চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে রাউজান সুন্নি যুব ঐক্য পরিষদের সংবাদ সম্মেলন

85

তরিকতের আড়ালে ভিন্ন মত দমনকারী ও ভিন্ন মতাদর্শীদের ওপর হামলা-মামলা ও নির্যাতনের দায়ে ভন্ডপীর মুনিরুল্লাহকে কাগতিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ পদ থেকে অপসারণ এবং তাকে অবিলম্বে গ্রেফতারসহ তার সন্ত্রাসী-ক্যাডার বাহিনীর বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়েছে রাউজান সুন্নি যুব ঐক্য পরিষদ। গত ৪ জুলাই সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে পরিষদ নেতৃবৃন্দ সন্ত্রাস-সহিংসতা ও জঙ্গিবাদী কার্যকলাপে জড়িত থাকার দায়ে মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটিকে নিষিদ্ধ করতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন। রাউজান সুন্নি যুব ঐক্য পরিষদ নেতৃবৃন্দ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বহু খ্যাতিমান সুন্নি আলেম, বক্তা ও রাজনীতিবিদকে নানাভাবে অপমান, অপদস্থ করেছে এবং হামলা-নিপীড়ন চালিয়ে রাউজানে বিভীষিকা ও ত্রাস ছড়িয়ে দিয়েছেন ভন্ডপীর মুনিরুল্লাহ। কোনো যোগ্যতা না থাকা সত্তে¡ও কাগতিয়া এশাতুল উলুম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ পদ আঁকড়ে ধরে রেখেছেন তিনি। তার সমস্ত সার্টিফিকেটই ভেজাল। তাই কাগতিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ পদ থেকে তাকে অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে। পরিষদ নেতৃবৃন্দ বলেন, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে কাগতিয়া মাদ্রাসা ছিল রাজাকার-আলবদরদের নিরাপদ ঘাঁটি। নিজেদের অপরাধ ও কলংক ঢাকতে মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি নামে জঙ্গি সংগঠন গড়ে তুলে তথাকথিত তরিকত চর্চা করছেন এই স্বঘোষিত পীর মুনিরুল্লাহ। তাঁর পিতাকে গাউসুল আজম এবং নিজেকে মোর্শেদে আজম ঘোষণা করে নানা মিথ্যা, মনগড়া, বানোয়াট অলৌকিক কল্পকাহিনী প্রচার করে সরলপ্রাণ মুসলমানদেরকে ঈমানহারা ও ধোঁকা দিচ্ছেন এই ভন্ডপীর মুনিরুল্লাহ।
সংবাদ সম্মেলনে রাউজান সুন্নি যুব ঐক্য পরিষদ নেতৃবৃন্দ বলেন, মুনিরুল্লাহ গং নিজেকে আওলাদে রাসূল (দ.) দাবি করাটাও মিথ্যা ও বানোয়াট। তাঁর পূর্বপুরুষদের কেউ নিজেদের ‘সৈয়দ’ বা আওলাদে রাসূল (দ.) দাবি করেন নি। পীরগিরি জমিয়ে তুলতে এবং মানুষকে ধোঁকা দিতে নামের আগে ‘সৈয়দ’ ও ‘আওলাদে রাসূল (দ.)’ জুড়ে দিচ্ছেন এই মুনিরুল্লাহ। সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ রাউজানের উন্নয়নের রূপকার ও চারবারের নির্বাচিত সাংসদ এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীসহ সুন্নি আলেম ও সংগঠক, সুন্নি ব্যক্তিত্বদের বিরুদ্ধে ফেসবুকে ও নানাভাবে কুৎসা রটনাকারী মুনিরীয়ার ক্যাডার বাহিনীর বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার এবং এদেরকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান। তারা মুনিরীয়ার সন্ত্রাসীদের অব্যাহত ঔদ্ধত্য থামাতে তাদের ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করার আহŸান জানান। তারা বলেন, সুন্নি সংগঠক ও শীর্ষস্থানীয় সুন্নি নেতা অ্যাডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ারের ওপর রাউজান মোবারকখিলের মাহফিলে হামলা করেছে মুনিরীয়ার সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী। ২০১০ সনে ৯ এপ্রিল রাতে নজুমিয়া হাট এক মাহফিল থেকে ফেরার পথে আহলে সুন্নাতের শীর্ষস্থানীয় আলেম আল্লামা শফিউল আলম নিজামীর উপর বর্বর আক্রমণ চালিয়ে নির্মমভাবে পায়ের রগ কেটে দিয়েছে মুনিরীয়ার দুর্বৃত্ত চক্র। একই বছর ১৩ মে তের বছরের নঈম উদ্দিনকে নির্মমভাবে হত্যা করে রাউজান মুন্সিরঘাটায়। গত ১৭ এপ্রিল রাউজান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা মোজাম্মেল হক এবং মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল আনোয়ারের ওপর নৃশংস হামলা চালিয়েছে মুনিরীয়ার ক্যাডার কাহিনী। তরিকত প্রচারের আড়ালে নিরীহ জনতা, রাজনীতিবিদ ও সুন্নি ব্যক্তিত্বদের ওপর এই বর্বর হামলায় রাউজানবাসীসহ চট্টগ্রামের আপামর জনতা আজ ক্ষোভে ফুঁসছে। তাই, এই ক্ষোভের আগুন নেভাতে মুনিরীয়ার দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান রাউজান সুন্নি যুব ঐক্য পরিষদ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রাউজান সুন্নি যুব ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব মুহাম্মদ আমান উল্লাহ আমান। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন আহলে সুন্নাত সমন্বয় কমিটি কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের আহŸায়ক আহমদ সৈয়দ, মুহাম্মদ মাছুমুর রশিদ কাদেরী, মুহাম্মদ আজাদ রানা, মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল রোমান, মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন জাবেদ, মুহাম্মদ মুনির উদ্দিন, মুহাম্মদ জামশেদ, মুহাম্মদ আব্দুস সাত্তার, মুহাম্মদ রাশেদ, হাফেজ মুহাম্মদ হাসান ইমাম, মুহাম্মদ ইমতিয়াজ রেজা, কাজী মুহাম্মদ কায়েস উদ্দিন, হাফেজ মুহাম্মদ তানভির, মুহাম্মদ আহমুদুল হক, মুহাম্মদ সৌরভ, মুহাম্মদ আসিফ, মুহাম্মদ তৌহিদ, মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম আদর, মুহাম্মদ আইয়ুব খান কাদেরী, মুহাম্মদ জাহেদ, কাজী মুহাম্মদ সৌরভ, মুহাম্মদ জাবেদ, মুহাম্মদ এহসান, মুহাম্মদ মাসুদ, মুহাম্মদ কফিল, মুহাম্মদ আলী আকবর মিঠু প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি