চট্টগ্রামের সব বিদ্যুৎ লাইন যাচ্ছে মাটির নিচে

112

চট্টগ্রাম ও সিলেটের সব বিদ্যুৎ লাইন মাটির নিচে নেওয়া হবে। এ জন্য ৩ হাজার ৪১১ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ব্যয়ে দুটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এ দুটিসহ একনেক সভায় ৭ হাজার ৭৪৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ব্যয়ে মোট ১৩টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থ (জিওবি) ৬ হাজার ৪১৫ কোটি টাকা, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ১৮৯ কোটি টাকা ও প্রকল্প ঋণ ১ হাজার ১৪০ কোটি টাকা।
গতকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এসব প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। ‘চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থার স¤প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ’ প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৩৫৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। ২০১৯ সালের জুলাই মাস থেকে ২০২২ সালের জুন মাসের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।
‘সিলেট বিভাগে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়ন’ প্রকল্পের মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৫৩ কোটি টাকা। চলতি সময় থেকে জুন ২০২১ মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
শহর দু’টিতে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে জঞ্জাল, মাকড়সার জালের মতো ছেঁয়ে আছে বিদ্যুতের লাইন। এতে নষ্ট হচ্ছে নগরের সৌন্দর্য। সেসব খুঁটিতে কাজ করতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটছে অহরহ। এবার সে জঞ্জাল থেকে মুক্ত করতে প্রকল্প দু’টির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। নগরে এলোপাতাড়ি থাকা বিদ্যুৎ লাইন চলে যাচ্ছে মাটির নিচে। ভূগর্ভস্থ লাইন নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করবে। পাশাপাশি, সিস্টেম লস কমিয়ে রাষ্ট্র ও জনগণের উপকার করবে। ঝড়-বৃষ্টিতেও বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যাহত হবে না বলে জানিয়েছে একনেক। খবর বাংলানিউজের
একনেক সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, সিলেট শহরের সব বিদ্যুৎ লাইন মাটির নিচে নিতে একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। একই ভাবে, চট্টগ্রাম শহরের জন্যেও একটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে একনেক। দুটি প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অভিন্ন।
প্রকল্পের আওতায় সিলেটে ১৫টি নতুন উপকেন্দ্র নির্মাণ, ৭টি উপকেন্দ্রের উন্নয়ন, ২ হাজার ৫৩৭ কিলোমিটার নতুন লাইন নির্মাণ ও ৩ হাজার ৪৭ কিলোমিটার পুরনো লাইন সংস্কার করা হবে। সিলেট জোনে শতভাগ নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতায়নের লক্ষ্যে বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে।
চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় নির্মিতব্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে অন্তর্ভুক্তসহ চট্টগ্রাম শহর ও তার আশপাশের এলাকার ক্রমবর্ধমান আবাসিক, শিল্প ও বাণিজ্যিক বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে সঞ্চালন ব্যবস্থার অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হবে।
একনেক সভায় বগুড়া (জাহাঙ্গীরাবাদ)-নাটোর জাতীয় মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ, মিরপুর-উথুলী-পাটুরিয়া জাতীয় মহাসড়ক প্রশস্তকরণসহ আমিনবাজার থেকে পাটুরিয়া ঘাট পর্যন্ত বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ডেডিকেটেড লেনসহ সার্ভিস লেন ও বাস-বে নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
লাকসাম (বিনয়ঘর)-বাইয়ারা বাজার-ওমরগঞ্জ-নাঙ্গলকোট জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ, মর্ডানাইজেশন অব সিটি স্ট্রিট লাইট অ্যাট ডিফরেন্ট এরিয়া আন্ডার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, বাংলাদেশ ডাক বিভাগের অধীনে জরাজীর্ণ ডাকঘরগুলোর সংস্কার ও পুনর্বাসন প্রকল্প, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর আধুনিকায়ন ও শক্তিশালীকরণ, বিএডিসির বিদ্যমান সার গুদামগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ, পুনর্বাসন ও নতুন গুদাম নির্মাণের মাধ্যমে সার ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম জোরদারকরণ, নদীর তীর সংরক্ষণের মাধ্যমে মেঘনা নদীর ভাঙ্গন থেকে ভোলা জেলার তজুমদ্দিন উপজেলা সদর সংরক্ষণ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক, কক্সবাজারের উন্নয়ন ও স¤প্রসারণ প্রকল্পও অনুমোদন দিয়েছে একনেক। পাশাপাশি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নয়টি ব্রিজ নির্মাণ প্রকল্পও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
‘এস্টাবলিশমেন্ট অব থ্রি হ্যান্ডলুম সার্ভিস সেন্টারস ইন ডিফরেন্ট লুম ইনটেনসিভ এরিয়া’ শীর্ষক প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি না করে মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে একনেক সভা।