চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে ৩১ নতুন আশ্রয়কেন্দ্র

79

চট্টগ্রামে বর্তমানে আশ্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা ৪৭৯টি। এসব আশ্রয়কেন্দ্রের ধারণক্ষমতা চার লক্ষ ৪৪ হাজার ৮৮০ জন। যা মোট জনসংখ্যার তুলনায় অপ্রতুল। দেশি-বিদেশি সহযোগিতায় আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর অধিকাংশই ১৯৯১ সালের প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড়ের পর নির্মিত হয়। পরবর্তী ২৮ বছরে জনসংখ্যা বাড়লেও পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র না হওয়ায় দুর্যোগকালীন উপকূলবাসীকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সর্বশেষ ২০১৬ ও ২০১৭ সালে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু ও মোরা আঘাত হানার পর দেশের উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। এ প্রকল্পে উপকূল ও দুর্যোগ প্রবণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে নতুন করে নির্মিত হচ্ছে ৩১টি বহুমুখি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র।
চট্টগ্রামের ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ পূর্বদেশকে বলেন, ‘চট্টগ্রামে নতুন করে ১২টি বহুমুখি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। কক্সবাজারের কিছু আশ্রয়কেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে। চট্টগ্রামের নতুন করে নির্মাণ হতে যাওয়া আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ কাজ অগ্রগতি হয়েছে। চলতি বছরের মধ্যে এসব প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। দুর্যোগকালীন প্রতিটি আশ্রয়কেন্দ্রের ৮০০জন মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। প্রতিটি আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণে দুই কোটি টাকার উপরে ব্যয় হচ্ছে।’
জানা যায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘উপকূলীয় ও ঘূর্ণিঝড় প্রবণ এলাকায় বহুমুখি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ (২য় পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্পটি ২০১৬ সালে একনেক সভায় পাস হয়। পরে পরিকল্পনা বিভাগ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় কাজের অনুমোদন দেয়। ২০১৯ সালের মধ্যে এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেয়া হয়। সারাদেশে ২২০টি আশ্রয়কেন্দ্রের নির্মানের এ প্রকল্পে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারেই নির্মিত হচ্ছে ৩১টি আশ্রয়কেন্দ্র। আশ্রয়কেন্দ্রগুলো বিদ্যালয়ের কার্যক্রমের পাশাপাশি আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে গণ্য হবে। আশ্রয়কেন্দ্রের প্রতিটি ভবন হবে তিন তলা বিশিষ্ট। আশ্রয়কেন্দ্রের যাতায়াতের সুবিধার্থে আরসিসি রোড করা হবে। প্রতিটি ভবনের আয়তন হবে ৭৮০ বর্গমিটার।
চট্টগ্রামের আনোয়ারার রায়পুরে রায়পুর ইউনিয়ন বহুমুখি উচ্চ বিদ্যালয় বহুমুখি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, স›দ্বীপের সন্তোষপুরে মধ্য সন্তোষপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় বহুমুখি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, মাইটভাঙা হাইস্কুল বহুমুখি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, পটিয়া (কর্ণফুলী) বড়উঠানের শীতলঝর্না সুন্নিয়া মাদ্রাসা বহুমুখি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, মিরসরাইয়ের কমর আলী ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় বহুমুখি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, মায়ানীর শফিউল আলম আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় বহুমুখি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, দূর্গাপুরের জামেয়া রহমানিয়া ফাজিল মাদ্রাসা বহুমুখি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, বাঁশখালীর খানখানাবাদের রায়ছটা প্রেমাশিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় বহুমুখি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, সরলে আমিরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় বহুমুখি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, শেখেরখিলে ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা বহুমুখি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, সীতাকুন্ডে সৈয়দপুরে বগাচতর নুরীয় গণিউল উলুম ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা বহুমুখি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, মুরাদপুরের ভাটেরখালী উচ্চ বিদ্যালয় বহুমুখি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে।
কক্সবাজারের বড় মহেশখালী আইল্যান্ড হাইস্কুলে বহুমুখি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, ছোট মহেশখালী আহমদিয়া তৈয়্যবিয়া সুন্নিয়া মাদ্রাসা বহুমুখি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, কালামারছড়া উচ্চ বিদ্যালয় বহুমুখি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, কুতুবজোম অফসোর হাইস্কুল বহুমুখি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, পেকুয়ার শিলখালী উচ্চ বিদ্যালয় বহুমুখি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, বারবাকিয়ার ফাসিয়াখালী ইসলামিয়া ফাজিল (স্নাতক) মাদ্রাসা বহুমুখি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, রাজাখালী বেশারাতুল উলুম ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা বহুমুখি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, চকরিয়ার বড়ভেওলা জয়নাল আবেদীন মহিউচ্ছল্লাহ দাখিল মাদ্রাসা বহুমুখি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, বদরখালী আল আজহার উচ্চ বিদ্যালয় বহুমুখি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, কক্সবাজার সদর চৌফলদন্ডী সাগরমনি উচ্চ বিদ্যালয় বহুমুখি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, পি.এম খালী উত্তর পাতলী হযরত আবু বকর ছিদ্দিক (রা.) দাখিল মাদ্রাসা বহুমুখি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, টেকনাফ সাবরাং শাহপরীর দ্বীপ হাজী বশির আহমদ উচ্চ বিদ্যালয় বহুমুখি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, টেকনাফ সদর বর্ডার গার্ড পাবলিক স্কুলে বহুমুখি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, উখিয়া জালিয়াপালং মাদারবুনিয়া ছেমটখালী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় বহুমুখি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, পালংখালী বালুখালী কাসেমিয়া উচ্চ বিদ্যালয় বহুমুখি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, রামু রাজারকুল মনছুর আলী সিকদার আইডিয়াল স্কুলে বহুমুখি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, জোয়ারিয়ানালা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় বহুমুখি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে।
চট্টগ্রামে বর্তমানে ৪৭৯টি আশ্রয়কেন্দ্রের ধারণক্ষমতা চার লাখ ৪৪ হাজার ৮৮০জন। চট্টগ্রামের ছয়টি উপজেলায় নতুন নির্মিত আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত হলে আরো প্রায় ১০ হাজার মানুষের আশ্রয়ের সুযোগ হবে। পাশাপাশি কক্সবাজারে নবনির্মিত আশ্রয়কেন্দ্রে ধারণক্ষমতা বাড়বে প্রায় ১৫ হাজার।