চাঁদের বুকে গাছের চারা গজিয়েছে চীন

50

চীনের মহাকাশ সংস্থা বলেছে, চাঁদের বুকে তাদের পাঠানো যানে একটি পাত্রে বোনা তুলোর বীজ থেকে চারা গজিয়েছে। চাঁদের যে উল্টো পিঠ- যা পৃথিবী থেকে দেখা যায় না, সেখানেই রয়েছে চীনা যন্ত্রযান চ্যাং’অ – ৪ থেকে পাঠানো এক ছবিতে দেখা গেছে এ দৃশ্য।
চীনের মহাকাশ সংস্থা এ খবর দিয়েছে। মনে করা হচ্ছে, দীর্ঘমেয়াদি মহাকাশ অভিযানের প্রেক্ষাপটে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। গত ৩রা জানুয়ারি চাঁদে অবতরণ করে চ্যাং’অ ৪ নামের চন্দ্রযান। চাঁদের উল্টো পিঠে এটাই প্রথম কোন মহাকাশযানের অবতরণ।
এই যানে ছিল চাঁদের ভূতাত্ত্বিক গঠন বিশ্লেষণ করার যন্ত্রপাতি। এ ছাড়া ছিল মাটি, তুলা এবং আলুর বীজ, ফ্রুট ফ্লাই নামে এক ধরনের মাছির ডিম, এবং খামি বা ইস্ট নামের ছত্রাক – যা দিয়ে পাউরুটি তৈরি হয়।
তুলোবীজ থেকে গজানো গাছের চারা রাখা হয়েছে চন্দ্রযানের ভেতর একটি বন্ধ কনটেইনারে। এখানে একটা বায়োস্ফিয়ার তৈরি করা হবে- যার মানে এমন এক কৃত্রিম পরিবেশ যেখানে একটি গাছ নিজেই নিজের খাদ্য গ্রহণ করে বেঁচে থাকতে পারবে। এর আগে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে গাছ গজানো হয়েছে। কিন্তু চাঁদের বুকে থাকা মহাকাশযানে কখনো করা হয়নি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চাঁদের বুকে তাপমাত্রা অত্যন্ত পরিবর্তনশীল- কখনো চরম ঠান্ডা কখনো তীব্র গরম। কখনো তাপমাত্রা নেমে যায় শূন্যের নিচে ১৭৩ ডিগ্রি পর্যন্ত, আবার কখনো তা উঠে যেতে পারে ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও ওপরে।
এই পরিবেশে একটা আবদ্ধ জায়গাতেও গাছপালা গজানোর মতো স্বাভাবিক তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, এবং মাটির পুষ্টিগুণ ধরে রাখা অত্যন্ত কঠিন কাজ।
চাঁদের বুকে গাছের চারা গজানোর বিষয়টা দীর্ঘমেয়াদি মহাকাশ অভিযান- যেমন মঙ্গলগ্রহে অভিযানের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ মঙ্গলগ্রহে যেতে সময় লাগবে প্রায় আড়াই বছর।
চাঁদে যদি গাছপালা গজানো সম্ভব হয় তাহলে, নভোচারীরা হয়তো সেখানে তাদের নিজেদের খাদ্য নিজেরাই উৎপন্ন করতে পারবেন। তার রসদপত্র সংগ্রহের জন্য পৃথিবীতে ফিরে আসতে হবে না।
জৈব পদার্থ নিয়ে এসব পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফলে কি চাঁদ দূষিত হয়ে পড়বে? বিজ্ঞানীরা বলছেন, তেমন সম্ভাবনা কম। তা ছাড়া মনে করিয়ে দেয়া দরকার যে এ্যাপোলোর নভোচারীদের ফেলে আসা মলমূত্র ভর্তি পাত্র এখনও চাঁদের বুকে রয়ে গেছে।