চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি থানা-ওয়ার্ডের কমিটি নিয়ে আল্টিমেটামেই ঘুরপাক

101

আল্টিমেটামের পর আল্টিমেটাম দিয়েও পূর্ণাঙ্গ করা যায়নি নগরীর বিএনপির থানা ও ওয়ার্ড কমিটি। এ অবস্থায় থানা ও ওয়ার্ড কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে আবারও দশ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন নেতারা। যদিও নিষ্ক্রিয় থাকা থানা ও ওয়ার্ড কমিটিগুলো আদৌ পূর্ণাঙ্গ করা যাবে কি-না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান তারা।
জানা যায়, সাংগঠনিক শক্তি জোরদার করার লক্ষ্যে ওয়ার্ড ও থানা কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার উদ্যোগ নেয় মহানগর বিএনপি। গত বছরের ২ আগস্টের মধ্যে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে নগরীর ১৫টি থানা ও ৪৩টি ওয়ার্ড কমিটিকে পত্র দেওয়া হয়। পরবর্তীতে সময় আরও একমাস বাড়ানো হয়। এরমধ্যে আকবরশাহ ও কোতোয়ালী থানায় কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হলেও বাকি ১৩টি থানায় কমিটি আংশিক থেকে যায়। একইভাবে ৪৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে (২টি সাংগঠনিক ওয়ার্ডসহ) পূর্ণাঙ্গ করা হয়েছে ২০টি কমিটি। ৬টি ওয়ার্ডে রয়েছে আহবায়ক কমিটি এবং ১৮ ওয়ার্ডের কার্যক্রম চলছে আংশিক কমিটি দিয়ে। এ অবস্থায় কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার উদ্যোগের একবছর পর গত ১৬ আগস্ট আবার নড়েচড়ে বসে নগর বিএনপি। আগামী ২৬ আগস্টের মধ্যে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার জন্য থানা ও ওয়ার্ড কমিটিকে দেওয়া হয় চূড়ান্ত তাগাদাপত্র।
নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর স্বাক্ষরিত এ তাগাদাপত্রে বলা হয়, ‘আগামী ২৬ আগস্ট অথবা পত্র প্রাপ্তির ১০ দিনের মধ্যে আপনি/আপনাদের আওতাধীন থানা ও ওয়ার্ড কমিটি পূর্ণাঙ্গ করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বরাবরে নগর বিএনপির দপ্তরে জমা দিতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনো থানা/ওয়ার্ড কমিটি পূর্ণাঙ্গ করে জমা দিতে ব্যর্থ হলে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি সাংগঠনিক ক্ষমতাবলে কোনো প্রকার কারণ দর্শানো ছাড়া পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে সব কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করবে।’ এতে আরো উল্লেখ করা হয়, ‘০২ আগস্ট ২০১৮ সালের মধ্যে আপনার/আপনাদের থানা ও ওয়ার্ড কমিটি পুনর্গঠনের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় পত্র প্রাপ্তির এক বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও আপনি/আপনাদের আওতাধীন থানা ও ওয়ার্ড কমিটি পূর্ণাঙ্গ করে নগর বিএনপির দপ্তরে জমা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন।’
নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, কমিটি পুনর্গঠন নিয়মিত প্রক্রিয়া। গত বছর আমরা উদ্যোগ নিয়েছিলাম। কিছু কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হয়েছে। বাকিগুলো এখন হয়ে যাবে। তারা যদি কমিটি গঠন করতে ব্যর্থ হয় তাহলে আমরা সাংগঠনিক ক্ষমতাবলে নিজেরাই কমিটি গঠন করে দিব।
সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর বলেন, এবার আমরা সময় বেঁধে দিয়েছি। এরমধ্যে পূর্ণাঙ্গ করা না হলে কমিটি ভেঙে দেওয়া হবে। আগেও আমরা আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম, কিন্তু এভাবে দিইনি। এবার কমিটি পূর্ণাঙ্গ না হলে আমরা কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি দিব।
বর্তমানে নগরীর ১৫টি থানার মধ্যে ১৩টিতে রয়েছে বিএনপির আংশিক কমিটি। এরমধ্যে দুই সদস্যের বায়েজিদ থানা, দুই সদস্যের পাহাড়তলী থানা, ৫ সদস্যের বাকলিয়া থানা, দুই সদস্যের পাঁচলাইশ থানা এবং ৫ সদস্যের চাঁন্দগাও থানা কমিটি গঠন করা হয় ২০১৭ সালের ১৪ জুলাই। ৬ সদস্যের পতেঙ্গা থানা, ৫ সদস্যের বন্দর থানা, ২ সদস্যের চকবাজার থানা, ৫ সদস্যের সদরঘাট থানা এবং ৫ সদস্যের ইপিজেড থানা কমিটি গঠন করা হয় ২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারি। ৫ সদস্যের হালিশহর থানা কমিটি গঠন হয় ২০১৭ সালের ২৬ আগস্ট এবং পাঁচ সদস্যের সদরঘাট থানার আংশিক কমিটি গঠন করা হয় ২০১৭ সালের নভেম্বরে।
নগর বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস আলী বলেন, দশ দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করার জন্য সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরে প্রতিটি ওয়ার্ড ও থানা কমিটির কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ১৫টি থানার কমিটির মধ্যে ২টি পূর্ণাঙ্গ আছে। সাংগঠনিকসহ ৪৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি আছে ২০টিতে। বাকিগুলোর মধ্যে ৬টি ওয়ার্ডে আহবায়ক কমিটি এবং ১৮টিতে আংশিক কমিটি রয়েছে। আমরা ১৩টি থানা ও ২৪টি ওয়ার্ড কমিটিকে চিঠি দিয়েছি।