চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের দুর্দান্ত জয়

29

পয়সা উসুল এক ম্যাচই উপভোগ করলেন সাগরিকা জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আগত দর্শকরা। যে ম্যাচে ২২১ রানের বড় সংগ্রহ গড়েও স্বস্তিতে ছিল না চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। শেষ ওভার পর্যন্ত জয়ের আশা জিইয়ে রেখেছিল ঢাকা প্লাটুন। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের ২২১ রানের জবাবে মাশরাফি বিন মর্তুজার দল শেষ ওভারের শেষ বলে অলআউট হয়েছে ২০৫ রানে, ১৬ রানের হার নিয়ে মাঠ ছেড়েছে।
অথচ চট্টগ্রামের বড় সংগ্রহ দেখেও ভড়কে যায়নি ঢাকা। দলকে সাহসী সূচনা এনে দেন টেস্ট স্পেশালিস্ট তকমা গায়ে লেগে যাওয়া মুমিনুল হক। তামিম ইকবালের অনুপস্থিতিতে ওপেনিং করতে নেমে ৩৫ বলে ৩ বাউন্ডারি আর ২ ছক্কায় ৫২ রানের ঝড়ো এক ইনিংস খেলেন তিনি।
পরের ব্যাটসম্যানরা বড় কিছু করতে না পারলেও বল নষ্ট করেননি। জাকের আলি ১৯ বলে ২৭, লরি ইভান্স ১১ বলে ১৭, আসিফ আলি ৬ বলে ১৫, আফ্রিদি ৬ বলে ৯ আর আট নম্বরে নেমে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা ৬ বলে ১টি চার আর ৩টি ছক্কায় করেন মূল্যবান ২৩ রান। শেষ সময়টা পর্যন্ত খেলা ধরে রাখেন থিসারা পেরেরা। দুই ওভার হাতে থাকতে দল ৯ উইকেট হারালেও একটা প্রান্ত ধরে ঢাকাকে এগিয়ে নিতে থাকেন লঙ্কান এই অলরাউন্ডার।
শেষ ওভারে দরকার ছিল ২১ রান। কিন্তু মেহেদী হাসান রানার ওই ওভারে ৪ রানের বেশি নিতে পারেনি ঢাকা প্লাটুন, হারিয়েছে শেষ উইকেটটিও। ২৬ বলে ৩ চার আর ৪ ছক্কায় ৪৭ রানে অপরাজিতই থেকে যান থিসারা পেরেরা।
৩টি করে উইকেট নেন মেহেদী হাসান রানা আর মুক্তার আলি। ২টি করে উইকেট শিকার কেসরিক উইলিয়ামস আর নাসির হোসেনের। তবে নাসির উইকেট পেলেও ৪ ওভারে খরচ করেছেন ৬০ রান।
এর আগে মাহমুদউল্লাহর ২৮ বলে ৫৯ রানের ইনিংসের সঙ্গে ওপেনার লেন্ডল সিমন্স আর তিন নম্বরে নামা ইমরুল কায়েসের ঝড়ে ৪ উইকেটে ২২১ রানের পাহাড়সমান সংগ্রহ দাঁড় করায় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।
শুরু থেকেই মারকুটে ব্যাটিংয়ে এগিয়েছে চট্টগ্রাম। ঢাকা প্লাটুনের বোলাররা পাত্তাই পাননি। ওপেনার লেন্ডল সিমন্স ৩৬ বলে ৫ চার আর ৪ ছক্কায় ৫৭ রান করে রানআউটের শিকার হন। আরেক ওপেনার আভিষ্কা ফার্নান্ডো ১৩ বলে ২৬ রানের ঝড় তুলে হাসান মাহমুদের বলে বোল্ড হন। তারপরও ঝড় থামেনি। ইমরুল কায়েস, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, চ্যাডউইক ওয়ালটনরা রীতিমত কাঁদিয়ে ছেড়েছেন ঢাকার বোলারদের। ইমরুল ২৪ বলে ৪ চার আর ১ ছক্কায় ৪০ রানের এক ইনিংস খেলে সালাউদ্দিন শাকিলের ফিরতি ক্যাচ হন।
খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়েই ইনিংসের ১৮তম ওভার পর্যন্ত খেলেছেন মাহমুদউল্লাহ। হাসান মাহমুদের দ্বিতীয় শিকার হওয়ার আগে ২৮ বলে ৫৯ রানের এক বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন তিনি, যে ইনিংসে ৫টি বাউন্ডারির সঙ্গে ৪টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন জাতীয় দলের অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান। ওয়ালটন ১৮ বলে ২৭ রানে অপরাজিত থাকেন। ঢাকা প্লাটুনের পেসার হাসান মাহমুদ ২ উইকেট পেলেও ৪ ওভারের খরচ করেছেন ৫৫ রান। ৩ ওভারে ৪২ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন মাশরাফি। খেলা শেষে বিজয়ী দলের মেহেদী হাসান রানার হাতে ম্যাচসেরার পুরস্কার তুলে দেন বিসিবর পরিচালক, চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার (সিজেকেএস) সাধারণ সম্পাদক, সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ও বিসিবি মিডিয়া কমিটির সদস্য সচিব, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি আলহাজ আলী আব্বাস।