চট্টগ্রাম কলেজে ছাত্রলীগের দু পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৪

27

চট্টগ্রাম কলেজে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে চারজন আহত হয়েছে।
গতকাল দুপুর ১টার দিকে কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি মাহমুদুল করিম ও সাধারণ সম্পাদক সুভাষ মল্লিকের অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর থেকে চট্টগ্রাম কলেজসহ আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
আহতরা হলেন, ইংরেজি বিভাগের সম্মান চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্র ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের উপ-ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আবদুল্লাহ আল সাইমন (২৪), গণিত বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের আবু তোরাব (২১) ও চতুর্থ বর্ষের সাফায়েত হোসেন রাজু (২৩) এবং স্নাতক পাশ কোর্সের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আব্দুল মালেক রুমি (২২)। চারজনই চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল করিমের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। সাইমন ও রুমিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর মাহমুদ বলেন, কলেজ এখন বন্ধ। কলেজের ভেতরে আধিপত্য নিয়ে মারামারি হয়নি। তবে দুই পক্ষের অভ্যন্তরীণ কোনো দ্ব›েদ্বর কারণে এ ঘটনা ঘটতে পারে। এতে ৩ থেকে ৪ জন আহত হয়েছে। সুনির্দিষ্টভাবে কী কারণে মারামারি হয়েছে সে ব্যাপারে জানতে আমরা আহতদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করছি।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, প্যারেড কর্নারের হোস্টেল গেইট থেকে বন্ধ থাকা শেরে বাংলা হল পর্যন্ত এলাকায় উভয়পক্ষের অর্ধশতাধিক কর্মী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় তাদের কয়েকজনের হাতে দেশিয় ধারালো অস্ত্র দেখা গেছে। সভাপতি মাহমুদুল করিমের অনুসারীরা সৌরভ সাহা নামে একজনকে রামদা’সহ ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন। তবে সুভাষ মল্লিক সৌরভকে মাহমুদুল করিমের সহযোগী বলে দাবি করেছেন। এ ঘটনার পর পুলিশ দুপক্ষেকে সরিয়ে দিলে সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীরা গুলজার মোড়ে এবং সভাপতির অনুসারীরা কেয়ারীর সামনে অবস্থান নেয়।
স্থানীয়রা জানায়, সুভাষ মল্লিক সবুজ স্থানীয় যুবলীগ নেতা নুরু মোস্তফা টিনুর অনুসারী। অন্যদিকে মাহমুদুল করিম যুবলীগের সাবেক নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরের অনুসারী। ঘটনার পর থেকেই দুই পক্ষের লোকজন দলবদ্ধ হয়ে মিছিল করেছে। দুই পক্ষেই প্রচুর বহিরাগত অবস্থান নেয়। ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত প্রত্যেকেই শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল করিম পূর্বদেশকে বলেন, ‘টিনুর ছেলেরা আমাদের ছেলেদের উপর হামলা করেছে। চকবাজারে টিনু কাউন্সিলর নির্বাচন করবে। এজন্য সে তার শক্তির জানান দিতেই এ ঘটনা ঘটিয়েছে। আর এজন্য বেছে নিয়েছে চট্টগ্রাম কলেজকে। সম্পূর্ণ বিনা উস্কানিতে বন্ধ ক্যাম্পাসে কলেজের ছেলেদের মারধর করা হয়েছে। অথচ তারা ইংরেজি বিভাগের ভাইভা দিয়ে হোস্টেল গেটে দাঁড়িয়েছিল। তারা কলেজ মাঠে ফুটবল খেলতে হাফপ্যান্ট পড়াবস্থায় দাঁড়ালে কয়েকজন যুবক গিয়ে হাফপ্যান্ট পড়ে কেনো এসেছে তা জিজ্ঞাসা করেই চড় থাপ্পড় দেয়া শুরু করে। পরে একজনকে ধরে চকবাজারে নিয়ে মারধর করা হয়।’
চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সুভাষ মল্লিক সবুজ পূর্বদেশকে বলেন, ‘১০-১৫দিন বন্ধ ক্যাম্পাসের ভেতরে বাবর আলীর লোকজন অবস্থান নিয়ে মদ ও জুয়ার আসর বসায়। বিষয়টি আমি কলেজ কর্তৃপক্ষ ও পুলিশকে অবহিত করি। কলেজ কর্তৃপক্ষ আমাদের উভয় পক্ষকে ডেকে রাতে যাতে কেউ ক্যাম্পাসে না থাকে সে নির্দেশনা দেয়। আমি ও মাহমুদুল করিম দুইজনই কথা দিই রাতে কেউ ক্যাম্পাসে থাকবে না। কিন্তু এরপরেও মাহমুদুল করিম বহিরাগত টোকাইদের নিয়ে শেরে বাংলা হলের ভেতর মাদক গ্রহণ করে। আমরা এর প্রতিবাদ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে ন্যাক্কারজনক ঘটনাটি ঘটিয়েছে মাহমুদুল করিম ও তার অনুসারীরা।’