চট্টগ্রামে অধিকাংশ কেন্দ্রই ‘ঝুঁকিপূর্ণ’

89

চট্টগ্রামের ১৬ আসনের ১৮৯৯টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে অধিকাংশই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। সেনা ও বিজিবি স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। ইতোমধ্যে স্থাপন করা হচ্ছে বিজিবি ক্যাম্প।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের ১৬ আসনে মোট ভোটকেন্দ্র রয়েছে ১ হাজার ৮৯৯টি। পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ বা গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে।
জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই) আসনে ১০৪টি, চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে ১৩৫টি, চট্টগ্রাম-৩ (স›দ্বীপ আসনে) ৭৯টি, চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুÐ) আসনে ১০৮টি, চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে ১৪০টি, চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনে ৮৪টি, চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) আসনে ৯৬টি, চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী) আসনে ১৭০টি, চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী-বাকলিয়া) আসনে ১৪৪টি, চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং-পাহাড়তলী) আসনে ১১৭টি, চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আসনে ১৪৩টি, চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে ১১১টি, চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) আসনে ১০৬টি, চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ) আসনে ১০৪টি, চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে ১৪৭টি এবং চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে ১১০টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে।
সিএমপি সূত্র জানায়, নগরীর চট্টগ্রাম-৮ বোয়ালখালী-চান্দগাঁও, চট্টগ্রাম-৯ কোতোয়ালী-বাকলিয়া, চট্টগ্রাম-১০ পাহাড়তলী-ডবলমুরিং, চট্টগ্রাম-১১ বন্দর-পতেঙ্গা আসনে ৫৯৯টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। এসব কেন্দ্রের মধ্যে ৫৭৪টি কেন্দ্রকেই অধিক গুরুত্বপূর্ণ বা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে বাকলিয়া, হালিশহর, পাহাড়তলী এলাকার সব ক’টি কেন্দ্রকে অতিঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
সিএমপি কমিশনার মাহবুবুর রহমান পূর্বদেশকে বলেন, নানাভাবে বিশ্লেষণ করে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র চিহ্নিত করে তালিকা তৈরি করা হয়েছে। অতীত নির্বাচনে সংঘাত, পারিপার্শ্বিক অবস্থা, কেন্দ্রে প্রার্থীদের প্রভাব, স্থানীয়দের অবস্থান ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করে এসব কেন্দ্র চিহ্নিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, অতি গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা কেন্দ্রে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। প্রতিটি কেন্দ্রে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা থাকবে। র‌্যাব, বিজিবি, কোস্টগার্ড ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে টহল দেবেন। কাউকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে দেয়া হবে না। প্রতিটি কেন্দ্রে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।
এছাড়া জেলার ১২ আসনে এক হাজার ৩০০ ভোটকেন্দ্র রয়েছে। এরমধ্যে ৯১৩টি ভোটকেন্দ্র অধিক গুরুত্বপূর্ণ বা ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এরমধ্যে চট্টগ্রাম-৭ রাঙ্গুনিয়া, চট্টগ্রাম-১৬ বাঁশখালী, চট্টগ্রাম-১৫ সাতকানিয়া-লোহাগাড়া, চট্টগ্রাম-২ ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম-৪ সীতাকুন্ডু, চট্টগ্রাম-৩ সন্দ্বীপ, চট্টগ্রাম-১৩ আনোয়ারা-কর্ণফুলী, চট্টগ্রাম-১৪ চন্দনাইশ আসনের সবক’টি ভোটকেন্দ্র অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জেলা পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা পূর্বদেশকে বলেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী পুলিশ কার্যক্রম চালাচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত কেন্দ্রগুলোর উপর বিশেষ নজরদারি করা হবে। ভোটে নেয়া হবে কঠোর নিরাপত্তা। কেউ যাতে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে না পারে সেজন্য সকল ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে কঠোর অবস্থানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
নির্বাচন কমিশন, সিএমপি ও জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ভোটকেন্দ্রের পাহারায় মেট্রোপলিটন এলাকার সাধারণ কেন্দ্রে পুলিশ, আনসার ও গ্রাম পুলিশের মোট ১৬ জন সদস্য নিযুক্ত থাকবেন।
এরমধ্যে অস্ত্রসহ পুলিশ ৩ থেকে ৫ জন, অঙ্গীভূত আনসার ১১ জন ও গ্রাম পুলিশের একজন সদস্য নিযুক্ত থাকবেন। এসব এলাকার গুরুত্বপূর্ণ বা ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে মোট ১৭ জন ও অস্ত্রসহ ৪-৬ সদস্য নিযুক্ত থাকবেন। এরমধ্যে অস্ত্রসহ পুলিশ থাকবে ন্যূনতম চারজন।
মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে পুলিশ, আনসার, গ্রাম পুলিশের মোট ১৪ জন সদস্য নিযুক্ত থাকবেন। এরমধ্যে অস্ত্রসহ পুলিশ একজন, অঙ্গীভূত আনসার ১২ জন ও গ্রাম পুলিশের দু-একজন সদস্য নিযুক্ত থাকবেন। এসব এলাকার গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে মোট ১৫ জন ও অস্ত্রসহ তিন-চারজন সদস্য নিযুক্ত থাকবেন। এরমধ্যে অস্ত্রসহ পুলিশ সদস্য থাকবেন ন্যূনতম দুজন।
ভোটকেন্দ্রের বাইরে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবেন সেনা ও নৌবাহিনীর সদস্যরা। র‌্যাব, বিজিবি, কোস্টগার্ড ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে টহল দেবেন।