চবিতে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের সিদ্ধান্ত বাতিল

14

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) একটি ভবন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য ব্যবহারের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে কর্তৃপক্ষ। নির্মাণাধীন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলটি কোয়ারেন্টিনের জন্য নির্ধারণ হয়েছে এ খবরে শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারিসহ স্থানীয় মহল থেকে আপত্তি আসতে শুরু করে। সর্বশেষ গতকাল বুধবার উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারকে চিঠি দিয়ে সিদ্ধান্তটি বাতিল ও পুনঃবিবেচনার দাবি জানিয়েছিল শিক্ষক সমিতি। পরে ক্যাম্পাসে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের সিদ্ধান্ত বাতিল করে জেলা প্রশাসনকে জানিয়ে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে উদ্বেগ জানিয়ে বলা হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এবং যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এর সা¤প্রতিক কোয়ারিন্টিন বিষয়ক নীতিমালায় বলা হয়, কোয়রান্টিনের জন্য নির্ধারিত এলাকা হতে হবে জনবসতি থেকে দূরে এবং সুনির্দিষ্ট একটি দূরত্ব এক্ষেত্রে বজায় রাখতে হবে এবং আবাসস্থলে প্রতি রুমের সাথে সংযুক্ত শৌচাগার বা টয়লেট থাকতে হবে। কিন্তু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই আবাসিক হলের খুব কম দূরত্বের মধ্যেই শিক্ষক ও কর্মচারিদের বসতি রয়েছে। হলের রুমগুলোতে সংযুক্ত টয়লেট নেই, যা এর নীতিমালার ব্যাতিক্রম। এছাড়া নীতিমালা অনুযায়ী ইউভি (আল্ট্রাভায়োলেট রে) ও হট রুম সমৃদ্ধ নিয়মিত জীবাণুমুক্তকরণ সুবিধা সমৃদ্ধ কোয়ারেন্টিন সেন্টার থাকতে হয়। এরকম সুবিধা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়সেফটি লেভেল -২+ (জিবনিরাপত্তা স্কেল ২ এর অধিক) এবং বর্জ্য অপসারণ ব্যবস্থাপনা নেই। সেই জায়াগায় আমাদের ক্যাম্পাসে কোয়ারেন্টিন সেন্টার করার সিদ্ধান্ত নেয়াটা অত্যধিক ঝুঁকির। তাই ৩০ হাজার ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মচারিদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার কথা চিন্তা করে এই সিদ্ধান্তটি বাতিল ও পুনঃবিবেচনার জোর দাবি জানানো হয়েছে। এছাড়া গত মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকায় বসবাসরত শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারিসহ স্থানীয়রাও প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়েছিল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বলেন, ‘শিক্ষক সমিতি স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় ক্যাম্পাসে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন করতে আপত্তি জানিয়েছে। আমি সরকারের উচ্চ পর্যায়ে তা অবহিত করেছি। যেহেতু শিক্ষকরা চাচ্ছেন না, তাই নির্মাণাধীন ওই আবাসকি হলটিতে আর প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন করা হচ্ছে না। গত মঙ্গলবারও শিক্ষকদের মতামত নিয়েই আমরা রাজি হয়েছিলাম। এটি আমার একার সিদ্ধান্ত ছিল না।’
এর আগে গত মঙ্গলবার সকালে হাটাহাজারী উপজেলা প্রশাসনের একটি প্রতিনিধি দল প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি ভবন পরিদর্শন করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলটি প্রয়োজন সাপেক্ষে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য নির্ধারণ করকেত চায় জেলা প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও শর্ত সাপেক্ষে এতে সম্মতি দিয়েছিল। তবে হলটির অবস্থান শিক্ষক ও কর্মকর্তা, কর্মচারিদের বাসস্থানের মাত্র কয়েক গজ দূরে হওয়ায় স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় আপত্তি আসতে শুরু করে।