চট্টগ্রামে চালু হচ্ছে ফিলিপাইনের ভিসা সেন্টার

63

ভারতের পর এবার ফিলিপাইনের ভিসা সেন্টার চালু হচ্ছে চট্টগ্রামে। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে এ ভিসা সেন্টারের যাত্রা শুরু হচ্ছে। আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকার পাম ভিউ ভবনের দ্বিতীয় তলায় ভিসা সেন্টারটির কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এখান থেকে মাত্র দশদিনের মধ্যে মিলবে ফিলিপাইনের ভিসা।
গতকাল বুধবার দুপুরে নগরীর আগ্রাবাদে মেট্রোপলিটন চেম্বারের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এতথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকার ফিলিপিন্স দূতাবাসের ভিসা কর্মকর্তা বার্লিন তলোসা বলেন, প্রতি বছর দুই থেকে তিন হাজার মানুষ বাংলাদেশ থেকে ফিলিপিন্স যায়। এই সংখ্যা দিন দিন
আরও বাড়ছে। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক দৃঢ় হলে এ সংখ্যা আরো বেড়ে যাবে। চট্টগ্রাম থেকে অনেকে ভিসার জন্য আবেদন করেন। তাই আমরা এখানে ভিসা সেন্টার চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। খুব সহজে এখান থেকে ভিসা প্রসেস করা যাবে।
তিনি বলেন, ফিলিপাইন ও বাংলাদেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ অনেক মেধাবী, পরিশ্রমী ও সহনশীল। এখানকার ও ফিলিপাইনের আবহাওয়া প্রায় একই। ফিলিপাইনে যেতে ভিসা পেতে কোনোধরনের দুর্ভোগ পোহাতে হবে না, সহজেই পাওয়া যাবে।
আজ সন্ধ্যা ৭টায় নগরীর আগ্রাবাদ হোটেলে ভিসা সেন্টারটির উদ্বোধন করবেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূত ভিভেনসিও টি. বানদিল্লো।
সংবাদ সম্মেলনে ফিলিপাইনের অনারারি কনসাল এম এ আউয়াল বলেন, চট্টগ্রামবাসীর সুবিধার জন্য এই ভিসা সেন্টারটি চালু করা হচ্ছে। ভারত ছাড়া কোনো দেশ চট্টগ্রামে ভিসা প্রদান করে না। অন্য দেশের ভিসা পেতে হলে চট্টগ্রামের মানুষকে ঢাকায় গিয়ে মূল্যবান সময় ও অর্থ ব্যয় করতে হয়। বেশ কিছুদিন চেষ্টা করে চট্টগ্রাম থেকে ফিলিপাইনের ভিসা দেওয়ার প্রক্রিয়া চালুর ব্যাপারে সফল হয়েছি। আবেদনের পর ফিলিপাইনের ভিসা পেতে সময় লাগবে ১০ কার্যদিবস।
তিনি বলেন, আবেদনকারী তার আবেদন জমা দিয়ে নিজের পাসপোর্টটি নিয়ে যেতে পারবেন। পরে ভিসা প্রস্তুত হলে পাসপোর্ট নিয়ে এসে ভিসা নিতে পারবেন। জরুরি ভিত্তিতে ফিলিপাইন ভিসা প্রাপ্তির জন্য কনস্যুলেটের মাধ্যমে সেবা গ্রহণের সুযোগও পাওয়া যাবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ফিলিপিন্সের অনারারি কনসাল চট্টগ্রামের প্রধান নির্বাহী শেখ হাবিবুর রহমান এবং বাংলাদেশ ইপিজেড ইনভেস্টর এসোসিয়েশনের (বেপজিয়া) সাধারণ সম্পাদক আজিজুল বারী চৌধুরী জিন্নাহ।
ফিলিপিন্স বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দ্বীপপুঞ্জ। পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরের ৭৬৪১টি দ্বীপ নিয়ে দেশটি গঠিত। বাংলাদেশ ও ফিলিপাইনের মধ্যে অনেক দিক থেকে মিল রয়েছে। ফিলিপাইনের জনসংখ্যা প্রায় ১০১ মিলিয়ন, বাংলাদেশের জনসংখ্যা প্রায় ১০৬ মিলিয়ন। ফিলিপাইনের আয়তন বাংলাদেশের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। বাংলাদেশের আয়তন এক লক্ষ ৪৮ হাজার বর্গ কিলোমিটার আর ফিলিপাইনের প্রায় ৩ লাখ বর্গকিলোমিটার। উভয় দেশের মানুষ ধর্মীয়। ফিলিপাইনের মানুষ মৌলিকভাবে ক্যাথলিক তবে ৬ শতাংশ মুসলমান। বাংলাদেশের মত ফিলিপাইনে বৃষ্টি, বন্যা, সাইক্লোন, টাইফুন প্রভৃতি প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দেয়। তবে ফিলিপাইনে সক্রিয় আগ্নেয়গিরিও রয়েছে। ফিলিপাইন তথ্য ও প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ, বিশ্বমানের হাসপাতালের মতো আতিথেয়তা, শিল্প, তুষার সাদা বালিসহ সুন্দর দ্বীপপুঞ্জ রয়েছে।