চকরিয়ায় স্কুলছাত্রী ও বিধবাকে ধর্ষণ

56

চকরিয়ায় এক স্কুলছাত্রী (১২) ধর্ষণের শিকার হয়েছে। সে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। এছাড়া তাকে বাঁচাতে গিয়ে এক বিধবা নারীও (৩৬) ধর্ষণের শিকার হন বলে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা গেছে, গত বুধবার (১৭ জুলাই) রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর হারবাং ইছাছড়ি হায়দারঘোনায় এ ঘটনা ঘটে। কিন্তু স্থানীয় চেয়ারম্যান বিচারের আশ্বাস দিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ায় তা এতদিন গোপন থাকে। ধর্ষণের খবর গতকাল শনিবার সকালে পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে তৎপর হয় পুলিশ। পরে পুলিশ ওই এলাকায় অভিযান চালায়।
এদিকে স্কুলছাত্রীকে গত বৃহস্পতিবার সকালে তার স্বজনরা চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠান। বর্তমানে স্কুলছাত্রীটি সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এদিকে স্কুলছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় স্থানীয় আজিজনগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও আইডিয়াল স্কুলের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। মানববন্ধনে শিক্ষক-শিক্ষিকাগণও অংশ নেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা ধর্ষকদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসি দাবি জানায়।
স্কুলছাত্রীর ভাই জানান, উত্তর হারবাং ইছাছড়ি হায়দারঘোনার পাশাপাশি দুইটি বাড়ির একটিতে বৃদ্ধ মা-বাবা ভাইবোনসহ আমরা থাকি।
অপর বাড়িতে বিধবা নারী (৩৬) তার সন্তান নিয়ে থাকেন। ১৭ জুলাই বিধবা নারীর সন্তান বেড়াতে যাওয়ায় তিনি একা হয়ে পড়েন। পরে রাতে আমার স্কুলপড়ুয়া ছোটবোনকে নিয়ে যান। ওই সময় বাড়িতে আমার বৃদ্ধ বাবা-মা ছাড়া আর কেউ ছিলেন না। রাত সাড়ে ১১টার দিকে স্থানীয় ছাবের আহমদের ছেলে মো. আসিফের নেতৃত্বে ৫-৬ জন স্থানীয় বখাটে আমাদের বাড়িতে ঢুকে আমার বোনকে খুঁজতে থাকে। এ সময় বখাটেরা আমার ছোট বোনের সন্ধান দেয়ার জন্য বৃদ্ধ বাবা-মাকে মারধর শুরু করে। তাদের চিৎকারে পার্শ্ববর্তী বাড়ির বাসিন্দা বিধবা নারীর ঘুম ভেঙে যায়। পরে তিনি দরজা খুলে আমাদের বাড়ির দিকে আসতে চাইলে তিনজন বখাটে ওই বাড়িতে ঢুকে আমার ছোট বোনকে একটি পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে তারা তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এ সময় ওই নারী তাদের বাধা দিলে তাকেও ধর্ষণ করে পালিয়ে যায় বখাটেরা।
স্কুলছাত্রীর ভাই আরও জানান, ঘটনার পরদিন সকালে বিচারের আশ্বাস দিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালায়। বিষয়টি শনিবার (২০ জুলাই) সকালে পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে পিছু হটে ইউপি চেয়ারম্যান।
তবে স্থানীয় হারবাং ইউপি চেয়ারম্যান তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগটি অস্বীকার করে বলেন, বখাটে কর্তৃক স্কুলছাত্রীসহ দুই নারী ধর্ষণের বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। হারবাংয়ে গণধর্ষণের বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশ শনিবার বিকাল থেকে অভিযান চালালেও বখাটে কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
চকরিয়া থানার ওসি (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম চৌধূরী বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বখাটেদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।