চকরিয়া-পেকুয়ায় সেনাবাহিনীর টহল এলাকায় স্বস্তি

96

নির্বাচনী সহিংসতা রোধ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সারাদেশের ন্যায় কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) সংসদীয় আসেনেও মাঠে কাজ করছে সেনাবাহিনী। গত সোমবার সেনাবাহিনী মাঠে নামার পর থেকেই এই আসনের ভোটারদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
সূত্র জানায়, আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) সংসদীয় আসনে নির্বাচনী প্রচারণার শুরু থেকেই দুই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রার্থীদের অফিস ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও প্রচারণার সময় হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার জন্য নির্বাচনী মাঠে থাকা দুই প্রধান প্রতিদ্ব›দ্বী দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পরস্পর পরস্পরকে দায়ী করেছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে নির্বাচনী প্রচারাভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর লোকজন চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলায় ৮ থেকে ১০ নির্বাচনী অফিস ও প্রচার গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। পাশাপাশি নির্বাচনী প্রচারণায়ও বাধার সৃষ্টি করছে বিএনপি।
অপরদিকে বিএনপি’র পক্ষ থেকেও দাবি করা হয়েছে, চকরিয়া-পেকুয়ায় ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন আহমদ স্ত্রী সাবেক সাংসদ এডভোকেট হাসিনা আহমেদ নির্বাচনী প্রচারণায় মাঠে নামলেই প্রতিনিয়ত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বাধার মুখে পড়ছেন। গণসংযোগ চালানোর সময়ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হামলার শিকার হচ্ছেন তারা। এছাড়া আওয়ামী লীগ নিজেরাই নিজেদের নির্বাচনী অফিসে আগুন ধরিয়ে দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের আসামি করে মামলা দিচ্ছে। গত দুই সপ্তাহে চকরিয়া ও পেকুয়া থানায় ১৩ টি মিথ্যা ও সাজানো মামলা দায়ের করে হাজার খানেক বিএনপি নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। জনবিচ্ছিন্ন আওয়ামী লীগ এসব হামলা-মামলা করে বিএনপি নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারদের নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রেখে ফাঁকা মাঠে গোল করার স্বপ্নে বিভোর হয়ে পড়েছে বলে দাবি করেছে বিএনপি নেতাকর্মীরা। নিরাপত্তাহীনতার কারণে নির্বাচনের আগ মুহুর্তেও গত এক সপ্তাহ ধরে প্রচারণায় নামতে পারছেন না বলে দাবি করেছেন বিএনপি প্রার্থী ও তাদের কর্মী সমর্থরা।
এদিকে নির্বাচনী প্রার্থীদের লোকজনের হামলার ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু সেনাবাহিনী মোতায়েনের একদিন পর গতকাল মঙ্গলবার এলাকার সাধারণ ভোটারদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। সাধারণ ভোটাররা জানান, সোমবার সকাল থেকে চকরিয়া-পেকুয়ার প্রধান সড়কসহ বিভিন্ন অলিগলিতে টহল দিতে শুরু করেছে সেনাবাহিনী। নির্বাচনী মাঠে সেনাবাহিনীর টহল জোরদার হওয়ায় চকরিয়া-পেকুয়া এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীরাও গা ঢাকা দিয়েছে।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রির্টানিং অফিসার নূরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান বলেন, এ উপজেলায় সহিংসতা রোধে গত ২০ ডিসেম্বর থেকে মাঠে রয়েছে ১৬০ সদস্যের বিজিবি দল। সোমবার থেকে সেনাবাহিনীর ১০০ সদস্য মাঠে নেমেছে। প্রয়োজনে এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। আজকালের মধ্যেই র‌্যাবের টহল টিমও মাঠে নামবে। সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই চকরিয়ায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আমরা আশা করছি। যেখানে ভোটাররা শান্তিপূর্ণভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।
পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রির্টানিং অফিসার মো. মাহবুবুউল করিম বলেন, সেনাবাহিনী, বিজিবি ও র‌্যাবের পাশাপাশি পুলিশের স্ট্রাইকিং ফোর্স ও মোবাইল টিম সহিংসতা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছে। সুতরাং কোন বাধা ছাড়াই সুষ্ঠু পরিবেশেই পেকুয়া উপজেলার ভোটাররা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।
উল্লেখ্য কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনে ভোট কেন্দ্র রয়েছে ১৩৯টি। এরমধ্যে চকরিয়া উপজেলায় ৯৯টি এবং পেকুয়া উপজেলায় ৪০টি। দুই উপজেলার সবকটি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ বলে দাবি করেছেন বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী এডভোকেট হাসিনা আহমেদ।