চট্টগ্রামে মাত্র ২৩ ভাগ রোগী চিকিৎসা পাচ্ছেন হাসপাতালে

27

করোনা রোগীর সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় চট্টগ্রামে তৈরি হয়েছে শয্যা সংকট। রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। সামগ্রিকভাবে রোগী বাড়লেও মাত্র ২৩ ভাগ রোগী হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন।
গত ৩ মার্চ চট্টগ্রামে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর গত ৪৫ দিনে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭১৬ জনে। এর মধ্যে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১০২ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ৩৪ জন।
বাকি ৫৮০ জনের মধ্যে ১৩৪ জন করোনা পজেটিভ রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। যা শতাংশের হিসাবে মাত্র ২৩ ভাগ। বাকি ৪৪৬ জন বা ৭৭ ভাগ রোগী বাসায় আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন।
করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর চট্টগ্রামে করোনা চিকিৎসায় দুটি হাসপাতালকে প্রস্তুত রাখা হয়। এর মধ্যে একটি চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল এবং দ্বিতীয়টি ফৌজদারহাটে অবস্থিত বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি)।
জেনারেল হাসপাতালে ১০টি আইসিইউসহ ১১০ শয্যা এবং বিআইটিআইডি’তে ৩০ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখা হয়। এছাড়া ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে ওঠা চট্টগ্রামের ফিল্ড হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা রাখা হয়েছে ৪০টি। কিন্তু প্রায় প্রতিটি হাসপাতালেই বৃদ্ধি পেয়েছে রোগীর সংখ্যা। রোববারের (১৭ মে) হিসাব অনুযায়ী চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে রোগী ভর্তি রয়েছে ১১১ জন। এর মধ্যে ৯৮ জন করোনা পজেটিভ এবং ১৩ সন্দেহজনক রোগী রয়েছে। ফলে ওই হাসপাতালে ইতোমধ্যে ধারণ ক্ষমতা অতিক্রম করেছে।
এছাড়া বিআইটিআইডিতে ২৫ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে ১৪ জন করোনা পজেটিভ এবং ১১ জন সন্দেহজনক রোগী। এখন পর্যন্ত এ হাসপাতালে মাত্র ৫টি শয্যা খালি রয়েছে।
বেসরকারি উদ্যোগে চট্টগ্রামের সলিমপুরে গড়ে ওঠা ফিল্ড হাসপাতালে রোগী ভর্তি রয়েছেন ২৪ জন। এর মধ্যে ২২ জনই করোনা পজেটিভ রোগী।
সব মিলিয়ে করোনা রোগের চিকিৎসায় ১৮০ শয্যার বিপরীতে পজেটিভ ও সন্দেহজনক রোগী চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন ১৬০ জন।
এদিকে দিন দিন করোনা রোগী বৃদ্ধি পাওয়ায় কর্তৃপক্ষের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে তৎপরতাও শুরু করেছেন তারা। এরই মধ্যে চমেক হাসপাতালে করোনা চিকিৎসার অনুমতি মেলায় কিছুটা স্বস্তি মিলেছে। যদিও অধিক সংখ্যক রোগী ভর্তি করানো নিয়ে দ্রæত এ শঙ্কা কাটছে না।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খুব বেশি সিরিয়াস রোগী না হলে হাসপাতালগুলোতে রোগী ভর্তি করানোর প্রয়োজন নেই। তবে বাসায় থেকে চিকিৎসা সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে পরিবারে অন্য সদস্যদের মধ্যে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকে।
জানতে চাইলে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য অনুমতি মিলেছে। প্রাথমিক অবস্থায় ১০০ শয্যা দিয়ে শুরু করলেও পর্যায়ক্রমে তা আরো বাড়ানো যাবে।
তিনি বলনে, আমাদের হাতে আরও বেশ কিছু সুযোগ রয়েছে। সেগুলোর ব্যাপারে পর্যায়ক্রমে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। আরও কয়েকটি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা চালুর ব্যাপারে কথা চলছে। খবর বাংলানিউজের