চকরিয়ায় পুলিশ-ডাকাত গোলাগুলি, গ্রেপ্তার ৩

31

কক্সবাজারের চকরিয়ায় সড়কে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে পুলিশ ও ডাকাতদলের সদস্যদের মধ্যে ঘণ্টাব্যাপী গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় চকরিয়া থানার ওসি ও দুই সাব-ইন্সপেক্টরসহ তিনজন আহত হন। পরে পুলিশ ধাওয়া করে ডাকাত দলের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৬টি বন্দুক, ১৭ রাউন্ড তাজা কার্তুজ, দুটি ছুরি ও নকল চুলের একটি মুখোশ উদ্ধার করে পুলিশ। গত বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চকরিয়া-লামা-আলীকদম সড়কের চকরিয়ার ফাঁশিয়াখালী রিংভং এলাকায় ঘটনা ঘটে।
আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী, উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আলমগীর ও এসআই সুকান্ত চৌধুরী। আহতরা সবাই চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
গ্রেপ্তারকৃত ডাকাত দলের সদস্যরা হলেন চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের গর্জনতলী এলাকার নুরুল হুদার ছেলে মো. গিয়াস উদ্দিন (২৮), ডুলাহাজারা ইউনিয়নের কাটাখালী এলাকার মৃত আনু মিয়ার ছেলে এনামুল (৩৫) ও মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ জাফুয়া এলাকার জালাল আহমদের ছেলে আবদুল হামিদ (৩০)। পুলিশ জানায় গ্রেপ্তারকৃত ডাকাত দলের সদস্যদের বিরুদ্ধে চকরিয়া, লামা ও মহেশখালী থানায় ৮টি মামলা রয়েছে।
অভিযানে অংশ নেয়া চকরিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আলমগীর ও এসআই সুকান্ত চৌধুরী বলেন, বুধবার দিবাগত রাত ১১ টার দিকে চকরিয়া-লামা-আলীকদম সড়কের ফাঁশিয়াখালী রিংভং এলাকায় অস্ত্রসহ একদল ডাকাত ডাকাতির প্রস্তুতি নেয়ার খবর পেয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে উপপরিদর্শক (এসআই) তানভীর আহমদ, এসআই আলমগীর, এসআই সুকান্ত চৌধুরী ও এসআই চম্পক বড়ুয়াসহ একদল পুলিশ রাত সোয়া ১১ টার দিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাত দলের সদস্যরা প্রথমে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়লে পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছুঁড়ে। এ সময় পুলিশ এবং ডাকাত দলের সদস্যদের মধ্যে ঘন্টাব্যাপি গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে ডাকাত দলের সদস্যরা পিঁছুহটে গভীর জঙ্গলে পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশ ধাওয়া দিয়ে ডাকাত দলের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। তবে অন্যরা পালিয়ে পায়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৬টি বন্দুক, ১৭ রাউন্ড তাজা কার্তুজ, দু’টি চাকু ও নকল চুলের একটি মুখোশ উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, গুলিবিনিময়কালে ডাকাত দলের সদস্যদের ছোঁড়া গুলিতে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী ডানপায়ে, এসআই আলমগীর ও এসআই সুকান্ত চৌধুরীর বাম পায়ে গুলিবিদ্ধ। তাঁরা সবাই চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, গ্রেপ্তারকৃত তিন ডাকাতের মধ্যে গিয়াস উদ্দিনের কাছ থেকে একটি দেশে তৈরি একনলা বন্দুক ও ৫ রাউন্ড তাজা কার্তুজ, এনামুল হকের কাছ থেকে একটি দেশে তৈরি বন্দুক (এলজি) ও ৬ রাউন্ড তাজা কার্তুজ, আবদুল হামিদের কাছ থেকে একটি দেশি একনলা বন্দুক ও ৬ রাউন্ড তাজা কার্তুজ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া পালিয়ে যাওয়া অন্য ডাকাত দলের ফেলে যাওয়া একটি প্লাস্টিকের বস্তার ভেতর থেকে তিনটি দেশে তৈরি বন্দুক (এলজি), দুইটি ছুরি ও একটি চুলের মুখোশ উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত তিনজনের বিরুদ্ধে ডাকাতির প্রস্ততি, অস্ত্র আইন ও পুলিশ এসল্টের অভিযোগে চকরিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আলমগীর বাদি হয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে থানায় পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করেছেন।