চট্টগ্রামে নির্মিত হবে ‘মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ’

62

মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণে সরকার চট্টগ্রামে ‘মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ’ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। গতকাল শুক্রবার বিকেলে নগরের দামপাড়ায় এক স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা জানান মন্ত্রী। ১৯৭১ সালের তৎকালীন রাঙ্গুনিয়া ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের (চুয়েট) সামনে পাকিস্তানী বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে নিহত সাইফুদ্দীন খালেদ চৌধুরীসহ পাঁচ শহীদের স্মরণে এ স্মরণসভা আয়োজন করে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারবর্গ নামে একটি সংগঠন।
মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সারা দেশের প্রতি জেলায়, উপজেলায় ও ইউনিয়নে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ নির্মাণের। চট্টগ্রামে স্মৃতিসৌধ নেই।
চট্টগ্রামের মেয়রকে অনুরোধ করবো জায়গা দেওয়ার জন্য। স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হবে। চট্টগ্রামের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে। নতুন প্রজন্ম এ ইতিহাস ধরে রাখতে পারবে কি না। যদি চাই তবে আমাদের রাজনৈতিকভাবে সচেতন হতে হবে’।
জিয়াউর রহমান ও খন্দকার মোস্তাক চক্র আন্তর্জাতিক প্রভুদের ইঙ্গিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, ‘খুনী জিয়া ও খুনী মোস্তাক চক্র তাদের আন্তর্জাতিক প্রভুদের ইঙ্গিতে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে তারা ৩০ বছর রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে। দেশকে পেছনের দিকে নিয়ে গেছে। দেশকে মিনি পাকিস্তান বানানোর জন্য যা যা করণীয় তা-ই করেছে।
জিয়াউর রহমান বাংলাদেশকে পাকিস্তানি ভাবধারায় বাংলাস্তান করার ষড়যন্ত্র করেছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন সাবেক মন্ত্রী ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শাহাজান খান। তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করার পরে পাকিস্তানি ভাবধারায় আমাদের রণধ্বনি জয় বাংলাকে করে দিলেন বাংলাদেশ জিন্দাবাদ, বাঙালি জাতীয়তাবাদকে করে দিলেন বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ। চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে বসে ১৯৭৯ সালে পাকিস্তানি ভাবধারায় বাংলাস্তান করার ষড়যন্ত্র করেছিলেন। ড. ইউসুফ নামে একজন জিয়াউর রহমানকে বলেছিলেন- আমরা ইসলামী ভাবধারায় রাজনীতি করি তাহলে কেন আমরা ইসলামের রং নেই এমন পতাকা ব্যবহার করি? জিয়াউর রহমান বলেছিলেন- ধৈর্য ধরো, হবে, হবে। আগে হিন্দুর লেখা জাতীয় সংগীতটা পরিবর্তন করতে দাও। তিনি জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের ষড়যন্ত্র করেছেন, জাতীয় পতাকা পরিবর্তনের ষড়যন্ত্র করেছেন এমনকি বাংলাদেশের নাম পরিবর্তন করে পাকিস্তানি ভাবধারায় বাংলাস্তান করার ষড়যন্ত্র করেছিলেন’।
স্বাধীনতা বিরোধিরা বর্তমান সরকারের বিভিন্ন পদে ঘাপটি মেরে আছে বলেও অভিযোগ করেন শাহাজান খান। এ সময় ‘অপারেশন জ্যাকপট’ নামক চলচ্চিত্র নির্মাণের বিষয়ে স্বাধীনতা বিরোধিরা ষড়যন্ত্র করে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
মুক্তিযোদ্ধা পরিবারবর্গ সংগঠনের সভাপতি জসিম উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। প্রধান বক্তা ছিলেন মহিলা আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদিকা অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী।
আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সবচেয়ে বড় ভূমিকা ছিল বঙ্গবন্ধুর। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর লক্ষ্য ছিল দেশের অর্থনৈতিক মুক্তি। কিন্তু সেই পরাজিত শক্তি ১৯৭৫ সালের আগস্টে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে দেশকে পেছনে নিয়ে গেছে’। খবর বাংলানিউজের