চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থা

101

চীনে ছড়িয়ে পড়েছে ‘করোনা’ নামে রহস্যময় এক নতুন ভাইরাস। এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে মানুষ। এটি সংক্রামক রোগ হওয়ায় চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থা জারি করা হয়েছে। চীনের নাগরিক এবং চীন থেকে আসা যাত্রীদের স্ক্যানিং মেশিনে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হচ্ছে। তবে এখনো পর্যন্ত এই ভাইরাস আক্রান্ত কাউকে পাওয়া যায়নি।
জানা যায়, চীনে এ রোগটি দ্রূত ছড়িয়ে পড়ছে। ভাইরাসের সংক্রমণে নিউমোনিয়া ধরনের এই রোগে দেশটিতে গত দুদিনে নতুন আক্রান্ত হয়েছেন ১৩৯ জন।
গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, শুরুতে উহান প্রদেশে এই রোগ দেখা দিলেও এখন বেইজিং, সাংহাই ও সেনঝেন প্রদেশেও আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। এরই মধ্যে ৪ জন মারা গেছেন। জাপান, থাইল্যান্ড ও দক্ষিণ কোরিয়ায়ও ভাইরাসটি ছড়িয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে।
বাংলাদেশে এখনও কেউ শনাক্ত না হলেও বিমানবন্দরে কর্তৃপক্ষকে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে বলেছে বাংলাদেশের রোগতত্ত¡, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। রোগটির উপর নজরদারি বাড়িয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ও।
বিমারনবন্দর সূত্রে জানা যায়, এ রোগে আক্রান্তদের শনাক্ত করতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে শাহ আমানত বিমানবন্দরে।
বিমানবন্দরের ম্যানেজার উইং কমান্ডার সরওয়ার ই জামান পূর্বদেশকে বলেন, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা সতর্ক রযেছি। বিমানবন্দরে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট যাত্রীদের পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামের সঙ্গে চীনের কোনো এলাকার সরাসরি ফ্লাইট নেই। চীন থেকে কোনো যাত্রী দুবাই বা ভারত হয়ে চট্টগ্রাম এলে তাদের চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার অনুরোধ করা হচ্ছে।
জানা যায়, চীন থেকে আসা যাত্রীদের ফিজিক্যাল স্ক্রিনিং করানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাত্রীদের বিশদ পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করানো হবে। বিমানবন্দরে স্থাপিত থার্মাল স্ক্যানারের ভেতর দিয়ে আসার সময় সংকেত দিলে ওই যাত্রীকে পরীক্ষা করবেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। সাধারণত কারও শরীরের তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট থাকলেও থার্মাল স্ক্যানার সংকেত দেবে। এরপর ওই যাত্রীকে বিমানবন্দরে কোয়ারেনটাইন রুমে রেখে পর্যবেক্ষণ ও চিকিৎসা দেওয়া হবে। এছাড়া যাত্রীরা চীনের কোন শহর থেকে এসেছেন, কোথায় কোথায় গিয়েছিলেন, অবস্থানের সময়সহ বেশ কিছু তথ্য সংগ্রহ করা হবে।
চিকিৎসকরা বলছেন, করোনা ভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে সঞ্চারিত হয়। শ্বাসতন্ত্রের এ রোগে সর্দিজ্বর হয়, সেই সঙ্গে মাথা ব্যথা, গলা ব্যাথা, কাশি ও শরীরে অস্বস্তি বোধ হয়। উপসর্গগুলো অনেকটা নিউমোনিয়ার মত।
গবেষকরা বলছেন, আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে তো বটেই, হাঁচি-কাশি থেকে বাতাসের মাধ্যমেও এ ভাইরাস ছড়াতে পারে।
আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা সাংবাদিকদের বলেন, বিমানবন্দরের স্বাস্থ্যকর্মীদের আমরা প্রশিক্ষণ দিয়েছি। যেসব যাত্রী চীন থেকে আসছেন, তারা যেন এয়ারপোর্টের থার্মাল স্ক্যানারের ভেতর দিয়ে যান, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। যদি কারও জ্বর পাওয়া যায়, তাহলে আমরা ধরতে পারব।