতাবলম্বীদের চীনের কাছে প্রত্যর্পণের সুযোগ সৃষ্টি হবে। লাখো মানুষের উত্তাল গণবিক্ষোভের মুখে এক পর্যায়ে ওই বিলকে ‘মৃত’ বলে ঘোষণা দেন হংকংয়ের চীনপন্থী শাসক ক্যারি ল্যাম।