চট্টগ্রামেও বাদ পড়ছেন আ. লীগে বিতর্কিতরা

136

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় দলের মধ্যে অনুপ্রবেশকারীদের তালিকা তৈরির পর বিতর্কিতদের বাদ দিতে কেন্দ্র থেকে চিঠি পাঠানো হচ্ছে। চট্টগ্রামের উত্তর, দক্ষিণ ও নগরে জেলা থেকে তৃণমূল পর্যন্ত এসব বিতর্কিতদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যেও শুরু হয়েছে আতঙ্ক। দলের প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় তারা এতদিন বহাল তবিয়তে থাকলেও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর দৃশ্যপট পাল্টে যায়। খবর বাংলানিউজের
সূত্র জানায়, সাতকানিয়া-লোহাগাড়া, বাঁশখালী, বোয়ালখালী, পটিয়া-কর্ণফুলী ও ফটিকছড়িতে জামায়াত-শিবির, বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের অনুপ্রবেশ ঘটেছে।
জানা যায়, বাঁশখালীতে বিএনপি-জামায়াতের দল পাল্টানো নেতাদের দাপটে অসহায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। ১৪টি উপজেলা ও একটি পৌরসভায় অনেক নেতাকর্মী দল পাল্টিয়ে এখন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত। এদের মধ্যে তিন নেতার দাপটে রীতিমত অসহায় তৃণমূল আওয়ামী লীগ। এই নেতারা অল্প সময়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতির নিয়ন্ত্রক বনে গেছেন।
এরা হলেন- উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি রশিদ আহমদ চৌধুরী। এক সময়ের বিএনপির এই দাপুটে নেতা এখন সরল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান। তিনি বিএনপির সহ-সভাপতি থাকাকালীন উপজেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন সৈয়দ শেখুল ইসলাম।
জানতে চাইলে শেখুল ইসলাম বলেন, ‘রশিদ আহমদ চৌধুরী এক সময় জাতীয়তাবাদী দলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আমরা একসঙ্গে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। গত ১০-১২ বছর ধরে আমি রাজনীতি থেকে দূরে আছি। তাই এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে চাচ্ছি না’।
খানখানাবাদ ইউনিয়নে নৌকা প্রতিকে জয়ী হয়েছেন বদরুদ্দিন চৌধুরী। তিনি এক সময় শিবিরের দাপুটে নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তার ফেসবুক আইডিতেও এর প্রমাণ মিলেছে। বাঁশের কেল্লার পোস্ট শেয়ার করে আলোচনায় এসেছিলেন। এখনও খানখানাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রক তিনিই।
পৌরসভার জমিদার পরিবারের সন্তান শেখ মুজতুবা আলী চৌধুরী মিশু বছর তিনেক আগেও ছিলেন পৌরসভা বিএনপির সহ-সভাপতি। এখন তিনি আওয়ামী লীগের দাপুটে নেতা। দল পাল্টিয়ে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে সংসদ সদস্যের পাশের চেয়ারেই বেশি দেখা যায় তাকে। আগামী পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে তিনি তৎপর বলে স্থানীয়রা দাবি করেছেন।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা জাহেদ আকবর জেবু বলেন, কাদের মোল্লার গায়েবানা জানাজা পড়ে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছিলেন বদরুদ্দিন চৌধুরী। আর আমার গত ৩০ বছরের রাজনীতির জীবনে মুজতুবা আলী মিশুকে আওয়ামী লীগ করতে দেখিনি। দলের ত্যাগী নেতা-কর্মীরা এখন কোণঠাসা।
বাঁশখালী পৌরসভা বিএনপি নেতা লায়ন নাছির উদ্দিন বলেন, মুজতুবা আলী চৌধুরী মিশু পৌরসভা বিএনপির সহ-সভাপতি ছিলেন, মিছিল-সমাবেশ করেছেন। তিনি এখন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হয়েছেন বলে জেনেছি।
একই অবস্থা বিরাজ করছে সাতকানিয়া-লোহাগাড়া, পটিয়া, ফটিকছড়ি ও বোয়ালখালীর রাজনীতির মাঠে। প্রভাবশালীদের প্রশ্রয়ে জামায়াত-বিএনপির অর্ধশতাধিক নেতা এখন নিয়ন্ত্রণ করছেন এসব এলাকার রাজনীতি। ফলে আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা-কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে কোণঠাসা হয়ে পড়েন। অবশেষে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ত্যাগী নেতারা উজ্জীবিত ও উৎফুল্ল হয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এসব এলাকার একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা জানান, নেত্রী সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছেন। খুব দ্রুতই শুদ্ধি অভিযান চালানো প্রয়োজন। হাইব্রিডদের দাপটে আমরা মুখ খুলতে পারছি না।