চিটাগাং চেম্বার জার্মান বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের মতবিনিময়

52

ওএভি জার্মান এশিয়া-প্যাসিফিক বিজনেস এসোসিয়েশনের ১৮ সদস্যবিশিষ্ট বাণিজ্য প্রতিনিধিদল গতকাল ১১ সেপ্টেম্বর ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারস্থ বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি নেতৃবৃন্দের সাথে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্কিত এক মতবিনিময় সভায় মিলিত হন। এ সময় চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম, সিনিয়র সহ-সভাপতি ওমর হাজ্জাজ, প্রতিনিধি দলনেতা পিটার ক্লাসেন, জার্মান দূতাবাসের উপ-প্রধান বুর্খার্ড ডুকোফ্রে, জার্মান সরকারের জ্বালানি ও অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিভাগীয় উপ-প্রধান আরণে কূপার, চেম্বার পরিচালকবৃন্দ এস. এম. আবু তৈয়ব, অঞ্জন শেখর দাশ, মো. শাহরিয়ার জাহান ও নাজমুল করিম চৌধুরী শারুন, জার্মানির অনারারি কনসাল শাকির ইস্পাহানি, ইতালীর অনারারি কনস্যুল মীর্জা সালমান ইস্পাহানি, লুব-রেফ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ইউসুফ, চিটাগাং চেম্বারের প্রাক্তন পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, উইম্যান চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবিদা মোস্তফা বক্তব্য রাখেন। এ সময় চেম্বার পরিচালকবৃন্দ সৈয়দ জামাল আহমেদ, এ. কে. এম. আক্তার হোসেন, মো. অহীদ সিরাজ চৌধুরী (স্বপন), হাসনাত মো. আবু ওবাইদা, মো. আবদুল মান্নান সোহেল, তাজমীম মোস্তফা চৌধুরী, জার্মান দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ, প্রতিনিধিদলের সদস্যগণ ও বিভিন্ন সেক্টর নেতৃবৃন্দ সভায় অংশগ্রহণ করেন।
চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, জার্মানি বাংলাদেশের রপ্তানি পোশাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম গন্তব্যস্থল এবং অন্যতম উন্নয়ন অংশীদার। জার্মানির সহযাগিতা আমাদের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আমাদের নবায়নযোগ্য জ্বালানি, সুশাসন, পরিবেশ উন্নয়ন টেক্সটাইল খাতে মানোন্নয়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কুফল মোকাবেলায় তাঁদের সমর্থন অব্যাহত রয়েছে। তিনি প্রতি টন ৬০০ ডলারের কাঁচা পাটে মূল্য সংযোজনের মাধ্যমে ১০ গুণ বেশি মূল্যের পণ্য তৈরি করা সম্ভব উল্লেখ করে পলিয়েস্টার উলের সাথে সংমিশ্রণ ঘটিয়ে পাটের নতুন পণ্য উৎপাদন, তৈরি পোশাক খাতে ৫০ বিলিয়ন রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, টেক্সটাইল খাতে স্পিনিং এবং উইভিং এ বিনিয়োগ করা, ব্যাংকিং ও ফাইন্যান্সে নীতি সহায়তা প্রদান, পর্যটন খাতে আন্তর্জাতিক মানের হোটেল ও রিসোর্ট স্থাপন এবং ফার্নিচার রপ্তানি খাতে আধুনিক প্রযুক্তিসহ বিনিয়োগের অনুরোধ জানান। চেম্বার সভাপতি জার্মান বাণিজ্য প্রতিনিধিদলকে মিরসরাই ইকনোমিক জোনে ওয়ান স্টপ সার্ভিস কাজে লাগিয়ে শিল্প স্থাপনের আহবান জানান।
চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি ওমর হাজ্জাজ বলেন, জার্মান এশিয়া প্যাসিফিক বিজনেস এসোসিয়েশন’র এই সফরের মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে এবং সম্ভাব্য বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হবে। উভয় দেশের অত্যন্ত গভীর বন্ধুত্বের সম্পর্ক দ্বিপাক্ষিক স্বার্থের ভিত্তিতে আগামীতে আরো গভীর হবে বলে তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
প্রতিনিধি দলনেতা পিটার ক্লাসেন বলেন, বাংলাদেশের সাথে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়ন ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি এই সফরের মূল লক্ষ্য। চট্টগ্রাম বন্দরের কারণে এই অঞ্চলের ব্যবসায়িক গুরুত্ব অত্যধিক। বন্দরের চলমান উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক অঞ্চলের বাস্তবায়ন বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করছে। বাংলাদেশের মানবসম্পদ এদেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ। শিল্পের ক্ষেত্রে বিশেষ করে হস্তশিল্পের ক্ষেত্রে এদেশের শ্রমিকদের কাজ অত্যন্ত চমৎকার। এই সম্পদকে কাজে লাগানোর মাধ্যমে বাংলাদেশ আরো এগিয়ে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ অঞ্চলে অনেক বৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি ক্রমবর্ধমান উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে জল পথ ও সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার আহবান জানান।
জার্মান দূতাবাসের উপ-প্রধান বুর্খার্ড ডুকোফ্রে বলেন, স্বাধীনতার পর থেকেই জার্মানি বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে কাজ করছে। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নত দেশের দিকে অগ্রসর হচ্ছে যেখানে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে এবং পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে খাপ খাওয়ানোর লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নীতি নির্ধারণ করতে হবে। জার্মানি এক্ষেত্রে সব সময় সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে বলে তিনি জানান।
জার্মান সরকারের জ্বালানি ও অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিভাগীয় উপ-প্রধান আরণে কূপার বলেন, জার্মানি ও বাংলাদেশী কোম্পানিগুলোর মধ্যে যৌথ বিনিয়োগে শিল্প স্থাপনের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। জার্মানির অনারারি কনসাল শাকির ইস্পাহানি চট্টগ্রামে শিল্প স্থাপনের জন্য প্রতিনিধিদলের প্রতি আহবান জানান। আলোচনা সভার পূর্বে প্রতিনিধিগণ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের পারমানেন্ট এক্সিবিশন হল পরিদর্শন করেন। খবর বিজ্ঞপ্তির