সারাদেশে নতুন ভোটারের হালানাগাদকৃত খসড়া তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। চট্টগ্রামে এবার নতুন ভোটার হয়েছে দুই লক্ষ ৮৩ হাজার ৮৩৪ জন। যে কারণে আসন্ন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনেই প্রথমবার ভোট দেয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে ৮৫ হাজার ৮৪ জন ভোটারের। ২০০২ এর আগে যাদের জন্ম তাদের এবার ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আগামী ১ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। বর্তমানে চট্টগ্রামে বিদ্যমান ভোটার সংখ্যা ৫৬ লক্ষ ৩৮ হাজার ১১৪ জন।
চট্টগ্রাম জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান পূর্বদেশকে বলেন, ‘নগর ও গ্রামের ২১ থানায় নতুন ভোটার হয়েছেন দুই লক্ষ ৮৩ হাজার ৮৩৪ জন। এছাড়াও বাকি দুই বছরের তথ্য আগাম সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে। এদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নাম স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।’
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকার পাঁচলাইশে ১৭ হাজার ৭৫৪ জন, চান্দগাঁওয়ে ১১ হাজার ৪৭৬ জন, কোতোয়ালীতে ৯ হাজার ৯৬৭ জন, পাহাড়তলীতে ১১ হাজার ৯৫৩ জন, ডবলমুরিংয়ে ১৫ হাজার ৮৫৭ জন, বন্দরে ১৮ হাজার ৭৭ জন মিলে সর্বমোট ৮৫ হাজার ৮৪ জন নতুন ভোটার হয়েছেন। এছাড়াও স›দ্বীপে ১২ হাজার ৪৯৩ জন, ফটিকছড়িতে ১৯ হাজার ২১৬ জন, হাটহাজারীতে ১৭ হাজার ৫৯০ জন, রাউজানে ১৭ হাজার ৮৪৩ জন, রাঙ্গুনিয়ায় ১১ হাজার ৬৩ জন, বোয়ালখালীতে ১৩ হাজার ২৭০ জন, পটিয়ায় ১৭ হাজার ৮২৩ জন, সাতকানিয়ায় ১৬ হাজার ৬৭০ জন, বাঁশখালীতে ১৬ হাজার ২০৩ জন, চন্দনাইশে ছয় হাজার ৭০৬ জন, লোহাগাড়ায় সাত হাজার জন, মিরসরাইয়ে ১৮ হাজার ৩০৩ জন, সীতাকুÐে দশ হাজার ২৭৮ জন, কর্ণফুলীতে পাঁচ হাজার ৯৯১ জন, আনোয়ারায় আট হাজার ৩০১ জন নতুন ভোটার হয়েছেন।
ইসি সূত্র জানায়, এ খসড়া তালিকা ইউনিয়ন পরিষদ, থানা/উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট সব স্থানে প্রদর্শন করে রাখা হবে। এতে কোন ভুল থাকলে বা কেউ যুক্ত হতে চাইলে বা কোনো সংশোধন করার থাকলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আগামী ৫ ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত আবেদন করা যাবে। আবেদন নিষ্পত্তি করা হবে ১২ ফেব্রæয়ারি। এরপর নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া শেষে ১ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে।
এর আগে গত বছরের ২৩ এপ্রিল চট্টগ্রামে প্রথম ধাপে ছয় উপজেলায় ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু হয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন উপজেলা ও থানায় এ কার্যক্রম শুরু হয়ে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলে। হালনাগাদ কার্যক্রম সবমিলিয়ে নিবন্ধন হয়েছে তিন লক্ষ ৯৬ হাজার ৫৮৪ ভোট। এরমধ্যে পুরুষ দুই লক্ষ ৩১ হাজার ৩৯৯ ভোট ও মহিলা নিবন্ধন হয় এক লক্ষ ৬৫ হাজার ২৬২ জন। এছাড়াও ৫০ হাজার ৯৬ জন মৃত ভোটার কর্তন করা হয়।
এদিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর দেশে বর্তমানে মোট ভোটার ১০ কোটি ৯৬ লাখ ৬ হাজার ১৮৭। এর আগে, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় দেশে ভোটার ছিল ১০ কোটি ৪১ লাখ ৪২ হাজার ৩৮১। গতকাল সোমবার প্রকাশিত খসড়াভোটার তালিকা থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমান সোমবার বিকালে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে হালনাগাদকৃত খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করেন। এই তালিকা যাচাই-বাছাই শেষে আগামী ২ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
ভোটার তালিকা থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় নতুন ভোটার যুক্ত হয়েছে ৬৭ লাখ ৫৮ হাজার ৩৪১। অন্যদিকে, দ্বৈত ভোটার ও মৃত্যুজনিত কারণে বাদ পড়েছে ১৩ লাখ ৯২ হাজার ২৩৬ ভোটার।
এবার হালনাগাদে পুরুষের তুলনায় প্রায় ৪ লাখ মহিলা ভোটার কম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। নতুন ভোটারের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৩৫ লাখ, ৮২ হাজার ১৬৩, মহিলা ভোটার ৩১ লাখ ৭৫ হাজার ৮২৫ এবং হিজড়া ভোটার ৩৫৩। এবার প্রথমবারের মতো হিজড়া ভোটারের তথ্য সংগ্রহ ও প্রকাশ করা হয়েছে।
হালনাগাদের সময় ২ লাখ ৭ হাজার ৬৩৫ দ্বৈত ভোটার চিহ্নিত করে তা খসড়া তালিকা থেকে কর্তন করা হয়েছে।
