চট্টগ্রামের ১৩ হাজার কৃষককে সোয়া কোটি টাকা প্রণোদনা

71

চলতি বোরো মৌসুমে আবাদে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি চট্টগ্রাম। বোরোর এক ক্ষতি পোষানোর জন্য আগামি আউশ মৌসুমে চট্টগ্রামের ১৩ হাজার কৃষককে সোয়া কোটি টাকা প্রণোদনা দেওয়ার পদক্ষেপ নিয়েছে কৃষি বিভাগ।
চট্টগ্রাম কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে চট্টগ্রামের ১৪ উপজেলা ও মহানগরীর দুই উপজেলা মিলে ৬৩ হাজার ৩২৪ হেক্টর জমিতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত ছিল। কিন্তু এ মৌসুমে আবাদ হয়েছে ৬০ হাজার ৮৮৪ হেক্টর। এতে ১০ হাজার ৩৪২ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ও ৫০ হাজার ৫৪২ হেক্টর জমিতে উফসি জাতের আবাদ হয়েছে। আবাদকৃত জমিতে এবার দুই লাখ ৫৬ হাজার ৪৮২ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
কৃষি বিভাগ বলছে, পানি সেচের সমস্যার কারণে চলতি বোরো মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হয়নি। বিশেষ করে হালদা নদীতে বেড়ি বাঁধ নির্মাণ, কিছু উপজেলায় খাল খননের কাজ চলমান থাকা এবং কিছু এলাকায় খালের নাব্যতা কমে যাওয়ার কারণে সেঁচের সমস্যা তৈরি হয়। যে কারণে বোরো মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হয়নি। তাছাড়া বিগত বোরো মৌসুমে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে এবারে অনেক কৃষক চাষাবাদে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। এতে চট্টগ্রামের বেশ কয়েকটি উপজেলায় বোরো মৌসুমে কম আবাদ হয়েছে। তাই আগামি আউশ মৌসুমে চট্টগ্রামের ১৩ হাজার কৃষককে প্রণোদনার আওতায় আনা হয়েছে।
প্রণোদনার আওতায় আউশ বীজতলা তৈরিতে প্রাথমিকভাবে বীজ ও সার দেয়া হবে। প্রণোদনার আওতায় চট্টগ্রামের প্রান্তিক কৃষককে আর্থিক সহযোগিতাও দেওয়া হবে। যাতে করে আউশ মৌসুমে আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যায়।
চট্টগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক আমিনুল হক চৌধুরী পূর্বদেশকে বলেন, ‘চট্টগ্রামের যেসকল এলাকাতে ধানের আবাদ হয়, সেখানে বোরো মৌসুমে সঠিকভাবে সেচ সুবিধা না পাওয়ার কারণে অনেকে বীজতলা তৈরি করেও ধানের আবাদ করতে পারেনি। যে কারণে বোরো মৌসুমে আবাদে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হয়নি’। তিনি বলেন, ‘চলতি মৌসুমের ঘাটতি আগামি আউশ মৌসুমে পুষিয়ে আনার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে চট্টগ্রাম জেলার ১৩ হাজার কৃষককে ১৩ হাজার বিঘা জমির জন্য প্রণোদনা দেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে প্রায় ১ কোটি ১৬ লাখ টাকার বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়ে আমাদের মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে’।
এ কৃষি কর্মকর্তা বলেন, ‘বোরো মৌসুমের সেচের মাধ্যমে চাষাবাদ করার কারণে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যায়। যে কারণে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই বর্ষার বৃষ্টির পানিকে ব্যবহার করে আউশ মৌসুমে উৎপাদন বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে’। এ কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘রাঙ্গুনিয়া ও পটিয়াসহ চট্টগ্রামের প্রায় সব উপজেলায় একসময় আউশ ব্যাপকভাবে চাষ হতো। এখন আউশ আবাদ আশংকাজনকহারে কমে যাচ্ছে। তাই আউশ মৌসুমে আবাদ বাড়ানোর জন্য সরকার প্রণোদনা দেওয়ার পদক্ষেপ নিয়েছে’।