চলতি মাসে খুলে দেয়া হচ্ছে পটিয়ায় বাইপাস সড়ক

69

পটিয়ায় নির্মিতব্য বাইপাস সড়ক খুলে দেয়া হচ্ছে এ মাসেই। সড়কটি পুরোপুরি খুলে দেয়া হলে দক্ষিণ চট্টগ্রাম, বান্দরবান ও কক্সবাজারের যাত্রীরা সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন। ইতোমধ্যে ৯০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হওয়ায় এ সড়ক দিয়ে হালকা যানবাহন যাতায়াতের সুযোগ পাচ্ছে। এ কারণে পটিয়া পৌরসভার প্রধান সড়কে যানবাহনের চাপ কমায় কমেছে যানজট আর যাত্রীদের ভোগান্তি।
পটিয়া আসনের এমপি সামশুল হক চৌধুরী জানিয়েছেন, ফিনিশিংয়ের সামান্য কাজ বাকী আছে এবং তা সম্পন্ন করতে দিনরাত কাজ চলছে। এ মাসের শেষের দিকে বাইপাস আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। এরপর এর সুফল পটিয়াবাসীসহ পুরো দক্ষিণাঞ্চলের লোকজন পাবে। সে লক্ষে কাজ চলছে। এখন শেষ মুহূর্তের ফিনিশিংয়ের কাজ চলছে।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১ জুন সওজ চট্টগ্রাম বিভাগীয় দফতরে পটিয়া বাইপাস সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের দাখিলকৃত দরপত্র খোলা হয়। ঢাকা র‌্যাব আরসি এন্ড রিলেয়াভেল বিন্ডার্স নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্টান সড়ক নিমৃাণের কার্যাদেশ পায়। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সড়ক ও যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আনুষ্ঠানিকভাবে এ সড়কের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন।
জানা যায়, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়া অংশে নির্মিতব্য বাইপাস সড়ক নির্মাণে প্রকল্প ব্যয় বাড়ানো হয়। বাইপাস নির্মাণে সৃষ্ট জটিলতার বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে গত বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি পটিয়ায় আসেন সড়ক ও সেতু মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এরপর নতুন করে ভূমি অধিগ্রহণ করে পুরোদমে কাজ চালানো হয়। এর আগে ২০০৭ সালে গৃহিত পটিয়ার মনসা থেকে দোহাজারীর সাঙ্গু সেতু পর্যন্ত মহাসড়কের ১৫২টি বাক সরলীকরণ ও বাইপাস সড়ক নির্মাণে প্রকল্পটি নেয়া হয়। সে সময় মাটির অভাব, হিন্দুদের বাড়িঘর আর মন্দিরের কারণে বাধা, বিদ্যুৎ, গ্যাস সংযোগ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অপসারণ না করায় বাইপাসসহ সড়কের সরলীকরণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় নি। এ কারণে সে সময় কাজ শুরু করেও মাঝপথে ঠিকাদার কোম্পানি আইটিসিএল চলে যায়। এদিকে পটিয়া পৌর এলাকায় যানবাহনের চাপে সৃষ্ট যানজট নৈমত্যিক রুপ ধারণ করে। এ অবস্থায় পটিয়া আসনের এমপি সামশুল হক চৌধুরীর চেষ্টায় প্রকল্পটি কাটছাট করে শুধুমাত্র পটিয়া বাইপাস প্রকল্পটি হাতে নেয় সরকার। সড়কটি বাস্তবায়ন সম্পন্ন হলে পটিয়া পৌর এলাকায় যানজট কমার পাশাপশি শহরের পরিধি বৃদ্ধি পাবে এবং বক্সবাজার ও বান্দরবানের যাত্রী আর পর্যটকরা দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাবে।
সামশুল হক চৌধুরী বলেন, অতীতে মাটি প্রাপ্তির জটিলতায় বাইপাস বাস্তবায়ন না করে চলে যায় ঠিকাদার কোম্পানি। এর ফলে দীর্ঘদিনের সমস্যা পটিয়া শহরে যানজটের সুরাহা করা সম্ভব হচ্ছিল না। এ কারণে বাইপাসটি বাস্তবায়নের জন্য নতুন করে উদ্যোগ এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোতে তদবির করে প্রকল্পটি আবারও পাস করানো হয়। কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়নে এসে ঠিকাদারের পক্ষ থেকে মাটির জন্য সমস্যার বিষয়টি নতুন করে দেখা দেয়। এ কারণে তিনি শ্রীমাই খাল পূর্বের সঠিক স্থান ভূমি কর্মকর্তার মাধ্যমে চিহিৃত করা হয়। এরপর ঠিকাদারদের কাছে তা হস্তান্তর করা হয় মাটি সংগ্রহের জন্য। এ কারণে বাইপাস তৈরি সহজ হয়েছে। অন্যদিকে শ্রিমাই খালটি পুনরায় তার স্বরূপ ফিরে পেয়েছে।
দোহাজারী সড়ক ও জনপদ বিভাগের পটিয়া উপবিভাগীয় প্রকৌশলী শাখাওয়াত হোসেন জানান, এ সড়কে ৫ কিলোমিটারের মধ্যে প্রায় দুই কিলোমিটার পুরোপুরি প্রস্তুত। অবশিষ্ট ২ কিলোমিটারের কাজ শেষ পর্যায়ে। পটিয়া বাইপাস সড়কের কাজ ইতোমধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এ সড়ক দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে গাড়ি চলাচল চালু করা হয়েছে।