চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের বার্ষিক ক্রীড়ার বর্ণাঢ্য প্রদর্শনী

41

ঐতিহ্যবাহী দামপাড়া পুলিশ লাইন মাঠে একসময় মেট্রোপলিটন সিনিয়র ক্রিকেট লিগে জাতীয় তারকারা ছাড়াও শ্রীলঙ্কান ফার্নান্দো-রড্রিগোসহ অনেক আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারও খেলে গেছেন। চট্টগ্রামের ফুটবলের সূতিকাগার মেট্রোপলিটন (বর্তমানে মহানগরী) কিশোর ও পাইওনিয়ার ফুটবল লিগের জমজমাট আসর বসতো এই দামপাড়া পুলিশ লাইন মাঠে। কিন্তু কালের বিবর্তনে এই মাঠ এখন আর হাজারো ক্রীড়া পাগল দর্শকের পদভারে মুখরিত হয় না। মহানগরী ক্রীড়া সংস্থার ঝিমিয়ে পড়া কার্যক্রম আর নিরাপত্তার অজুহাতে এখন এ মাঠে তেমন খেলাধূলা দেখা যায় না। তবে দীর্ঘদিন পর গতকাল আবার গর্জে উঠেছিল পুলিশ লাইন। ভেন্যু প্রস্তুতকারীরা অপরূপ সাজে সাজিয়েছিল এই মাঠটিকে। কোন আন্তর্জাতিক ইভেন্ট নয়, এমনকি কোন জাতীয় প্রতিযোগিতাও নয়- দামপাড়া পুলিশ লাইন মাঠকে নববর্ষের সাজে সজ্জিত ষোড়শীর মত রং দেয়ার উপলক্ষ্য চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা।
ব্যাপক উৎসাহ আর উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে গতকাল সম্পন্ন হয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। সিএমপি ক্রীড়াকে কেন্দ্র করে পুলিশ সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যদের মিলন মেলা বসেছিল। দিনব্যাপী এবারের এই ক্রীড়া মহাযজ্ঞে ৩২টি ইভেন্টে রেকর্ড সংখ্যক প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করে। বিকেলে দামপাড়া পুলিশ লাইন মাঠে বেলুন উড়িয়ে এই বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। সিএমপি কমিশনার মো. মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক, মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার কুসুম দেওয়ান, আমেনা বেগম, উপ-পুলিশ কমিশনার মোস্তাইন হোসেনসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পুলিশের মহাপরিদর্শক প্রতিযোগিতার উদ্বোধন ও মশাল প্রজ্বলন শেষে চকবাজার জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার নোবেল চাকমার নেতৃত্বে ক্রীড়াবিদদের মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজের সালাম গ্রহণ করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, পুলিশ সদস্যদের বিনোদনের সুযোগ নেই। তাই বার্ষিক এই ক্রীড়া প্রতিযোগিতা তাদের দেহ আর মনকে প্রফুল্ল করবে।
এবারের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ইভেন্টসমূহের মধ্যে ছিল উপ-পরিদর্শকদের (এসআই) ১০০ মিটার দৌড়, পুরুষ কনস্টেবলদের ১০০, ২০০ ও ৪০০ মিটার দৌড়, নারী কনস্টেবলদের ১০০ মিটার দৌড়, সহকারী পু্লশি কমিশনারদের ৮০ মিটার দৌড়, অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের ৮০ মিটার হাঁটা, দীর্ঘ লাফ, চাকতি নিক্ষেপ, অ্যালার্ম প্যারেড, মিউজ্যিাকেল পিলু, বালিশ যুদ্ধ, বেলুন ফুটানো এবং যেমন খুশি তেমন সাজো প্রতিযোগিতা। তবে প্রতিযোগিতার মধ্যে সবচাইতে উপভোগ্য ইভেন্ট ছিল বালিশ যুদ্ধ ও মিউজিক্যাল চেয়ার যাতে প্রতিযোগী ছিল বিপুল সংখ্যক। এছাড়া ১০০ মিটার দৌড়, ২০০ মিটার দৌড় এসব ইভেন্টগুলো ছিল বেশ আকর্ষণীয়। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী ও তার স্ত্রী পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক) কেন্দ্রীয় সভানেত্রী হাবিবা হোসেন। এসময় সিএমপির পুনাক সভানেত্রী মির্জা মাহবুবা মোস্তফাসহ পুনাক সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।