চন্দ্রঘোনায় আবাসিক হোটেলের আড়ালে পতিতা ব্যবসা

228

রাঙ্গুনিয়ার চন্দ্রঘোনা লিচুবাগানে আবাসিক হোটেল ব্যবসার নামে কয়েকটি বোর্ডিংয়ে মিনি পতিতালয় খুলে দীর্ঘদিন ধরে অসামাজিক কার্যকলাপ চালাচ্ছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল। আবাসিক হোটেল ব্যবসার নামে চন্দ্রঘোনা লিচুবাগান ও দোভাষী বাজার এলাকার কয়েকটি বোর্ডিংয়ে মিনি পতিতাালয় খুলে দীর্ঘদিন ধরে অসামাজিক কার্যকলাপ চালিয়ে আসলেও পুলিশ স্থানীয় প্রশাসন কুম্ভকর্ণের ঘুমে মগ্ন রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ব্যবসায়ি ও স্থানীয়রা। গত ১৩ জানুয়ারি রাত ৯টার দিকে স্থানীয় আলেম সমাজ ও সচেতন মহল জোটবদ্ধ হয়ে ভাই ভাই বোর্ডিং নামে একটি আবাসিক হোটেলে অভিযান চালায়। অভিযানে উত্তেজিত জনতা তিন পতিতাকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। এ সময় উত্তেজিত জনতা হেটেলের বিভিন্ন কক্ষ থেকে আসবাপত্র যৌন উত্তেজক বড়ি ও মাদকদ্রব্য জব্দ করে পুড়িয়ে দেন। জানা যায়, স্থানীয় ইউনুচের মালিকানাধীন ভাই ভাই বোর্ডিংয়ে দীর্ঘদিন ধরে অসামাজিক কর্মকান্ড চালিয়ে আসছিল। ইতিপূর্বেও বেশ কয়েকবার স্থানীয় চন্দ্রঘোনা ইউপি চেয়ারম্যান ও লিচুবাগান ব্যবসায়ি সমিতির নেতারা হাতেনাতে ধরে মুচলেখা নিয়েছিল এই হোটেলের মালিকের কাছ থেকে। কিন্তু মুচলেখা নেওয়ার ৪ মাসের মধ্যে অদৃশ্য ক্ষমতার জোরে বোর্ডিংটিতে অবৈধ কর্মকান্ড পুরাধমে শুরু হয়। লিচুবাগান মসজিদ সংলগ্ন অভিযুক্ত বোর্ডিংটিতে রাতদিন সমানতালে অবৈধ এসব কর্মকান্ড চললেও যেন দেখার কেউ নেই। প্রকাশ্যে এধরণের কর্মকান্ডে স্থানীয় মুসল্লি ও আলেমদের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। ক্ষোভের বহিপ্রকাশে রবিবার রাতে বোর্র্ডিংটি ঘিরে রাখে স্থানীয় জনতা। পরে ভেতরে গিয়ে তিন পতিতাকে হাতেনাতে ধরে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এদিকে হোটেলটি স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে ও সিলগালা সহ অবৈধ কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে স্থানীয় সচেতন জনতা। গত ১৪ জানুয়ারি বিকালে চন্দ্রঘোনা লিচুবাগানের এই হোটেলের সামনে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় অংশ নেন কয়েক হাজার বিক্ষুব্দ জনতা। প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক জালাল উদ্দিন জল, লিচুবাগান ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি হারুন সওদাগর, সাধারণ সম্পাদক লোকমানুল হক তালুকদার, ক্রীড়া সম্পাদক মো. শাহেদ, ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হক, গাজী মো. এনাম, উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হাবিব, মাওলানা নুরুল আজিম, মাওলানা ইউসুফ জেহাদী, হাফেজ মাওলানা রফিক, মাওলানা আবদুল হামিদ, মাওলানা জাহেদুল ইসলাম, উপজেলা প্রজন্মলীগ সহসভাপতি হাসান সিকদার, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সদস্য বাহদুর শাহ, উত্তরজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য মোস্তফা জলিল ভুট্টো, ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি মো. শাহিন প্রমুখ। প্রতিবাদ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, গত দুই বছরে আলেম-ওলামারা বেশ কয়েকবার এটি বন্ধ করে তালা ঝুলিয়ে দেন। প্রতিবারই বন্ধের সময় ভাই ভাই বোর্ডিংয়ে অসামাজিক কাজে লিপ্ত অবস্থায় পতিতা ও খদ্দেরকে আটক করেন। প্রতিবারই আর কখনো এধরণের কাজ করবেননা বলে ব্যবসায়ি সমিতির কার্যালয়ে গিয়ে মুচলেখা দেন বোর্ডিংয়ের মালিক ইউনুচ। এরপর পতিতা ও খদ্দেরকে ছেড়ে দেয়া হয়। কিন্তু প্রতিবারই দেখা যায়, সে মুচলেখা দিলেও পরদিন থেকে সে আবার একই কর্মকান্ড চালায় তার বোর্ডিংয়ে। এ বিষয়ে উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হাবিব বলেন, ‘ভাই ভাই বোর্ডিংটি অবৈধ কর্মকান্ডের কারণে গত ২ বছরে প্রায় ৪ বার বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু সে অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে কিছুদিন যেতে নাযেতেই পুনরায় এই ধরণের কর্মকান্ড চালায়। তার এই ধরণের কর্মকান্ড স্থায়ীভাবে বন্ধে ও তার হোটেলে সিলগালা করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানায়। এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রিছ আজগর বলেন, আমি বেশ কয়েকবার ব্যবসায়ি নেতাদের নিয়ে এই বোর্ডিংয়ে তালা ঝুলিয়েছিলাম। আলেমওলামারাও বেশ কয়েকবার তালা ঝুলিয়েছেন এবং স্ট্যাম্পে মুচলেখাও নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বারবার স্ট্যাম্পে মুচলেখা দিলেও বোর্ডিং মালিক ইউনুচ ঠিকই আড়ালে তার অবৈধ কর্মকান্ড চালিয়ে যায়। এবার যাতে সে আর কোন সুযোগ না পায় সেজন্য তিনি সকলের সজাগ দৃষ্টি রাখার আহবান জানান।