চামড়া নিয়ে কারসাজিতে জড়িতদের শাস্তি দাবি

27

‘কাঁচা চামড়ার প্রকৃত মূল্য প্রাপ্তিতে বাধা সৃষ্টি, দেশীয় চামড়া শিল্পকে গুটিকয়েক ট্যানারি মালিকদের নিয়ন্ত্রণে নেবার ধারাবাহিক ষডযন্ত্র, স্থানীয় প্রশাসনকে নীরব রাখার কৌশলের কারণে চামড়াশিল্পে নজিবিহীন ধস নেমেছে। সরকার ট্যানারি মালিকদের বিপুল পরিমাণ ঋণ দিলেও তারা আড়তদারদের কোনো অর্থ প্রদান করেনি। বিষয়টি সাজানো গেম ছাড়া কিছু নয়। ফলে বিপুল পরিমাণ কাঁচা চামড়া অবিক্রিত থেকে গেছে, অনেকেই দাম না পেয়ে রাস্তায় ও ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছে। অন্যদিকে বেসরকারি এতিমখানা ও মাদ্রাসাগুলির আয়ের একটি বড় অংশ চামড়া সংগ্রহ ও বিক্রি। ট্যানারি মালিক ও আড়তদারদের এ চক্রান্তের কারণে গরীব, মিসকিন ও এতিমের হক ধ্বংসের পাশাপাশি সম্ভাবনাময় চামড়া শিল্প মারাত্মক হুমকির মুখে পড়তে যাচ্ছে। তাই চামড়ার কারসাজিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রামের নেতৃবৃন্দ।
কোরবানিতে চামড়া নিয়ে সংকটে সৃষ্ট জটিলতায় গতকাল শনিবার এক জরুরি সভায় উপরোক্ত অভিমত ব্যক্ত করা হয়। ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, দক্ষিণ জেলা সভাপতি আবদুল মান্নান, মহানগর যুগ্ম সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম, চান্দগাঁও থানা সভাপতি মো. জানে আলম, পাঁচলাইশের যুগ্ম সম্পাদক সেলিম জাহাঙ্গীর, চান্দগাঁও সহ-সভাপতি সেলিম সাজ্জাদ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, স্থানীয় প্রশাসন, প্রাণিসম্পদ অফিস ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সমন্বিত উদ্যোগে দেশীয় গবাদি পশু দিয়ে কোরবানি নিশ্চিত করতে সফল হলেও চামড়ার প্রকৃত মূল্য নিশ্চিতে স্থানীয় প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষ নীরব ছিলেন। তাদের নীরবতার সুযোগে ব্যবসায়ীরা সাধারণ জনগণকে চামড়ার প্রকৃত মূল্য দেয়নি।
অন্যদিকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো চামড়া ক্রয়ের জন্য বিপুল পরিমাণ ঋণ প্রদান করলেও গার্মেন্টসসহ অন্যান্য ব্যবসায়ীদের ন্যায় চামড়া ব্যবসায়ীরাও পুরো টাকা লুটপাটের উদ্দেশ্যে চামড়া ক্রয়ে বিনিয়োগ না করে দেশে বিদেশে গাড়ি, বাড়ি ও ভোগ-বিলাসে খরচ করেন। আর সরকার যখন কাঁচা চামড়া রপ্তানির ঘোষণা দিলেন তারা তার বিরোধিতা করে এ প্রক্রিয়া বন্ধ করতে নানা নীলনকশা প্রণয়নে ব্যস্ত। তাই গুটিকয়েট সিন্ডিকেটের হাত থেকে চামড়াশিল্পকে রক্ষা করতে না পারলে এ ধরনের বিপর্যয় ঠেকানো সম্ভব হবে না। অন্যদিকে ভোক্তাদের ছাড়া ব্যবসায়িক নীতি নির্ধারণে সরকার ও ব্যবসায়ীদের দ্বিপাক্ষিক আলোচনা দেনদরবারের ফয়সালা ছাড়া কিছু নয় এবং এ ধরনের দ্বিপাক্ষিক আলোচনা বন্ধ করে সকল নীতি প্রণয়নে ভোক্তাদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত না হলে অপেক্ষাকৃত কম শক্তিশালী গোষ্ঠি সব সময় ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আর সরকারের লক্ষ্য থাকা উচিত কম শক্তিশালীদের হাতকে সহযোগিতা করা। কিন্তু বর্তমান প্রচলিত বাণিজ্যনীতিতে মুষ্টিমেয়কেই সবসময় সুবিধা দেয়া হয়, যার কারণে দেশে ন্যায্য ব্যবসার পরিবেশ বারংবার প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছে। বিজ্ঞপ্তি