চট্টগ্রামে দ্বিতীয় ধাপে সংক্রমণ বাড়ার শঙ্কা

60

চট্টগ্রামে করোনা সংক্রমণের প্রথম ধাপে আপাতত আক্রান্তের হার কমতির দিকে হলেও দ্বিতীয় ধাপে সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কায় করছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অক্টোবর-নভেম্বরের দিকে শীত মৌসুমে করোনার প্রকোপ ফের বাড়তে পারে এমনটি ধারণা করা হচ্ছে। নমুনা পরীক্ষা কমে যাওয়ার পরেও চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৮ হাজার। মোট নমুনা অনুপাতে শনাক্তের হার প্রায় ১৮ শতাংশ। গত কয়েকদিন ধরে শনাক্তের হার ৭-৮ শতাংশে নেমে এসেছে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের বেশ কয়েকটি হাসপাতালে করোনা চিকিৎসা বন্ধ হওয়ায় সংক্রমণ বাড়ার খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, করোনা নিয়ে মানুষের ভীতি আগের মতো নেই। নমুনা পরীক্ষার আগ্রহ কমে যাওয়ার পরও আক্রান্তের হার কিন্তু কমেনি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলায় এই ভাইরাসের সংক্রামণ এখনো কমেনি। সাধারণ মানুষকে আরো সতর্ক হয়ে চলার কোন বিকল্প নেই। স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কারণে মানুষ নিজে ছাড়াও অন্যকে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে ফেলছেন তারা।
চট্টগ্রামের নমুনা পরীক্ষার বিশ্লেষণে দেখা যায়, নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৯৯ হাজার ৭১৮টি। যার মধ্যে পজেটিভ হয়েছেন ১৮ হাজার ৪৫৪ জন। শনাক্তের হার ১৮ শতাংশ। এই পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৮৬ জন। মোট সুস্থ হয়েছেন ১৪ হাজার ৮০৫ জন। এপ্রিল থেকে জুন এই তিন মাসের তুলনায় নমুনা পরীক্ষা কমে যায় জুলাই মাসে। অন্যদিকে আগস্টে নমুনা পরীক্ষা কম হয়েও আক্রান্তের হার বেশি ছিল যা সেপ্টেম্বর মাসে নমুনা অনুপাতে শনাক্তের হার কিছুটা কমতে থাকে।
করোনার চিকিৎসার সাথে জড়িত চিকিৎসকরা জানান, অতীতের মহামারিগুলোর সংক্রমণের ধরন অনুযায়ী প্রথম ধাপের ত্রূটিগুলোর ফাঁকে সংক্রমণ ঘটে দ্বিতীয় ধাপে। সংক্রমণের প্রথম ঢেউ থেকে দ্বিতীয় ঢেউ আরও প্রাণঘাতী হয়ে থাকে। করোনা সংক্রমণের শুরুতে মানুষের মধ্যে একটা ভয়ভীতি কাজ করতো। সে কারণে করোনা সংক্রমণ বেশি হলেও শৃঙ্খলার মধ্যে ছিলো। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে মানুষ এখন আগের অবস্থানে নেই। কমিউনিটি ট্রান্সমিশনের কারণেই করোনার সংক্রমণ এখন রোধ করা যাচ্ছে না। তাছাড়া এখন যারা সংক্রমণ হচ্ছেন কিংবা করোনার উপসর্গ আছে তারা নমুনা পরীক্ষার দিকে আর আগের মতো ঝুঁকছেন না।
সর্বশেষ তথ্যমতে, এসব করোনা সেন্টারগুলোতে রোগী ভর্তি আছে ১৪৩ জন। যাদের বেশিরভাগ ভর্তি আছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল ১০০ জন, জেনারেল হাসপাতালে ২৯ জন এবং বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে সন্দেহভাজন কোভিট রোগী ১২৫ জন ভর্তি আছে। অন্যদিকে বেশ কয়েকটি হাসপাতাল এবং আইসোলেশন সেন্টারে কোনো করোনা রোগী না থাকায় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আর্থিক সংকট ও রোগী কমে যাওয়ায় এসব বন্ধ করা হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। তবে সংক্রমণ বাড়লে সেগুলো পুনরায় চালুর কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, চট্টগ্রামে একমাস ধরে সংক্রমণের হার কিছুটা কমতির দিকে। ইতোমধ্যে দৈনিক শনাক্ত ১০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। করোনার ২য় ধাপের পরিস্থিতি নিয়ে আমরা যথেষ্ট সতর্ক অবস্থায় আছি। করোনা উপসর্গ থাকার পরেও মানুষ নমুনা পরীক্ষার দিকে আগ্রহী হচ্ছেন না। এতে করে পরীক্ষা না করার ফলে সে আসলেই আক্রান্তু কিনা সেটা সে নিজেও বুঝতে পারছেন না। অন্যদিকে তার সংস্পর্শে এসে অন্য মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন এমন ঘটনাও ঘটেছে। তবে সংক্রমণ বাড়ালে সে ব্যাপারে আমাদের করণীয় সম্পর্কে একটা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।