চকরিয়ায় বনের কাঠে তৈরি হচ্ছে ফিশিং বোট

43

চকরিয়ায় সংরক্ষিত বনাঞ্চলের চ্রোাই কাঠ দিয়ে অবৈধ ফিশিং বোট তৈরির হিড়িক পড়েছে। বনবিভাগের কোন ধরনের অনুমতি ছাড়াই কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী মাতামুহুরী নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন জায়গায় বীরদর্পে এসব অবৈধ ফিশিং বোট তৈরি করে চলেছেন। আর সংশ্লিষ্ট বনবিভাগের লোকজন এসব দেখেও রহস্যজনকভাবে নীরব দর্শকের ভূমিকায় রয়েছেন।
জানা যায়, প্রতিবছর শুস্ক মৌসুমে বনাঞ্চলের মাদারট্রি নিধন করে ফিশিং বোট তৈরির কাজ শুরু করেন কতিপয় প্রভাবশালী বোট ব্যবসায়ী। তারই ধারাবাহিকতায় এবছরও উপজেলার সাহারবিল, চকরিয়া পৌর এলাকার তরচঘাট ও বাটাখালী, পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নের বেতুয়া বাজার, কৈয়াবিল ইউনিয়নের ডিগকূল এবং বিএমচর ইউনিয়ন ও উপকূলীয় বদরখালী ইউনিয়নসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের মাতামুহুরী নদীর তীরবর্তী এলাকায় ফিশিং বোট তৈরির হিড়িক পড়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকার কিছু প্রভাবশালী অসাধু বোট ব্যবসায়ীরা রাতের আঁধারে সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে বড় বড় ও লম্বা সাইজের মাদারট্রি কেটে বিভিন্ন স’মিলে চিরাইয়ের পর দিন দুপুরে প্রকাশ্যে এসব বোট তৈরি করে চলেছেন। মুলতঃ এসব মাদারট্রি প্রভাবশালী বোট ব্যবসায়ীরা বনবিভাগের লোকজনকে ম্যানেজ করে কক্সবাজার উত্তর, চট্টগ্রাম দক্ষিণ ও লামা বনবিভাগের সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে সংগ্রহ করে ফিশিং বোট তৈরি করছেন বলে জানা গেছে।
অভিযোগ রয়েছে, বোট তৈরিতে জড়িত প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সাথে বনকর্মীদের একটি অলিখিত সমঝোতা রয়েছে। যার ফলে দীর্ঘদিন ধরে মাতামুহুরী নদীর তীরবর্তী একাধিক পয়েন্টে ফিশিং বোট তৈরির কাজ অব্যাহত থাকলেও তা বন্ধে কোন কার্যকরি পদক্ষেপ না নিয়ে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে চলেছেন বনবিভাগের লোকজন। যে কারণে সংরক্ষিত বনাঞ্চল এখন দিনদিন মাদারট্রি শূন্য হয়ে পড়েছে।
কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বলেন, চকরিয়া উপজেলার সাহারবিল এলাকার আমির হোসেন, বেলাল উদ্দিন ও আনোয়ার হোসেনসহ ৬ জন বোট ব্যবসায়ী তাদের পুরাতন বোট মেরামতের জন্য অনুমতি নিয়েছে। তবে মাতামুহুরী নদীর তীরবর্তী আর কোন পয়েন্টেই নতুন করে ফিশিং বোট তৈরির জন্য বনবিভাগের পক্ষ থেকে কোন বোট ব্যবসায়ীকে অনুমতি দেয়া হয়নি। সুতরাং এখন যেসব ফিশিং বোট তৈরি করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ অবৈধ। তদন্ত করে এসব অবৈধ ফিশিং বোট প্রস্তুতকারীদের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রেঞ্জ কর্মকর্তা আরও বলেন, চকরিয়া উপজেলার সাহারবিল পর্যন্ত আমার নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকা। এর বাইরের অন্যান্য ইউনিয়ন চকরিয়া সুন্দরবন রেঞ্জ দেখভাল করেন। সুতরাং সাহারবিল এলাকার বাইরে যদি কোথাও নতুন করে ফিশিং বোট তৈরি করেন সে ব্যাপারে ওই এলাকার কর্তব্যরত বনবিভাগের লোকজনই আইনগত ব্যবস্থা নিবেন।
তবে এ ব্যাপারে চকরিয়ার উপকূলীয় সুন্দববন রেঞ্জ কর্মকর্তা হাফিজুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্ঠা করেও তার ফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।