চট্টগ্রামে আড়াই লাখ টন চাল উৎপাদনের টার্গেট

66

চলতি বোরো মৌসুমে আড়াই লাখ টনের অধিক চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে চট্টগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। মৌসুমে ৬৩ হাজার ৩২৪ হেক্টর জমি আবাদের আওতায় আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। বিগত বোরো মৌসুমের চেয়ে এবার আরও বেশিতে আবাদ করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন জেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা।
জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের ১৪ উপজেলা ও নগরীর পাঁচলাইশে ৬৩ হাজার ৩২৪ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তন্মধ্যে ৯ হাজার ৯৪২ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ও ৫৩ হাজার ৩৮২ হেক্টর জমিতে উফশি জাতের ধানের আবাদ করা হবে। এসব জমিতে ২ লাখ ৫৬ হাজার ৪৮২ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী জেলার বাঁশখালীতে সবচেয়ে বেশি ৯ হাজার ৪৫৪ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হবে।
জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে মিরসরাইয়ে ১শ হেক্টর হাইব্রিড ও ১৯শ হেক্টর জমিতে উফশিসহ ২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের টার্গেট নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সীতাকুন্ডে মাত্র ২০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হবে। স›দ্বীপে আমন মৌসুমে চাষাবাদ হলেও বোরো মৌসুমে কোনো আবাদ হয় না। তাছাড়া ফটিকছড়িতে ৭ হাজার ৮শ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হবে। তন্মধ্যে ১ হাজার হেক্টরে হাইব্রিড ও ৬ হাজার ৮শ হেক্টর জমিতে উফশি জাতের ধানের আবাদ করা হবে। একইভাবে হাটহাজারীতে ৪ হাজার ১শ হেক্টর, রাউজানে ৫ হাজার ৪শ হেক্টর, রাঙ্গুনিয়ায় ৫৮০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ও ৬ হাজার ৮২০ হেক্টর জমিতে উফশিসহ ৭ হাজার ৪শ হেক্টর এবং নগরীর পাঁচলাইশে ৬৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অন্যদিকে পটিয়ায় ৯৫০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড এবং ৪ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে উফশিসহ ৫ হাজার ৩শ হেক্টর, বোয়ালখালীতে ৫০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ও ১ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে উফশিসহ এক হাজার ৫শ হেক্টর, আনোয়ারায় ৯৫০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ও ৫ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে উফশিসহ ৬ হাজার ২শ হেক্টর, চন্দনাইশে ৭২২ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ও ২ হাজার ৭৭৮ হেক্টর জমিতে উফশিসহ ৩ হাজার ৫শ হেক্টর, সাতকানিয়ায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ও ৪ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে উফশিসহ ৬ হাজার ৫শ হেক্টর, লোহাগাড়ায় ৮৩৫ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ও ২ হাজার ৬৬৫ হেক্টর জমিতে উফশিসহ ৩ হাজার ৫শ হেক্টর এবং বাঁশখালীতে ২ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ও ৭ হাজার ৪ হেক্টর জমিতে উফশিসহ ৯ হাজার ৪৫৪ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর আগে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বোরো মৌসুমে ৫৯ হাজার ৮৭৫ হেক্টর জমিতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ৬২ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছিল।
গত আমন মৌসুমে ফলন ভাল হওয়ার পাশাপাশি কৃষকেরা ধানের ভাল দাম পাওয়াতে চলতি বোরো মৌসুমে আবাদের পাশাপাশি উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হবে বলে মনে করছেন মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মোহাম্মদ আমিনুল হক চৌধুরী পূর্বদেশকে বলেন, ‘উৎপাদন খরচ বেড়ে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে গত কয়েক বছর ধরে কৃষকরা ধান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছিলেন। কিন্তু বিগত বোরো মৌসুমের পাশাপাশি আমন মৌসুমেও কৃষকেরা ধানের ভাল দাম পেয়েছেন। আমন মৌসুমে সরকার ৩৬ টাকা কেজিতে চাল সংগ্রহ করার কারণে কৃষকেরা ধানের ভাল দাম পেয়েছিলেন। তাই বোরো মৌসুমে কৃষকেরা ধান আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। আগামীতে কৃষকদের এ উৎসাহ ধরে রাখা হবে।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে কৃষকেরা জৈব সার ব্যবহারের দিকে ঝুঁকছেন। তাছাড়া নন ইউরিয়া সারের দামও কম। এতে চাষাবাদের খরচও কমছে। ফলে লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছেন কৃষকরা।’