চট্টগ্রাম-৮ আসনে লড়াই হবে নৌকা-ধানের শীষে

48

চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনের উপ-নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। বাবলুর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারে নির্বাচনী প্রতিদ্ব›িদ্বতায় টিকে রইলেন ছয় প্রার্থী। আজ প্রার্থীরা প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর আনুষ্ঠানিক প্রচারণায় নামবেন।
বৈধ প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত মোছলেম উদ্দিন আহমেদ, বিএনপি মনোনীত আবু সুফিয়ান, বিএনএফ প্রার্থী এসএম আবুল কালাম আজাদ, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী এসএম ফরিদ উদ্দিন, ন্যাপ প্রার্থী বাপন দাশগুপ্ত ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ এমদাদুল হক।
চট্টগ্রাম জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান পূর্বদেশকে বলেন, ‘প্রত্যাহারের শেষদিন জাতীয় পার্টি প্রার্থী জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এখন এ আসনে প্রতিদ্ব›িদ্বতায় টিকে আছেন ছয়জন প্রার্থী। আজ প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে। পরশু থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করবেন প্রার্থীরা।’
ভোটাররা জানান, নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেয়ায় নির্বাচনী পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। এখন নির্বাচনী যুদ্ধে ছয় প্রার্থী থাকলেও মূলত এ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোছলেম উদ্দিন আহমেদ ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আবু সুফিয়ানের মধ্যে জমজমাট ভোটযুদ্ধ হবে। প্রার্থীর চেয়ে প্রাধান্য পাবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির রাজনীতি। উপ-নির্বাচনে এ আসনে জয়-পরাজয় উভয় দলের জন্য প্রেস্টিজ ইস্যু। আপাতত বড় দুই দলের প্রার্থীর ভোটের লড়াইয়ে এগিয়ে আছেন আওয়ামী লীগ। তবে সুষ্ঠু ভোট হলেই আওয়ামী লীগ প্রার্থীর মাথাব্যথার কারণ হতে পারেন বিএনপি প্রার্থী। দুই প্রার্থীর বসবাস দুই প্রান্তে হওয়ায় ভোটাররাও আঞ্চলিকতায় বিভক্ত থাকবেন।
ইসি সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম-৮ আসনে চার লক্ষ ৭৫ হাজার ৯৯৬ জন ভোটার আছে। এরমধ্যে পুরুষ দুই লক্ষ ৪১ হাজার ৯২২ জন ও মহিলা ভোটার দুই লক্ষ ৩৪ হাজার ৭৪ জন। এরমধ্যে বোয়ালখালীর একটি পৌরসভা ও আটটি ইউনিয়ন নিয়ে ৬৯টি কেন্দ্রে ভোটার আছে এক লক্ষ ৬৪ হাজার ১৩১ জন। চান্দগাঁও ও পাঁচলাইশের পাঁচ ওয়ার্ডের ১০১টি কেন্দ্রে তিন লক্ষ ১১ হাজার ৮৬৫ জন ভোটার আছে।
এদিকে গ্রামের চেয়ে শহর অংশে ভোটার সংখ্যা বেশি থাকায় একেক প্রার্থী একেক ধরনের সুবিধা পাবেন। চান্দগাঁওয়ের বাসিন্দা জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেয়ায় বিএনপি প্রার্থী আবু সুফিয়ান শহর এলাকায় কিছুটা সুবিধা পাবেন। তবে এই পাঁচ ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতার বসবাসের কারণে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর জয়ে তাঁরাই ভূমিকা রাখতে পারেন। আবার বোয়ালখালীর স্থানীয় বাসিন্দা হওয়ায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোছলেম উদ্দিন সেখানেও ভালো অবস্থানে থাকবেন। তবে আওয়ামী লীগের মাথাব্যথার কারণ হতে পারে বিএনপির নীরব ভোট। কারণ, মঈন উদ্দীন খান বাদল সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার আগেও বিএনপির দখলে ছিল এ আসনটি। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর বাইরে গিয়ে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ সমর্থিত ভোটারের ভালো অবস্থান আছে।
কালুরঘাট মোহরা এলাকার ভোটার শানে আলম বলেন, ‘কে নির্বাচিত হবেন তা ভোট সুষ্ঠু কতটুকু হচ্ছে তার উপর নির্ভর করছে। দুই প্রার্থীই স্বস্ব অবস্থানে এগিয়ে। এক্ষেত্রে শহর গ্রামে আওয়ামী লীগ প্রার্থী কিছুটা সুবিধায় থাকলেও বিএনপিও এ নির্বাচনকে প্রেস্টিজ ইস্যু হিসেবে নিবে। যে কারণে দুই প্রার্থীর মধ্যে লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি। শেষ পর্যন্ত দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই শীর্ষ নেতার ভোটযুদ্ধের ফলাফলের জন্য আগামী ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।’