চন্দনাইশে গরমের কারণে রোগবালাই বাড়ছে

64

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের কারণে সময়মত বৃষ্টি না হওয়া, গরমে তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে রোগবালাই বেড়ে চলেছে। প্রতিদিন হাসপাতালে কয়েক’শ রোগী জ্বর নিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। গত ১৫ জুন দিনে ৩২ ডিগ্রি, সন্ধ্যায় ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল। সে সাথে বাতাসের আদ্রতা ছিল ৯৪ ডিগ্রি। সামান্য বৃষ্টি হলেও তাপমাত্রা কমছে না। ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে রোগবালাই দিন দিন বেড়ে চলেছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চন্দনাইশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও দোহাজারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩১ শয্যার বাইরেও রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। বিগত ১ সপ্তাহ ধরে শতকরা ৮০ জন রোগী গরমের কারণে ভাইরাস জ্বর, সর্দি, কাশি, ডায়রিয়া রোগে ভুগছে। চন্দনাইশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বখতেয়ার আলম বলেছেন, গত ১ সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত রোগীর চাপ বেড়েছে। সিটের বাইরেও রোগী ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ভাইরাস জ্বর হলে রোগীরা খেতে পারেনা, অস্বস্তি বোধ করে, শরীরে ব্যথা অনুভব করে, ঘাম দেয়। বিশেষ করে শিশু রোগীরা কান্নাকাটি করে বেশি। ভাইরাস জ্বর হলে কমপক্ষে ১ সপ্তাহ থাকে। তাছাড়া পরিবারের ১ জনের হলে অন্যদেরও হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। ফলে দিন দিন ভাইরাস জ্বরের রোগী বাড়ছে। প্রতিদিন আউটডোরে সাড়ে ৩’শ রোগীর মধ্যে ২ শতাধিক জ্বরের রোগী রয়েছে বলে তিনি জানান। সে সাথে ডায়রিয়া, সর্দি, কাশির রোগীও দিন দিন বাড়ছে। দোহাজারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আবু তৈয়ব বলেছেন, প্রতিদিন আউটডোরে ৩ শতাধিক রোগীর মধ্যে ভাইরাস জ্বরের রোগীর সংখ্যা প্রায় ২’শ। এ ক্ষেত্রে রোগীরা তাড়াতাড়ি ভালো হওয়ার জন্য এন্টিবায়োটিক ঔষধ ব্যবহার করতে চাই। আবার কিছু কিছু রোগী এন্টিবায়োটিক ঔষধ ব্যবহার করার পর ভালো লাগলে ঔষধ বন্ধ করে দেয়। ফলে ক’দিন পর আবার জ্বরে আক্রান্ত হয়। জ্বর হলে খাবারের রুচি থাকে না। চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেছেন, তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে বর্তমানে ভাইরাস জ্বরে শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত আক্রান্ত হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সবাইকে পরিশ্রম কম করতে হবে। পাতলা কাপড় পরিধান করতে হবে, বেশি করে পানি খেতে হবে, ফলমূল খেতে হবে, স্বাভাবিকভাবে প্রতিদিন গোসল করে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। নিয়ম মেনে চললে ভাইরাস জ্বর থেকে রেহাই পেতে পারে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বনবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোশারফ হোসাইন বলেছেন, জলবায়ু প্রভাবের কারণে সময়মত বৃষ্টি হচ্ছে না। আবার একসময় অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে দেশের জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে। এখন গবেষণা করে বের করতে হবে, কখন বৃষ্টি হবে সে অনুযায়ী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। সময়মত বৃষ্টি না হওয়ার কারণে রোগবালাই বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি মশা ও বিভিন্ন জাতীয় জীবাণু জন্মাবে। এদের উৎপাত প্রকোপ বেড়ে যেতে পারে। এ ধরনের আবাহাওয়ার সাথে আমাদের দেশের মানুষ অভ্যস্ত নয়। ফলে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। সরকার সদিচ্ছার কারণে এ বিষয়ে বার বার সচেতনতা মূলক কাজ করে যাচ্ছে।