চন্দনাইশের মৃৎশিল্প হারিয়ে যাচ্ছে

104

বাজারে প্লাস্টিক সামগ্রীর বিভিন্ন ব্যবহারিক জিনিসপত্রের ভিড়ে বিলুপ্ত হচ্ছে চন্দনাইশ উপজেলার চিরচেনা মৃৎশিল্প। সেই সাথে হারিয়ে গেছে মাটির তৈরি বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজানো দোকান। চন্দনাইশের মৃৎশিল্পের সাথে জড়িত পরিবারগুলোর সদস্যদের মাঝে চলছে অভাব-অনটন। কারণ তাদের তৈরি পণ্য এখন বাজারে চাহিদা তুলনামূলকভাবে কম থাকায় বদলে যাচ্ছে কুমারপাড়ার জীবনের চালচিত্র। এ পেশার সাথে যুগ যুগ ধরে জড়িত ছিল উপজেলার নগর পাড়ার প্রায় শতাধিক পরিবার। পূর্বপুরুষের ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে মৃৎশিল্প প্রস্তুতকারী পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে মেলায় অংশ গ্রহণের জন্য তৈরী করত ফুলের টব, ছোট ছোট পুতুল, হাঁড়ি-পাতিল ও মাটির খেলনাসহ বিভিন্ন রকমের সামগ্রী। পূর্বে মৃৎশিল্পের খ্যাতি ছিল। কিন্তু আধুনিকায়নের ফলে অ্যালুমিনিয়াম, চীনা মাটি, মেলামাইন এবং বিশেষ করে সিলভারে রান্নার হাঁড়ি, কড়াই প্রচুর উৎপাদন ও ব্যবহারের ফলে মৃৎশিল্প হারিয়ে যেতে বসেছে।
কথিত আছে এ মৃৎশিল্প প্রায় দুই থেকে আড়াই শত বৎসর পূর্ব থেকে চলে আসছে। জানা যায়, অতীতে এমন দিন ছিল যখন গ্রামের মানুষ এই মাটির হাঁড়ি, কড়াই, বাসন ও থালা ইত্যাদি দৈনন্দিন ব্যবহারের সমস্ত উপকরণ মাটির ব্যবহার করত। চন্দনাইশ উপজেলার নগর পাড়া এলাকার মৃৎশিল্পের সাথে জড়িত বয়োবৃদ্ধ জাফর আহমদ, আবদু শুক্কুর ও খদিজা খাতুনের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তারা এ পেশায় কাজ করে আসছে। এসব কুমার পরিবারেরা এ কাজ করে তারা দৈনিক ৪শ-৫শ টাকা রোজগার করে থাকে। যার কারণে সংসারে অভাব-অনটন লেগেই থাকে। বর্তমান যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে তাঁদের হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে তারা জানান। তাছাড়া আয়ের সাথে ব্যয়ের সামঞ্জুস্য না থাকার দরুণ উপজেলার বেশির ভাগ কুমাররা পেশা বদল করে অন্যান্য পেশায় যোগ দিচ্ছেন। তারা অভিযোগ করে বলেন, বিভিন্ন সময় সরকারি দপ্তর থেকে লোকজন এসে সাহায্য-সহযোগিতার কথা বললেও বাস্তবে তারা এখনও পর্যন্ত তা পাননি।