চীনা কোম্পানির ২৫ কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

109

মিরসরাইয়ে সাবেক সেনা সদস্যের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় চীনা কোম্পানির ২৫ কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরীর মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল এলাকায় বঙ্গোপসাগরের মোহনা থেকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা প্রহরী সাবেক সেনা সদস্য ল্যান্স কর্পোরাল নান্নু হোসেন মিয়ার লাশ গত রবিবার উদ্ধার করা হয়।
ওইদিন গভীর রাতে ওয়াহিদ কন্সট্রাকশন লিমিটেডের মিরসরাই ইকোনোমিক জোনের ভূমি উন্নয়ন প্রকল্পের প্রজেক্ট ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে জোরারগঞ্জ থানায় এ মামলা করেন।
মামলায় ইকোনমিক জোনের মেরিন ড্রাইভ সড়ক নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান চায়না হার্বার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির এক্সকেভেটর অপারেটরসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এদিকে গতকাল সোমবার সকালে র‌্যাব-৭ এর একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ওয়াহিদ কন্সট্রাকশন লিমিটেড মিরসরাই ইকোনোমিক জোনে বেপজার ভূমি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজে নিয়োজিত। মাটি ভরাটের কাজের জন্য সমুদ্রে ড্রেজার স্থাপনে বামনসুন্দর খাল দিয়ে ইঞ্জিন বোটের সাহায্যে ওয়াহিদ কন্সট্রাকশনের লোকজন কোম্পানির সাইট অফিস থেকে ড্রেজার পর্যন্ত যাতায়াত করতেন। গত ১৪ জুন বিকাল ৫ টায় কোম্পানির বোট অপারেটর ফারুক হোসেন বোট নিয়ে বামনসুন্দর খালের মুখে ঢোকামাত্র চায়না হার্বার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির লোকজন হামলা চালালে বোট চালক প্রাণভয়ে চলে যাওয়ার পর চায়না হার্বারের লোকজন বোটটি তাদের সাইট অফিসে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে জোরারগঞ্জ শিল্পজোন পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আবুল বাশার, কোম্পানির প্রকল্প পরিচালক মেজর (অব.) ইঞ্জিনিয়ার রেজাউল করিম, এডভাইজার আরিফ মোস্তফাকে বিষয়টি জানালে আরিফ মোস্তফা বিষয়টি মেরিন ড্রাইভ প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক জুলফিকার তারেককে জানালে তারা আটককৃত ইঞ্জিন বোটটি নিয়ে আসতে বলেন। কোম্পানির ৫ জন বোটটি নিয়ে আসতে রাত ৯ টার দিকে চায়না হার্বারের সাইট অফিস এলাকায় গেলে চায়না হার্বারের লোকজন বোটটি ফেরত না দিয়ে হামলা চালায়। এ সময় যে যেভাবে সম্ভব ফিরে আসলেও নান্নু মিয়া ফিরেননি। পরে ফায়ার সার্ভিসের লোকজনও তার সন্ধান পাননি। রবিবার সকাল ১০ টায় জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা নান্নুর লাশ সমুদ্র থেকে উদ্ধার করেন। লাশের সারা শরীরে জখমের চিহ্ন রয়েছে।
নিহত নান্নুর স্ত্রী সুলতানা মাফিয়া মনিরা বলেন, আমার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমি ২ ছেলে ও ১ মেয়েকে নিয়ে কি করে বাঁচবো। আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই।
মিরসরাই সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার শামসুদ্দীন সালেহ আহম্মদ চৌধুরী বলেন, ওয়াহিদ কন্সট্রাকশনের পক্ষ থেকে রবিবার রাতে জোরারগঞ্জ থানায় মামলা করা হয়েছে। হামলায় জড়িতরা সবাই চীনা নাগরিক বলে ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশনস লিমিটেডের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে, কোন আসামি আটক নেই।