চীনা বন্দিশিবিরে উইঘুরদের মগজ ধোলাইয়ের দলিল ফাঁস

48

চীনে কয়েক লাখ উইঘুর মুসলিমকে গোপন বন্দিশিবিরে আটকে রেখে কিভাবে তাদের মগজ ধোলাই করা হচ্ছে তার কিছু দলিলপত্র স¤প্রতি ফাঁস হয়েছে। পশ্চিমাঞ্চলীয় শিনজিয়াং প্রদেশে এ ধরনের গোপন বন্দিশিবিরের কথা বেইজিং বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে।
চীনের দাবি, এগুলো আসলে কারিগরি প্রশিক্ষণ শিবির এবং মুসলিমরা স্বেচ্ছায় এখানে প্রশিক্ষণ নিতে গেছে। তবে অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা আইসিআইজে যেসব ফাঁস হওয়া গোপন দলিলপত্র হাতে পেয়েছে, তাতে উঠে এসেছে কিভাবে এই উইঘুর মুসলিমদের বন্দি করে মগজ ধোলাই এবং শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।সাংবাদিকদের এই দলে রয়েছে বিবিসিসহ ১৭টি সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিকরা। যুক্তরাজ্যে চীনের রাষ্ট্রদূত অবশ্য বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বন্দিশিবিরে উইঘুর মুসলিমদের ওপর মগজ ধোলাই ও নির্যাতনের খবর অস্বীকার করেছেন।
বেইজিং-এর দাবি, সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় গত তিন বছর ধরে এসব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানে মূলত কারিগরি প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এখন ফাঁস হওয়া দলিলপত্র থেকে পরিষ্কার এসব শিবিরের ভেতরে আসলে কী ঘটছে। বিবিসির কাছে যেসব দলিল এসেছে, সেগুলো মূলত কীভাবে এই বন্দিশিবির চালাতে হবে তার নির্দেশনা। শিবিরের কর্মকর্তাদের জন্য লেখা হয়েছে এসব নির্দেশাবলী।
শিনজিয়াং কমিউনিস্ট পার্টির ডেপুটি সেক্রেটারি ঝু হাইলুন ২০১৭ সালে নয় পৃষ্ঠার এই সরকারি দলিল পাঠিয়েছিলেন যারা এসব শিবির পরিচালনা করে তাদের কাছে। এসব নির্দেশনায় স্পষ্ট করে বলা হয়েছে যে, এই শিবিরগুলো অত্যন্ত সুরক্ষিত জেলখানার মতো চালাতে হবে। কেউ যাতে সেখান থেকে পালিয়ে যেতে না পারে সেটাও নিশ্চিত করতে হবে। সরকারের এসব নির্দেশনার মধ্যে ছিল : কখনোই পালানোর সুযোগ দিও না।
শৃঙ্খলা এবং শাস্তি বাড়াতে থাকো। কেউ আচরণবিধি ভঙ্গ করলে তাকে কঠোর শাস্তি দাও। স্বীকারোক্তি দিতে ও অনুতপ্ত হতে উৎসাহিত করো। মান্দারিন ভাষা শিক্ষাকে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দাও। পুরোপুরি বদলে যাওয়ার ব্যাপারে তাদেরকে অনুপ্রাণিত করো। পুরো ভিডিও নজরদারি চালাও, কোন জায়গা যেন বাদ না থাকে। এসব দলিলে দেখা গেছে বন্দি উইঘুরদের কিভাবে ভয়াবহ নজরদারির মধ্যে রাখা হচ্ছে।